Staff Correspondent
বাংলাদেশের সর্বদক্ষিণে অবস্থিত কক্সবাজার জেলা এবার জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চরম রাজনৈতিক উত্তেজনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। ঐতিহাসিকভাবে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত চারটি আসনের এই জেলায় এবার দুই দলই আলাদাভাবে প্রার্থী দিচ্ছে। ফলে স্থানীয় রাজনীতিতে তৈরি হয়েছে নতুন সমীকরণ।
চারটি আসনেই এবার বিএনপির একক আধিপত্য ধরে রাখার চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে দলটি। কারণ, সাংগঠনিকভাবে জামায়াতে ইসলামী এখনো শক্তিশালী, এবং তারা ভোটের মাঠে নিজেদের শক্ত অবস্থান তুলে ধরতে মরিয়া। অন্যদিকে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), এবি পার্টি বা নেজামে ইসলাম পার্টির মতো রাজনৈতিক দলগুলোর উল্লেখযোগ্য কার্যক্রম দেখা যাচ্ছে না।
বড় প্রতিদ্বন্দ্বিতা কক্সবাজার-১ আসনে
চকরিয়া ও পেকুয়া নিয়ে গঠিত কক্সবাজার-১ আসনটি এবার সবচেয়ে আলোচিত। বিএনপি থেকে প্রার্থী হচ্ছেন জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ও দলটির মুখপাত্র সালাহউদ্দিন আহমেদ। তিনি এর আগেও এই আসনে একাধিকবার নির্বাচিত হয়েছেন এবং স্থানীয়দের কাছে একজন ‘অপরাজেয়’ নেতা হিসেবে পরিচিত। রাজনৈতিক মামলাজনিত কারণে তিনি নিজে প্রার্থী হতে না পারলেও আগে তার স্ত্রী হাসিনা আহমেদ এখানে নির্বাচন করে বিজয়ী হয়েছেন।
এদিকে জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে এই আসনে আবদুল্লাহ আল ফারুক নামে একজন প্রার্থী মাঠে রয়েছেন, যিনি দলটির কক্সবাজার শহর শাখার আমির। প্রতিদিনই বিভিন্ন এলাকায় সাংগঠনিক সভা, কর্মসূচি ও গণসংযোগ চালাচ্ছেন তিনি। জামায়াত মনে করছে, ৫ আগস্টের পর থেকে জনগণের মধ্যে তাদের প্রতি আস্থা বেড়েছে।
আবদুল্লাহ আল ফারুক বলেন,
“মানুষ এখন আর আগের মতো নয়। তারা বিকল্প চায়। আমাদের ওপর যে আস্থা সৃষ্টি হয়েছে, তাতে আমরা আশাবাদী।”
বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন,
“আমার এলাকার মানুষ আমার ওপর আস্থা রাখে। আমি প্রতিদিন যেতে না পারলেও তারা জানে, আমি তাদের পাশে আছি। আমার দায়িত্ব এখন আরও বড়—আমাকে সারা দেশের বিষয় ভাবতে হয়।”
ভোটারদের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ
চকরিয়া-পেকুয়া ছাড়াও জেলার বাকি তিনটি আসনেও বিএনপি-জামায়াতের প্রার্থীদের মধ্যে কৌশলগত লড়াই চলছে। যদিও প্রার্থী তালিকা এখনো চূড়ান্ত হয়নি, তবে ১০ থেকে ১৫ জনের সম্ভাব্য নাম সামনে এসেছে।
স্থানীয় রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, বিএনপি-জামায়াত জোট না করায় ভোট বিভক্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকলেও, চূড়ান্ত ফল নির্ভর করবে মাঠ পর্যায়ে কারা কতটা সংগঠিতভাবে ভোটারদের কাছে পৌঁছাতে পারে তার ওপর।