বাংলাদেশে ভারতীয় সুতার আগমন থামাতে বড় পদক্ষেপ নিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। ১৫ এপ্রিল প্রকাশিত এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে জানানো হয়েছে, এখন থেকে আর স্থলবন্দর দিয়ে ভারতীয় সুতা আমদানি করা যাবে না।
বস্ত্রখাতে ব্যবহৃত কাঁচামাল হিসেবে সুতা দীর্ঘদিন ধরে ভারতের উত্তর ও দক্ষিণ অঞ্চল থেকে উৎপাদিত হয়ে কলকাতায় গুদামজাত করা হতো এবং সেখান থেকে তা প্রবেশ করত বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থলবন্দরে—যেমন ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা ও বুড়িমারী।
তবে তুলনামূলকভাবে কম দামে আসা এসব সুতা দেশীয় বাজারে আধিপত্য বিস্তার করে ফেলেছিল। দেশি সুতার চেয়ে অনেক কম দামে বিক্রি হওয়ায় স্থানীয় উৎপাদকরা প্রতিযোগিতায় টিকতে পারছিলেন না। এতে ক্ষতির মুখে পড়ছিল দেশের বস্ত্রশিল্প, যা দীর্ঘদিন ধরে দাবি করে আসছিল বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশন (বিটিএমএ)।
বিটিএমএর দাবি অনুযায়ী, ভারতীয় সুতা স্থলবন্দর দিয়ে প্রবেশ করায় দেশে উৎপাদিত সুতা, এমনকি চীন, তুরস্ক, উজবেকিস্তানের সুতাও বাজারে প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়ছিল।
এই প্রেক্ষাপটে গত ফেব্রুয়ারি থেকে ভারতীয় সুতা আমদানি বন্ধের দাবি জোরদার হয়। মার্চ মাসে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন এনবিআরকে চিঠি দিয়ে সুপারিশ করে, যতদিন পর্যন্ত স্থলবন্দরগুলো আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে সুতা কাউন্ট যাচাইয়ের সক্ষমতা অর্জন না করে, ততদিন সমুদ্রপথেই আমদানি সীমাবদ্ধ রাখা হোক।
ট্যারিফ কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী এনবিআর চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান সংশ্লিষ্ট প্রজ্ঞাপন সংশোধন করে নতুন আদেশ জারি করেন, যা সঙ্গে সঙ্গেই কার্যকর করা হয়।
তবে স্থলপথের বিকল্প হিসেবে সমুদ্রপথ কিংবা অন্যান্য বৈধ রুটে সুতা আমদানির অনুমতি বহাল থাকছে। ২০২৪ সালের ২৭ আগস্ট জারি করা আগের প্রজ্ঞাপন সংশোধনের মাধ্যমে এই নতুন নির্দেশনা কার্যকর হয়েছে।