Staff Correspondent:
সরকারি চাকরিতে বিদ্যমান কোটাব্যবস্থা সংস্কারের দাবিতে ৯ জুলাই (মঙ্গলবার) সারাদেশে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জন করে ‘গণসংযোগ’ কর্মসূচি পালন করেছেন শিক্ষার্থীরা। আন্দোলনের নেতৃত্ব দিচ্ছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।
এদিন বিকেল সাড়ে ৬টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে সংবাদ সম্মেলন করে আগামীকাল (১০ জুলাই) ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচি ঘোষণা করেন সংগঠনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম। তিনি জানান, বুধবার সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সড়ক ও রেলপথ অবরোধ করে ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচি পালিত হবে। কেন্দ্রীয় কর্মসূচির স্থান নির্ধারণ করা হয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও শাহবাগ এলাকা।
সংবাদ সম্মেলনে নাহিদ ইসলাম বলেন, “আমরা কোটার সম্পূর্ণ বিলুপ্তি চাই না। অনগ্রসর শ্রেণির জন্য ৫-১০ শতাংশ বরাদ্দ রেখে বাকিগুলো বাতিল করতে হবে। সরকার নিরুত্তর থাকায় আমরা বাধ্য হয়েই এই কর্মসূচি দিয়েছি।”
২০১৮ সালের কোটা বাতিল সংক্রান্ত সরকারি পরিপত্র পুনর্বহালের দাবিতে শিক্ষার্থীরা চলতি বছরের ১ জুলাই থেকে আন্দোলন শুরু করেন। ৭ জুলাই থেকে ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচির মাধ্যমে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন সড়ক অবরোধ করেন তারা।
৯ জুলাইয়ের কর্মসূচিতে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে শিক্ষার্থীরা বিভিন্নভাবে অংশ নেন।
- জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করে আধা ঘণ্টা বিক্ষোভ করেন।
- রাজশাহী কলেজের শিক্ষার্থীরা কলেজ গেটের সামনে অবস্থান কর্মসূচি ও সড়ক অবরোধ করেন।
- চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সকালে শহীদ মিনারে সমাবেশ এবং দুপুরে আবাসিক হলে গণসংযোগ ও বিকেলে ষোলশহর রেলস্টেশনে রেল অবরোধ করেন।
- বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল শেষে বরিশাল-কুয়াকাটা মহাসড়ক অবরোধ করেন।
- বুয়েটের শিক্ষার্থীরা শহীদ মিনারে মানববন্ধন করেন।
- রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা প্যারিস রোডে অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নেন।
- হবিগঞ্জে সাধারণ শিক্ষার্থীরা শহরের প্রাণকেন্দ্রে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেন।
এদিকে, একইদিনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থী কোটা পুনর্বহাল সংক্রান্ত হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগে আবেদন করেন। তবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, আপিলকারীরা এই আন্দোলনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নন।
এদিন কোটা আন্দোলন প্রসঙ্গে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, “কোটা ইস্যু এখন আদালতের বিষয়, রাজপথে আন্দোলন করে সমাধান হবে না।”
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের দলের নেতাকর্মীদের শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের বিষয়ে সতর্ক থাকার নির্দেশ দেন।