নিউইয়র্ক, ১০ জুলাই ২০২৫ — নিউইয়র্ক সিটির সম্ভাব্য মেয়র জোহরান মামদানিকে ‘কমিউনিস্ট’ বলে আখ্যা দিয়ে হোয়াইট হাউসের ক্ষমতা ব্যবহার করে শহরের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার হুমকি দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। মন্ত্রিসভার বৈঠকে নিউইয়র্ক পোস্টকে দেওয়া এক বক্তব্যে তিনি এই মন্তব্য করেন।
ট্রাম্প বলেন, “নিউইয়র্ক চালাতে যদি একজন কমিউনিস্ট নির্বাচিত হয়, তাহলে এই শহর আর আগের মতো থাকবে না। তবে আমাদের কাছে ফেডারেল পর্যায়ে অনেক ক্ষমতা রয়েছে। প্রয়োজনে আমরা নিজেরাই শহর পরিচালনা করব।”
তিনি আরও বলেন, “আমি নিউইয়র্ককে ভালোবাসি এবং আবার গড়ে তুলতে চাই। হয়তো সেটা ওয়াশিংটন থেকেই করতে হবে।”
কোন আইনের ভিত্তিতে?
ট্রাম্প সরাসরি উল্লেখ না করলেও, তিনি ইঙ্গিত দিয়েছেন যে নিউইয়র্কে “নৈরাজ্য বা শৃঙ্খলার অভাব” দেখা দিলে হোয়াইট হাউস হস্তক্ষেপ করতে পারে। ২০২০ সালেও তিনি আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অজুহাতে নিউইয়র্ক সিটির কেন্দ্রীয় বাজেট বন্ধের হুমকি দিয়েছিলেন। এবার তিনি আরও এক ধাপ এগিয়ে শহরের শাসনব্যবস্থা সরাসরি গ্রহণের কথা বলেছেন।
জোহরানকে নিয়ে ট্রাম্পের মন্তব্য
ডেমোক্র্যাটিক প্রার্থী জোহরান মামদানিকে “বিপর্যয়” বলে অভিহিত করে ট্রাম্প বলেন, “তিনি ডেমোক্রেটদের প্রার্থী হওয়ায় এটা স্পষ্ট যে দলটি এখন কতটা বাম ঘরানায় চলে গেছে।”
তিনি আরও দাবি করেন, জোহরান নাকি গ্রিসটিডস সুপারমার্কেটের মালিক জন ক্যাটসিমাটিডিসের দোকানগুলো দখল করতে চান। ট্রাম্প বলেন, “তিনি (ক্যাটসিমাটিডিস) আমাকে ফোন করেছিলেন। তিনি ভীত, জোহরান তার ব্যবসা দখল নিতে পারে।”
ডিসির নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার সম্ভাবনার কথাও বললেন ট্রাম্প
ট্রাম্প শুধু নিউইয়র্ক নয়, রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসি নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, “আমরা ডিসিও চালাতে পারি। ডিসির মেয়র মুরিয়েল বাউজারের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক ভালো। তবে আমরা খতিয়ে দেখছি, সেখানে নিয়ন্ত্রণ নেওয়া সম্ভব কি না।”
জোহরানের প্রার্থীতা ও সমর্থন
নিজেকে ‘গণতান্ত্রিক সমাজতন্ত্রী’ হিসেবে পরিচয়দানকারী জোহরান মামদানি গত ২৪ জুন ডেমোক্র্যাটদের প্রাথমিক বাছাইয়ে সাবেক গভর্নর অ্যান্ড্রু ক্যুমোকে হারিয়ে মনোনয়ন পান। সর্বশেষ জরিপ অনুযায়ী, ৪ নভেম্বরের সাধারণ নির্বাচনে তিনি এগিয়ে আছেন, যেখানে ভোটারদের সমর্থন হার:
- জোহরান মামদানি: ৩৫%
- অ্যান্ড্রু ক্যুমো: ২৯%
- কার্টিস স্লিওয়া: ১৬%
- এরিক অ্যাডামস: ১৪%
কারা আছেন দৌড়ে
বর্তমান মেয়র এরিক অ্যাডামস এবার স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়ছেন। তাঁর বিরুদ্ধে আগের একটি দুর্নীতির মামলা ছিল, যেটি ট্রাম্প প্রশাসন এসে বাতিল করে দেয়। ট্রাম্প যদিও অ্যাডামস সম্পর্কে ইতিবাচক মন্তব্য করেছেন, তবে এখন পর্যন্ত কোনো প্রার্থীকে তিনি প্রকাশ্যে সমর্থন করেননি।
ভিপি ভ্যান্সের বিশ্লেষণ
মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স বলেন, “জোহরানের উত্থান দেখায়, আমেরিকান ভোটারের মানসিকতায় বড় পরিবর্তন এসেছে। তিনি উচ্চ আয় ও উচ্চশিক্ষিত তরুণ ভোটারদের মাঝে জনপ্রিয় হলেও, শ্রমজীবী ও কৃষ্ণাঙ্গদের মধ্যে তার গ্রহণযোগ্যতা তুলনামূলক কম।”