Kapasia (Gazipur) Representative: S. M. Masud
চাঁদাবাজির প্রতিবাদ করায় গাজীপুরের কাপাসিয়ায় নির্মমভাবে খুন হন প্রবাসী জাহিদুল ইসলাম।
এ ঘটনায় জড়িতদের অবিলম্বে গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন করেছে এলাকাবাসী। শনিবার (১২ জুলাই) বিকাল ৫টায় উপজেলার কাপাসিয়া-হাতিরদিয়া সড়কের গাবতলা এলাকায় এ মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়।
মানববন্ধনে দুই শতাধিক নারী-পুরুষ অংশ নেন। ‘খুনিদের ফাঁসি চাই’, ‘চাঁদাবাজদের বিচার চাই’—এমন স্লোগানে মুখরিত হয় পুরো এলাকা।
নিহতের স্ত্রী শিপা আক্তার কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, “সন্ত্রাসীরা প্রতিবেশীদের কাছ থেকে চাঁদা চাইছিল। আমার স্বামী প্রতিবাদ করেছিল বলেই তাকে হত্যা করা হয়েছে। আমি এই হত্যার বিচার চাই। যেন আর কোনো নারী এভাবে তার স্বামীকে না হারায়।” স্থানীয় বাসিন্দা হামিদা বেগম বলেন, “আমার বাড়িতে নতুন ঘর নির্মাণের সময় এলাকার নুরুল হুদার ছেলে মঈনুল চাঁদা দাবি করলে আমি জাহিদুলকে জানাই। সে বাধা দেয়। এরপর মঈনুল ও তার লোকজন তাকে কুপিয়ে হত্যা করে।”নিহতের শ্বশুর, ব্রজের কান্দি গ্রামের আলাউদ্দিন বলেন, “জাহিদুল আট বছর আগে আমার মেয়েকে বিয়ে করে। তাদের একটি কন্যাসন্তান আছে। সে সৌদি আরবে কাজ করত, পরিবার ও সন্তানের টানে বছর খানেক আগে দেশে ফিরে আসে। আমার জানামতে সে ভালো মানুষ ছিল। তার এভাবে মৃত্যু কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।”নিহতের ভাই অ্যাডভোকেট আলমগীর হোসেন জানান, “প্রতিবেশী দুই ভাগনি বাড়ির ছাদ ঢালাইয়ের কাজ করছিল। ওই সময় স্থানীয় সন্ত্রাসীরা চাঁদা দাবি করলে আমার ভাই প্রতিবাদ করে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে সন্ত্রাসীরা তাকে হত্যা করে।”নিহতের প্রতিবেশী কামাল হোসেন (৪০) ও চাচাতো ভাই আইন উদ্দিন (৫০) বলেন, “জাহিদুল ছিল একজন সজ্জন মানুষ। এলাকায় সবার সঙ্গে ভালো সম্পর্ক ছিল। তার ছোট মেয়েটা প্রতিদিন বাবার কবরের পাশে বসে কাঁদে। তার বাবার খুনিদের বিচার সে নিজেও চায়। আমরা এই হত্যার বিচার চাই।”উল্লেখ্য, গত ৪ জুলাই শুক্রবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে কাপাসিয়া উপজেলার সনমানিয়া ইউনিয়নের আড়াল মধ্যপাড়া গ্রামে এ হত্যাকাণ্ড ঘটে। নিহত জাহিদুল ইসলাম (২৮) সনমানিয়া বরকান্দা গ্রামের মৃত হারিস উদ্দিনের ছেলে। তাঁর মা রোকেয়া বেগম স্থানীয় ৭, ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ঘটনার রাতে বাড়ির পাশে মুদি দোকানে বসা অবস্থায় ১০–১২ জন দুর্বৃত্ত তাকে ডেকে নিয়ে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে মাথা ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে প্রথমে কাপাসিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও সেখান থেকে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।এলাকাবাসী অবিলম্বে খুনিদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।