মধ্যপ্রাচ্যে চলমান উত্তেজনার মধ্যে নতুন মাত্রা যোগ করেছে ইরানের সামরিক বাহিনীর বিস্ময়কর দাবি। তেহরান জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি বিমান বাহিনীর ২৮টি আক্রমণকারী আকাশযান তারা ভূপাতিত করেছে। ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম ও সামরিক সূত্রগুলো বলছে, এসব আকাশযানের মধ্যে রয়েছে হার্মেস ড্রোন, এফ-১৬ ও এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান এবং ইলেকট্রনিক ওয়ারফেয়ার প্ল্যাটফর্ম। তাদের দাবি, কিছু ‘ম্যানড’ অর্থাৎ চালকবিশিষ্ট যুদ্ধবিমানও ধ্বংস করা হয়েছে। যদিও এ দাবির সত্যতা স্বাধীনভাবে যাচাই করা সম্ভব হয়নি।
এই ঘোষণা এসেছে এমন এক সময়ে, যখন ইরান ও ইসরায়েল সরাসরি সামরিক সংঘাতে লিপ্ত এবং যুক্তরাষ্ট্রের সরাসরি হস্তক্ষেপের আশঙ্কাও ক্রমেই বাড়ছে। ইরান বলছে, তারা ইসরায়েলের ইলেকট্রনিক হামলার সক্ষমতাও রুখে দিতে সক্ষম হয়েছে। ইসরায়েলের জন্য এটি একধরনের মনস্তাত্ত্বিক চাপও তৈরি করছে। ইরানের দাবি অনুযায়ী, বাভার-৩৭৩, খোরদাদ-১৫ এবং সাইয়েদ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার মাধ্যমে এই সাফল্য এসেছে।
এদিকে ইসরায়েল জানিয়েছে, তারা গত মঙ্গলবার ইরানে ৬০টির বেশি বিমান ব্যবহার করেছে হামলার জন্য। কিন্তু ইরানের এই প্রতিক্রিয়াকে তারা এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে মেনে নেয়নি। আন্তর্জাতিক মহল থেকেও এখন পর্যন্ত কোনো পক্ষ ইরানের দাবি সম্পর্কে নিশ্চিত কোনো মন্তব্য দেয়নি। তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, যদি ইরানের এই দাবি সত্য হয়, তাহলে তা ইসরায়েলের জন্য কৌশলগত একটি বড় ধাক্কা এবং মধ্যপ্রাচ্যের যুদ্ধ পরিস্থিতিকে আরো জটিল করে তুলবে।
বিশ্ব প্রতিরক্ষা বিশ্লেষকদের মতে, ২৮টি আকাশযান একযোগে ধ্বংস হওয়া অস্বাভাবিক, তবে পুরোপুরি অসম্ভবও নয়। ধারণা করা হচ্ছে, এর বেশিরভাগই হয়তো ড্রোন বা পুনঃতথ্য সংগ্রহকারী বিমান হতে পারে। তবে ইরান কিছু সফলতা পেয়েছে, তা অস্বীকার করার সুযোগ নেই। আর এটাই বিশ্বকে বার্তা দিচ্ছে—ইরান যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত এবং ইসরায়েলের আকাশপথ আর আগের মতো নিরাপদ নয়।
এই পরিস্থিতি ইসরায়েলকে নতুন সামরিক কৌশল গ্রহণে বাধ্য করতে পারে। একই সঙ্গে এটি যুক্তরাষ্ট্রের ওপর চাপ বাড়াবে—তারা কি ইসরায়েলের পাশে সরাসরি দাঁড়াবে, নাকি কূটনৈতিকভাবে সরে থাকবে, এখন সেটাই দেখার বিষয়।
সূত্র: মেহের নিউজ, ফার্স নিউজ, তেহরান টাইমস