মো:মনির উজ্জামান ,ভান্ডারিয়া, প্রতিনিধি:
পিরোজপুর জেলার ভাণ্ডারিয়া উপজেলার ধাওয়া ইউনিয়নে ঘটেছে এক বিরল ও আবেগঘন ঘটনা। প্রায় ৪০ বছর আগে পারিবারিক সমস্যার কারণে বাড়ি ছেড়ে যাওয়া মোস্তাফিজ নামের এক ব্যক্তি ঢাকায় গিয়ে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। চাকরি নেওয়ার পর তিনি বিয়ে করে স্ত্রীসহ কামরাঙ্গীরচরে বসবাস শুরু করেন এবং ২০১৮ সালে স্ত্রী-সন্তানদের কাছেই মৃত্যুবরণ করেন।
বাবার মৃত্যুর পর, মোস্তাফিজের ছেলে মাসুদ (২৫) তার পুরনো কাগজপত্র ও একটি ১৯৯০ সালের পাসপোর্ট দেখে গ্রামের ঠিকানা খুঁজে বের করার চেষ্টা চালিয়ে যান। অনেক খোঁজাখুঁজির পর ২০২৫ সালে ভাণ্ডারিয়ার গৌরিপুর গ্রামের বাসিন্দা ইব্রাহিম খলিলের সঙ্গে তার যোগাযোগ হয়। ইব্রাহিম তাকে পরিচয় করিয়ে দেন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার বাস্তবায়ন ও প্রশিক্ষণ সংস্থা হিট ফাউন্ডেশন ভাণ্ডারিয়া শাখার সভাপতি এবং মানব সেবা ব্লাড ফাউন্ডেশনের পরিচালক মুহাম্মদ মেহেদী হাসানের সঙ্গে।
তিনজন একত্র হয়ে অনুসন্ধান শুরু করেন। ১৫ জুলাই, মঙ্গলবার সকালে মাসুদ ঢাকার খালাতো ভাইকে নিয়ে বরিশাল হয়ে ভাণ্ডারিয়ায় আসেন। এরপর মেহেদী হাসান, রিফাত ও ব্লাড ফাউন্ডেশনের স্বেচ্ছাসেবকদের সহায়তায় ধাওয়া ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে তথ্য সংগ্রহ শুরু হয়।
স্থানীয়দের সহায়তায় তারা হাজী বাড়িতে পৌঁছে মোস্তাফিজের বড় ভাইয়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। ভাইয়ের ছবি ও পারিবারিক তথ্য মিলিয়ে নিশ্চিত হওয়ার পর, ৪০ বছর পরে নিখোঁজ ভাইয়ের মৃত্যুর খবর শুনে বড় ভাই এবং মাসুদ কান্নায় ভেঙে পড়েন।
পরিবারের এই পুনর্মিলনে এলাকায় আবেগঘন পরিবেশ সৃষ্টি হয়। মোস্তাফিজের আরেক ভাই মতিউর রহমান, যিনি খুলনায় থাকেন, তাকেও খবর দেওয়া হলে তিনি ছুটি নিয়ে গ্রামে ফেরার সিদ্ধান্ত নেন।
মাসুদ তার পারিবারিক শিকড় ফিরে পেয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে মেহেদী হাসান ও সংশ্লিষ্টদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান। বর্তমানে তিনি বড় চাচার বাড়িতেই অবস্থান করছেন।
হিট ফাউন্ডেশনের সহ-সভাপতি আল রিফাত জানান, এটি আমাদের জন্য অত্যন্ত গর্বের বিষয়। একজন সন্তানের তার পরিবারের কাছে ফিরে যাওয়া নিশ্চিত করতে পেরে আমরা আনন্দিত। ভবিষ্যতেও তার অধিকার রক্ষায় আমরা পাশে থাকব।