Staff Correspondent:
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচির কারণে দেশের কাস্টম হাউজ ও শুল্ক স্টেশনগুলোতে গতকাল (শনিবার) থেকে সম্পূর্ণভাবে বন্ধ রয়েছে আমদানি-রফতানি কার্যক্রম। এতে স্থবির হয়ে পড়েছে চট্টগ্রাম বন্দর, বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে বৈদেশিক বাণিজ্য ও উৎপাদন খাত।
এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের ডাকা এ কর্মসূচিতে কাস্টমস, ভ্যাট ও কর বিভাগের সব দপ্তরের কাজ বন্ধ রয়েছে। আন্দোলনকারীদের দাবি, এনবিআরকে দুটি বিভাগে ভাগ করে দেওয়া এবং চেয়ারম্যান অপসারণের প্রতিবাদে এই কর্মসূচি। যদিও সরকারের পক্ষ থেকে আলোচনার আহ্বান জানানো হয়েছে, তবে আন্দোলনকারীরা তাদের দাবিতে অনড়।
চট্টগ্রাম বন্দর কার্যত অচল
চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে দেশের ৯০ শতাংশ আমদানি-রফতানি কার্যক্রম পরিচালিত হয়। কিন্তু কাস্টমস কার্যক্রম বন্ধ থাকায় পণ্য শুল্কায়ন ও ছাড়করণ বন্ধ রয়েছে। এতে ডিপোগুলোয় আটকে আছে রফতানি পণ্যের কনটেইনার, আবার আমদানি পণ্য খালাসও বন্ধ। প্রতিদিনের ছয় হাজার শুল্কায়নের জায়গায় গতকাল তা ছিল শূন্য।
বেসরকারি কনটেইনার ডিপো অ্যাসোসিয়েশনের তথ্যমতে, ১৯টি ডিপো থেকে প্রতিদিন গড়ে দুই হাজার একক কনটেইনার রফতানি হয়, যা গতকাল একেবারে বন্ধ ছিল।
ব্যবসায়ীদের ক্ষোভ
বিজিএমইএ সভাপতি মাহমুদ হাসান খান জানান, তৈরি পোশাক খাতেই প্রতিদিন ২ হাজার ৬০০ কোটি টাকার বাণিজ্য ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। কেডিএস গ্রুপের এমডি সেলিম রহমান বলেন, “এটা জেনোসাইড অব দ্য বিজনেস কমিউনিটি।” তিনি এ সংকট সমাধানে প্রধান উপদেষ্টার জরুরি হস্তক্ষেপ চান।
মেঘনা গ্রুপের চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল বলেন, “বন্দর থেকে পণ্য না পেলে উৎপাদন ছন্দপতনে পড়ে। বারবার আমদানি-রফতানিতে বিঘ্ন অর্থনীতির জন্য ভয়াবহ সংকেত।”
১ জুলাই আলোচনা, তবে শর্তে অনড় এনবিআর কর্মীরা
আগামী ১ জুলাই অর্থ উপদেষ্টার সঙ্গে আলোচনা নির্ধারিত রয়েছে। তবে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ বলছে, চেয়ারম্যান অপসারণ না হলে তারা আলোচনায় বসবে না। আজও (রবিবার) ‘মার্চ টু এনবিআর’ এবং শাটডাউন কর্মসূচি চলবে বলে জানান সংগঠনের সভাপতি হাছান মুহম্মদ তারেক রিকাবদার।
অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের আশঙ্কা
বন্দরের গেটে স্ক্যানিং ও অনুমোদন বন্ধ থাকায় কাভার্ড ভ্যানে আনা রফতানি পণ্য আটকে গেছে। কাঁচামাল, বিদ্যুৎ, ওষুধ, পোশাকসহ বিভিন্ন খাত হুমকির মুখে পড়েছে। এ অবস্থায় ব্যবসায়ী নেতারা দ্রুত সমাধান না হলে ‘অপ্রতিরোধ্য ক্ষতির মুখে’ পড়বে অর্থনীতি বলে সতর্ক করেছেন।