মাহফুজুল হক পিয়াস, ইবি:
রাজধানীর মিটফোর্ড হাসপাতাল সংলগ্ন এলাকায় মো: সোহাগ নামের এক ব্যবসায়ীকে যুবদল নেতা কর্তৃক নৃশংস হত্যার প্রতিবাদে ও জড়িতদের শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সংক্ষিপ্ত প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) শাখার নেতাকর্মীরা।
শুক্রবার (১১ জুলাই) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের জিয়া মোড় থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি শুরু হয়। এসময় এটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ডায়না চত্বরে গিয়ে অবস্থান নেয়। সেখানে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন ইবির সমন্বয়ক এস এম সুইটের নেতৃত্বে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এসময় উপস্থিত ছিলেন ইবির সহ-সমন্বয়ক ইয়াশিরুল কবীর সৌরভ, তানভীর মাহমুদ মন্ডল, গোলাম রব্বানী, মুবাশশির আমিনসহ দুই শতাধিক শিক্ষার্থী।
বিক্ষোভে শিক্ষার্থীরা আবু সাইদ মুগ্ধ, শেষ হয়নি যুদ্ধ; চাঁদাবাজদের ঠিকানা, বাংলাদেশে হবে না; সন্ত্রাসীদের কালো হাত, ভেঙে দাও গুড়িয়ে দাও; দোষরদের ঠিকানা, এই বাংলায় হবে না; আমার ভাই কবরে, খুনি কেনো বাহিরে; বিএনপি-যুবদল, তুই খুনি, তুই খুনিসহ বিভিন্ন ধরনের শ্লোগান দেয়।
ডায়না চত্বরের সংক্ষিপ্ত সমাবেশে সহ-সমন্বয়ক ইয়াশিরুল কবির সৌরভ বলেন, “আমরা বারবার তাদের মুখে শুনি যে, নির্বাচন না দিলে নাকি দেশের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ঠিক হবে না। কিন্তু আমরা দেখছি নির্বাচনের আগেই ওই সংগঠনটি সর্বোচ্চ খুনের রাজনীতি করতেছে। আমরা দেখেছি গত ১৭ টি বছর একটি সরকার স্বৈরাচারী শাসন কীভাবে কায়েম করেছিল। আমরা আজকে দেখতে পেরেছি যে কিভাবে একটা ব্যবসায়ী ভাইকে চাঁদার জন্য নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। ছাত্রসমাজ আর কোনো সন্ত্রাসীদের মেনে নেবে না।”
এসময় শিক্ষার্থীদের আরেকটা অংশ শাখা ছাত্রশিবিরের কিছু নেতা-কর্মীদের নেতৃত্বে সেই সমাবেশ ত্যাগ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে অবস্থান নিয়ে বিভিন্ন শ্লোগান ও সংক্ষিপ্ত প্রতিবাদ সমাবেশ করে।
সেখানে শিক্ষার্থীরা বলেন, আমরা ব্যক্তির দায় কোনো দলকে দিতে চাই না। কিন্তু সেই দল যদি নতুন করে ফ্যাসিবাদ কায়েম করার চেষ্টা করে, ছাত্র জনতা আর বসে থাকবে না। অন্যায়কে আমরা মেনে নিতে শিখি নি। অন্যায়কারীরা আমাদের কাছে কোনোদিন প্রশ্রয় পাবে না। সে যে দল-আদর্শের লোকই হোক না কেন, যেখানেই অন্যায় সেখানেই প্রতিবাদ হবে। এই অপরাধীদের শুধু গ্রেফতার করে নামকাওয়াস্তে শাস্তি চাই না। এর প্রকাশ্য শাস্তি চাই। আমরা এমন শাস্তি চাই যে, দ্বিতীয়বার এমন হত্যাকাণ্ডের কথা ভাবলেও যেন অপরাধীর অন্তরাত্মা কেঁপে ওঠে।
উল্লেখ্য, গত বুধবার রাজধানীর মিটফোর্ড হাসপাতাল এলাকায় চাঁদা না দেয়ায় মো: সোহাগ (৪৩) নামে এক ভাঙারি ব্যবসায়ীকে পিটিয়ে ও পাথর দিয়ে থেতলে হত্যা করেন যুবদল নেতা মঈন ও তার সহযোগীরা। সেদিনই পুলিশ যুবদল নেতা মঈনসহ দু’জনকে আটক করে। এদিকে মঈনসহ দু’জনকে যুবদল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে বলে জানা গেছে।