Ripon Marma Rangamati:
রাঙ্গামাটি কাপ্তাইয়ে গত বছর ৩৪ জন ম্যালেরিয়া শনাক্ত হলেও এবছরে তিনগুণ ম্যালেরিয়া প্রকোপ দেখা দিয়েছে। এছাড়াও সাধারণ জ্বর, কাশি, বুক-পেট ব্যাথা শ্বাস কষ্টসহ নানান রোগে আক্রান্ত হচ্ছে অনেকে। উপজেলা ৫টি ইউনিয়ন হলেও ম্যালেরিয়া শনাক্ত হয়েছে তিনটি ইউনিয়নে কাপ্তাই, চিৎমরম ও চন্দ্রঘোনা।কাপ্তাইয়ে দুর্গম এলাকায় ভাঙ্গামুড়া, বড়পাড়া,শুভধন কার্বারী পাড়া, মেমবার পাড়া,বেচারান কার্বারী পাড়া ও চিৎমরম আড়াছড়ি পাড়া ও চন্দ্রঘোনা এলাকায় বর্ষা মৌসুম শুরু থেকে ঘরে ঘরে দুই একজন করে জ্বরসহ ম্যালেরিয়া আক্রান্তে হয়েছে । দুর্গম এলাকা হওয়ায় অসুস্থ্য হলে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে না গিয়ে স্থানীয় বাজার থেকে ঔষধ কিনে খাচ্ছেন অনেকে।স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স’র সূত্রে জানা যায়, দুর্গম গ্রামগুলো চলতি বর্ষা মৌসুমে ম্যালেরিয়া প্রকোপ দেখা দিয়েছে। তার সাথে ডায়রিয়াও হচ্ছে। গ্রামে গ্রামে ৮ থেকে ১০ জন করে ম্যালেরিয়া ও জ্বরের আক্রান্ত হয়েছে।
গত বছরে তুলনায় এবারে তিনগুণ ম্যালেরিয়া রোগী সনাক্ত হয়।
সোমবার(১৪ জুলাই) দুপুরে সরেজমিনে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স গিয়ে স্বাস্থ্য সেবিকা সাথে কথা হলে আসমা খাতুন
তিনি জানান ,গত ১৫ দিনে শিশুসহ ১৭ জন কাপ্তাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভর্তি হয়েছে।এর মধ্যে সুস্থ হয়ে আজ সবাই বাড়িতে চলে গিয়েছে। আক্রান্তদের মধ্যে প্রায় শিশু ও কিশোর রয়েছে। এর আগেও অনেক রোগী ছিল।
এদিকে, কাপ্তাই ব্র্যাক স্বাস্থ্য কর্মসূচির তথ্য থেকে জানা যায়, ব্র্যাক বিনামূল্যে মশারি বিতরণ করে থাকে প্রতি তিন বছর পর পর। উপজেলা ২০২৫ সালে ৬ মাস পনের দিনে প্রায় আনুমানিক ৪ হাজারের কিছু বেশি মশারি বিতরণ করা হয়। তবে গত বছর ২০২৪ সালে মশারি বিতরণ করা হয়নি
এর আগে, রাঙ্গামাটি জেলার ২০২৩ সালে পাঁচ লাখ ৭৪ হাজারের কিছু বেশি মশারি বিতরণ করা হয়েছিল।
হরিণছড়া কিছু স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, রাতে ঘুমানোর সময় মশারি টাঙিয়ে রাখলেও দিনে জুমের মাঠে কাজ করার সময় মশা কামড়ায়। তখনই মূলত ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হন তারা।
কাপ্তাই ব্লাড ব্যাংক প্রতিষ্ঠাতা বীর কুমার তঞ্চঙ্গ্যা বলেন, কাপ্তাই দুর্গম হরিণছড়া থেকে অসচ্ছল পরিবারে একজন
ম্যালেরিয়া রোগীকে কাপ্তাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেস হাসপাতাল ভর্তি করিয়েছি। পরে কাপ্তাই ব্লাড ব্যাংক উদ্যোগে সবার সহযোগীতা ডোনেশন সংগ্রহ করে রোগী চিকিৎসায় সহায়তা করেছি। তিনি আজ সুস্থ হয়ে বাড়ি চলে গিয়েছে।
স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা.রুইহ্লা অং মারমা বলেন, বর্ষা মৌসুম শুর হলেই ম্যালেরিয়ায় রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পায়, তবে ম্যালেরিয়ায় পরিস্থিতির নিয়ন্ত্রণে আনার যথা সম্ভব চেষ্টার কোন ক্রুটি হবে না। তবে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও জনগণ যথাযথ তথ্য দিয়ে সহযোগিতা আহ্বান জানান। তিনি আরও বলেন,পাহাড়ে এ সময় অর্থাৎ বর্ষা মৌসুমে মশা উপদ্রব বেশি দেখা দেয়। ঘরের আঙ্গিনায় পানি জমা থাকে, ময়লা অবর্জনা জমা থাকলে মশা উপদ্রব বেশি দেখা দেয়। সব সময় মশারী ব্যবহার করার পরামর্শ দেন। জুলাইয়ে শেষের দিকে আরও বৃষ্টিপাত হলে তখন ম্যালেরিয়া রোগী আরও বাড়তে পারে।