মনির হোসেন, বেনাপোল (যশোর):
বাংলাদেশ থেকে পাট ও পাটজাত পণ্য স্থলপথে আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে ভারতের বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয়। শুক্রবার (২৭ জুন) ভারতের বৈদেশিক বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক ও অতিরিক্ত সচিব অজয় ভাদু স্বাক্ষরিত এক চিঠির মাধ্যমে এ সিদ্ধান্ত জানানো হয়।
নতুন এ নির্দেশনায় বলা হয়, স্থলবন্দর দিয়ে পাট ও পাটজাত পণ্য ভারত আমদানি করতে পারবে না। তবে সমুদ্রপথে—বিশেষ করে নহাভা শেভা বন্দরের মাধ্যমে—এ ধরনের পণ্য আমদানি চালু থাকবে।
ব্যবসায়ীদের মধ্যে উদ্বেগ
ভারতের পেট্রাপোল ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরওয়ার্ডিং এজেন্ট স্টাফ ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক কার্তিক চক্রবর্তী বলেন, “একটির পর একটি পণ্যের আমদানি-রপ্তানি নিয়ে নতুন সিদ্ধান্ত ব্যবসায়ীদের মধ্যে চরম হতাশা তৈরি করছে। অনেক ছোট আমদানিকারক যারা স্থলপথে পণ্য আনতেন, তারা সমুদ্রপথে আমদানিতে নিরুৎসাহিত হবেন।”
বাংলাদেশের পক্ষ থেকেও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বেনাপোল সি অ্যান্ড এফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান। তিনি বলেন, “প্রতিদিন বিপুল পরিমাণ পাট ও পাটজাত পণ্য বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভারতে রপ্তানি হয়। হঠাৎ এ নিষেধাজ্ঞা জারির ফলে অসংখ্য ব্যবসায়ী ও শ্রমিক বেকার হয়ে পড়বেন।”
পণ্যের জোগান কমছে
নতুন এই নিষেধাজ্ঞার প্রভাবে বেনাপোল-পেট্রাপোল স্থলবন্দরে পণ্যের জোগান কমে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন বন্দর সংশ্লিষ্টরা। এতে রাজস্ব ঘাটতি, বাণিজ্য চক্রে ভাটা এবং কর্মসংস্থানে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
প্রেক্ষাপট
বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান রপ্তানি পণ্য পাট ও এর তৈরি সামগ্রী। ভারত দীর্ঘদিন ধরে এ পণ্য আমদানি করে আসছে। তবে সাম্প্রতিক সময়ে ভারত একাধিকবার এ খাতে নানা বিধিনিষেধ আরোপ করেছে, যা দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যে অস্থিরতা সৃষ্টি করছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, দ্রুত কূটনৈতিক পর্যায়ে আলোচনার মাধ্যমে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে উদ্যোগ না নেওয়া হলে, বাংলাদেশের পাটখাত বড় ধরনের বিপদের মুখে পড়তে পারে।