২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শুল্ক সমঝোতার অংশ হিসেবে আমদানি পণ্যে বড় ধরনের শুল্ক ছাড়ের ঘোষণা দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। ২ জুন সোমবার বিকেলে বাজেট উপস্থাপনকালে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ জানান, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চলমান বাণিজ্য আলোচনার ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ ১১০টি পণ্যের ওপর আমদানি শুল্ক সম্পূর্ণ প্রত্যাহার এবং ৬৫টি পণ্যের ওপর আমদানি শুল্ক কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। একই সঙ্গে ৯টি পণ্যে সম্পূরক শুল্ক পুরোপুরি তুলে নেওয়া হচ্ছে এবং ৪৪২টি পণ্যে সম্পূরক শুল্ক কমানো হবে।
অর্থ উপদেষ্টা বলেন, এসব পদক্ষেপের ফলে জনসাধারণের ওপর করের বোঝা কিছুটা কমবে এবং আমদানিকেন্দ্রিক নীতির কারণে যেসব রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়ছিল, তাদের জন্য পরিস্থিতি কিছুটা সহনীয় হবে। তিনি আরও ব্যাখ্যা করেন, রপ্তানিবিরোধী পক্ষপাত বলতে বোঝানো হচ্ছে এমন সব নীতি, যা আমদানিকে বেশি সুবিধা দিয়ে রপ্তানিকে নিরুৎসাহিত করে। এর ফলে দেশীয় উৎপাদকরা বিদেশে পণ্য রপ্তানির আগ্রহ হারান। শুল্ক কাঠামোয় এই ভারসাম্য আনার লক্ষ্যেই নেওয়া হয়েছে এই পরিবর্তন।
উল্লেখ্য, ২০২৫ সালের এপ্রিলে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বিশ্বের বিভিন্ন দেশের রপ্তানি পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপ করেন। এতে বাংলাদেশের কিছু পণ্যের ওপর শুল্ক হার বেড়ে ৩৭ শতাংশে পৌঁছায়। তবে শিগগিরই ট্রাম্প প্রশাসন পাল্টা শুল্ক ৯০ দিনের জন্য স্থগিত করে এবং সীমিতভাবে ১০ শতাংশ শুল্ক কার্যকর রাখে। এই সময়ের মধ্যেই শুরু হয় দ্বিপক্ষীয় সমঝোতার আলোচনা। বাংলাদেশের বাজেটে ঘোষিত শুল্ক ছাড় এই আলোচনারই একটি অগ্রগতি।
শুল্ক হ্রাস ছাড়াও বাজেটে ট্যারিফ ও ন্যূনতম মূল্য পদ্ধতির যৌক্তিকীকরণের কথাও তুলে ধরেন অর্থ উপদেষ্টা। তিনি বলেন, শুল্ক কাঠামো আরও স্বচ্ছ ও আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে সামঞ্জস্যপূর্ণ করতে বর্তমানে বলবৎ থাকা ট্যারিফ ও ন্যূনতম মূল্য পদ্ধতি পর্যায়ক্রমে বাতিল করা হবে। এজন্য ৮৪টি পণ্যের ন্যূনতম মূল্য বাতিল এবং ২৩টি পণ্যের ন্যূনতম মূল্য বাড়ানোর প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এর ফলে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উত্তরণের পর আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিযোগিতামূলক অবস্থান নিশ্চিত করতে পারবে বলে আশা করা হচ্ছে।