বিপ্লবী পুলিশ কর্মকর্তা ব্যারিস্টার জিল্লুর রহমান এমন একজন ব্যক্তি, যিনি বাংলাদেশের পুলিশ বাহিনীতে এক বিপ্লবী ভূমিকা পালন করেছেন এবং দেশের শাসকশক্তির বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন। তার ভূমিকা শুধুমাত্র পুলিশের চাকরি বা তার ব্যক্তিগত জীবনের সাথে সীমাবদ্ধ ছিল না; বরং বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও সামাজিক পরিস্থিতিতে তার সিদ্ধান্তগুলো বড় ধরনের প্রভাব ফেলেছিল।
ব্যারিস্টার জিল্লুর রহমান: পুলিশ বাহিনীতে বিপ্লবী ভূমিকা
ব্যারিস্টার জিল্লুর রহমান তার কর্মজীবনে একাধিক বার দেশের স্বৈরাচারী সরকারের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিলেন। যখন দেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলন ও রাজনৈতিক স্বাধীনতার জন্য সংগ্রাম তীব্র হয়েছিল, তিনি ছিলেন সেই সব পুলিশ কর্মকর্তাদের মধ্যে, যারা সরকারের অযৌক্তিক আদেশকে মেনে নিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিলেন এবং জনগণের পক্ষ থেকে দাঁড়িয়ে তাদের ন্যায়বিচারের জন্য লড়াই করেছেন।
সরকারের রোষানলে পড়া
তিনি একাধিকবার স্বৈরাচারী সরকারের রোষানলে পড়েছিলেন। তার বিপ্লবী ভূমিকা ও দেশের গণতন্ত্রের প্রতি আনুগত্যের কারণে তিনি দুই দফা চাকরি হারিয়েছিলেন—একবার সরকারী নির্বাহী আদেশে এবং একবার আদালতের নির্দেশে। তবে, তিনি কখনো তার আদর্শ থেকে বিচ্যুত হননি। চাকরি হারানোর পরও তিনি আদালতের মাধ্যমে চাকরি ফিরে পেয়েছিলেন এবং তার অবস্থান বজায় রেখেছিলেন। এসব ঘটনা বাংলাদেশের পুলিশ বাহিনীতে তার সাহসিকতা ও ন্যায়বিচারের প্রতি আনুগত্যকে প্রমাণ করেছে।
প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও দৃঢ় অবস্থান
জিল্লুর রহমানের কর্মজীবন শুধু চাকরি সম্পর্কিত সিদ্ধান্তের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল না; বরং তিনি দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করেছিলেন এবং তিনি সব সময় সরকারের অযাচিত চাপ ও আদেশের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে ছিলেন। তার এই ভূমিকা গণতান্ত্রিক আন্দোলনের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হয়ে থাকবে।
বাংলাদেশ পুলিশের ২০২৫ সালের পদক তালিকায় যাদের নাম স্থান পেয়েছে, তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য একজন নাম না থাকা হলো বিপ্লবী পুলিশ কর্মকর্তা ব্যারিস্টার জিল্লুর রহমান। পুলিশ বাহিনীর একজন অত্যন্ত প্রভাবশালী সদস্য হিসেবে, তিনি পুলিশের মধ্যে গুণগত পরিবর্তন এবং ন্যায়বিচারের পক্ষে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করেছেন। তবে, এবারের পদক তালিকায় তার নাম না থাকা নিয়ে গভীর বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে।
ব্যারিস্টার জিল্লুর রহমানের ভূমিকা:
