আহসান হাবীব রানা, ইবি প্রতিনিধি:
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) আল কুরআন অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সাজিদ আব্দুল্লাহর রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনায় ফের উত্তাল হয়ে উঠেছে ক্যাম্পাস। ময়নাতদন্তের প্রাথমিক প্রতিবেদন প্রকাশের পর, এটি ‘হত্যাকাণ্ড’ বলে অভিহিত করে হত্যার ঘটনায় প্রশাসনের প্রহসনের প্রতিবাদে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন ও প্রশাসন ভবনের সামনে অবস্থানের ডাক দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
সোমবার (২১ জুলাই) বিকেলে ময়নাতদন্তের প্রাথমিক প্রতিবেদন প্রকাশের পর, এটি ‘হত্যাকাণ্ড’ বলে দাবি করে আন্দোলন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা।
বিকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেয় শিক্ষার্থীরা। এসময় তারা ‘আমার ভাই কবরে, খুনি কেন বাহিরে’, ‘ক্যাম্পাসে লাশ পড়ে, প্রশাসন কী করে’সহ বিভিন্ন প্রতিবাদী স্লোগান দিতে থাকে।
প্রায় দুই ঘণ্টা মূল ফটক অবরোধ করে রাখলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো প্রতিনিধি উপস্থিত না হওয়ায়, ১০ মিনিটের আল্টিমেটাম দেয় শিক্ষার্থীরা। সময়সীমা পেরিয়ে গেলেও প্রশাসন সাড়া না দিলে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ ঘোষণা করে তারা।
পরে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহীনুজ্জামান, ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ওবায়দুল ইসলাম, ইবি থানার ওসি মেহেদী হাসান, মেডিকেল অফিসার ডা. সাহেদ হাসান এবং সহকারী প্রক্টর ড. ফকরুল ইসলাম।
তবে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে উপস্থিত না হওয়ায় তারা শিক্ষার্থীদের ক্ষোভের মুখে পড়েন। বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা তাদের বিরুদ্ধে ‘ভুয়া ভুয়া’ স্লোগান দেন।
পরে সন্ধ্যা ৭টায় শিক্ষার্থীরা ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দিয়ে ৭ দফা দাবি উত্থাপন করেন। দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে, সাজিদ হত্যার দ্রুত ও দৃষ্টান্তমূলক বিচার নিশ্চিত করতে ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে বিচার সম্পন্ন করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে বাদী হয়ে মামলা করতে হবে এবং নিহতের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। মামলার তদন্তের দায়িত্ব পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) দিতে হবে। বিচার বিভাগীয় তদন্তের মাধ্যমে অধিকতর অনুসন্ধান পরিচালনা করতে হবে।
ক্যাম্পাসে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করতে হবে। নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থতার দায় প্রশাসনকে স্পষ্টভাবে স্বীকার করে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে। ভিসেরা রিপোর্ট দ্রুততম সময়ের মধ্যে প্রকাশের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে।
শিক্ষার্থীরা হুঁশিয়ারি দিয়ে জানান, দাবি বাস্তবায়ন না হলে বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হবে।