কুমিল্লার মুরাদনগরে এক নারীকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করে ভিডিও ধারণ ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী শাহ পরানকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) রাতে কুমিল্লার বুড়িচং থানার কাবিলা বাজার এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করা হয়।
র্যাব-১১ জানায়, পারিবারিক বিরোধ ও ব্যক্তিগত শত্রুতার জেরে এই ঘৃণ্য ঘটনার জন্ম দেয় শাহ পরান। শুক্রবার (৪ জুলাই) রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র্যাব-১১ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এইচ এম সাজ্জাদ হোসেন।
তিনি বলেন, ভুক্তভোগী নারী ১৫ দিন আগে স্বামীর বাড়ি থেকে বাবার বাড়ি বেড়াতে আসেন। ওই গ্রামের ফজর আলী ও তার ছোট ভাই শাহ পরান দীর্ঘদিন ধরে তাকে উত্যক্ত করছিলেন। দুই মাস আগে ভাই-ভাইয়ের মধ্যে বিরোধের জেরে গ্রাম্য সালিশে বড় ভাই ফজর আলী ছোট ভাই শাহ পরানকে জনসমক্ষে চড়-থাপ্পড় মারেন। এরপর থেকেই শাহ পরান প্রতিশোধের সুযোগ খুঁজছিলেন।
ঘটনার দিন (২৬ জুন) রাতে ফজর আলী সুদের টাকা আদায়ের অজুহাতে ভুক্তভোগীর ঘরে প্রবেশ করেন। পরে পূর্বপরিকল্পিতভাবে শাহ পরান, আবুল কালাম, অনিক, আরিফ, সুমন, রমজানসহ আরও ৮–১০ জন দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে ওই নারীকে নির্যাতন করে এবং ভিডিও ধারণ করে তা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়।
র্যাব জানায়, ঘটনার পর আসামিরা আত্মগোপনে চলে যায়। তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তা ও গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শাহ পরানকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে শাহ পরান ঘটনার পরিকল্পনার কথা স্বীকার করেছেন।
র্যাব-১১ অধিনায়ক আরও জানান, এই ঘটনায় শাহ পরান ইমোর মাধ্যমে অন্যদের ‘মব’ গঠনের নির্দেশ দেন, যা তাদের কাছে সংরক্ষিত আছে। তবে শাহ পরানের কোনো রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়নি। তিনি পেশায় একজন সিএনজি চালক।
এই বর্বর ঘটনায় জড়িত সকল অপরাধীর বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছে র্যাব।