বিপ্লবী পুলিশ কর্মকর্তা হিসেবে ব্যারিস্টার জিল্লুর রহমান পুলিশের ভিতরে অন্যায় আদেশ না মানার সাহসিকতা দেখিয়েছেন। তিনি পুলিশের চাকরি হারান দুই দফা, একবার আদালতের নির্দেশে এবং একবার সরকারের নির্বাহী আদেশে, তবে তিনি আবারো চাকরি ফিরে পান। এমনকি, রাজনৈতিক চাপের কারণে তিনি দেশ ছাড়তেও বাধ্য হন।
একদিকে, বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে তিনি বিভিন্ন ধরনের ফ্যাসিবাদী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছেন, অন্যদিকে তিনি পুলিশ বাহিনীতে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করতে এবং সাধারণ মানুষের সেবা নিশ্চিত করতে নিজেদের আত্মনিয়োগ করেছিলেন। তার এই বিপ্লবী ভূমিকা ও সততার জন্য তিনি বিশেষভাবে প্রশংসিত।
বিতর্কের মূল কারণ:
এবারের পুলিশ সপ্তাহে যাদের নাম পদক প্রাপ্তদের তালিকায় স্থান পেয়েছে, তাদের মধ্যে অনেকেই বিতর্কিত চরিত্রের। যারা রাজনীতির সঙ্গে একাত্ম হয়ে পুলিশের অবস্থানকে ব্যবহার করেছেন, তাদের নাম পদকপ্রাপ্তদের তালিকায় শামিল করা হয়েছে। অন্যদিকে, বিপ্লবী পুলিশ কর্মকর্তা ব্যারিস্টার জিল্লুর রহমান, যিনি সত্যিকারের দায়িত্বশীল ও ন্যায়পরায়ণ ছিলেন, তার নাম তালিকায় অন্তর্ভুক্ত না হওয়ায় বিস্ময় এবং ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে।
বিশ্বস্ত সূত্রের মতে, বিক্ষোভকারী পুলিশ কর্মকর্তাদের মধ্যে ব্যারিস্টার জিল্লুর রহমানের নাম একেবারেই উপেক্ষিত করা হয়েছে। তার দীর্ঘদিনের সেবা, ন্যায় প্রতিষ্ঠায় অবদান এবং সাধারণ মানুষের অধিকার রক্ষায় তার ভূমিকা তাকে এই পদক প্রাপ্তির যোগ্য হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে। কিন্তু, তার নাম বাদ পড়া ইঙ্গিত দেয় যে পদক বিতরণ প্রক্রিয়া কিছুটা রাজনৈতিক প্রভাব দ্বারা পরিচালিত হয়েছে, যেখানে গুণগত পরিবর্তন বা সততা বিবেচনা করা হয়নি।
এমনকি, ব্যারিস্টার জিল্লুর রহমান নিজেও এ বিষয়ে মন্তব্য করেছেন এবং তার কর্মের মূল্যায়নকে অন্যায় মনে করেছেন। তিনি বলেন, “আমার সবকিছুর জন্য আমি গর্বিত, কিন্তু আমি আমার জনগণের পাশে দাঁড়িয়ে কাজ করেছি, এবং আমি কখনোই কোন ধরনের রাজনৈতিক সুবিধা নেবো না।”
আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া:
এভাবে গুণগত পরিবর্তন এবং ন্যায়বিচারের প্রতি অঙ্গীকার শিথিল করা দেশের জন্য একটি নেতিবাচক বার্তা হতে পারে। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে, বিশেষ করে মানবাধিকার সংস্থা এবং প্রভাবশালী রাষ্ট্রগুলি এমন পদক বিতরণের সিদ্ধান্তে তাদের উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। এটি বাংলাদেশের পুলিশ বাহিনীর আস্থার ওপর প্রভাব ফেলতে পারে এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মধ্যে সমালোচনা সৃষ্টি করতে পারে।
এদিকে, একাধিক রাজনৈতিক নেতা এবং সমাজকর্মী এই পদক বিতরণ প্রক্রিয়ার পরিস্কারতা ও ন্যায়সঙ্গততার দাবি জানিয়েছেন, যাতে পুলিশ বাহিনীর প্রতিটি সদস্য তার সৎ কাজের জন্য সঠিক মূল্যায়ন পেতে পারেন।
চাকরি ফিরে আসা এবং দেশের প্রতি দায়বদ্ধতা
চাকরি হারানোর পরেও জিল্লুর রহমান কখনোই নিজের আদর্শ থেকে বিচ্যুত হননি। তিনি আবারও চাকরি ফিরে পাওয়ার পরও দেশের প্রতি তার দায়বদ্ধতা বজায় রেখেছিলেন এবং পুলিশের মধ্যে সঠিক নীতি ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করেছেন। তার এই দৃঢ় অবস্থান পুলিশের মধ্যে দেশপ্রেম, দায়িত্বশীলতা এবং বিচারবোধের নতুন উদাহরণ সৃষ্টি করেছে।
পদকের তালিকায় না থাকা: একটি অবহেলা
এতসব বিপ্লবী ভূমিকা সত্ত্বেও, তার নাম এবারের পুলিশ সপ্তাহে পদকপ্রাপ্তদের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি, যা সত্যিই একটি অবহেলার বিষয়। তার ন্যায়পরায়ণতা, সাহসিকতা এবং বাংলাদেশের জন্য তার অবদান কোনোভাবেই উপেক্ষা করা উচিত নয়। যখন বাংলাদেশের পুলিশ বাহিনীতে এমন সাহসী এবং নৈতিকভাবে দৃঢ় কর্মকর্তারা ছিলেন, তখন তাদের অবদান স্বীকৃত হওয়া উচিত ছিল।
অন্তর্ভুক্তি না হওয়া: একটি সংকেত
ব্যারিস্টার জিল্লুর রহমানের মতো বিপ্লবী পুলিশ কর্মকর্তার পদক তালিকায় না থাকা, পুলিশ বাহিনীর মধ্যে নৈতিকতা ও সাহসিকতার যে প্রেরণা থাকা উচিত, তা নিরসন করতে পারে। এটি পুলিশের সাংগঠনিক নৈতিকতাও প্রশ্নবিদ্ধ করে, এবং একই সাথে জনগণের মধ্যে পুলিশের ওপর আস্থা হ্রাস করতে পারে। যদি এমন গুণী ও সাহসী কর্মকর্তাদের অবদান সঠিকভাবে মূল্যায়ন না করা হয়, তবে এটি পুলিশের প্রতি সাধারণ মানুষের বিশ্বাসের ক্ষতিসাধন করবে।
গণতন্ত্র এবং পুলিশের মধ্যে সমন্বয়
ব্যারিস্টার জিল্লুর রহমানের মতো কর্মকর্তাদের অবদান, যাদের নীতি এবং আদর্শ সরকার ও দলের প্রভাব থেকে বিচ্যুত, তা বাংলাদেশের পুলিশের শৃঙ্খলা এবং জনগণের প্রতি দায়বদ্ধতার এক বড় উদাহরণ। তার অবদান এটাই দেখিয়েছে যে, পুলিশের কাজ কেবল আইন প্রয়োগ নয়, বরং দেশের জনগণের জন্য ন্যায্যতা এবং সঠিক বিচার প্রতিষ্ঠাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশের পুলিশ বাহিনীতে এমন গুণী কর্মকর্তাদের মূল্যায়ন ও পদক প্রদান খুবই জরুরি, কারণ তারা দেশের উন্নয়নে, রাজনৈতিক স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র রক্ষায় নিজেদের জীবন উৎসর্গ করেছেন।
বাংলাদেশ পুলিশের ইতিহাসে এমন অনেক নাম রয়েছে যাদের অবদান এবং ভূমিকা ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা উচিত, এবং ব্যারিস্টার জিল্লুর রহমান তাদের মধ্যে অন্যতম। তার অবদানকে সঠিকভাবে মূল্যায়ন করা এবং তার মতো সাহসী, ন্যায়নিষ্ঠ পুলিশ কর্মকর্তাদের পুরস্কৃত করা দেশের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সংকেত হবে, যে পুলিশ বাহিনী জনগণের সেবক হিসেবে নিঃস্বার্থভাবে কাজ করবে এবং কোনো ধরনের রাজনৈতিক চাপ বা বাহ্যিক প্রভাবের কাছে নত হবে না।