গণতান্ত্রিক ছাত্রজোটের মিথ্যা সংবাদ বিজ্ঞপ্তির নিন্দা জানিয়েছে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন।১ জুলাই, ২০২৫ সংবাদমাধ্যমে প্রেরিত বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে মিথ্যাচার করেছে গণতান্ত্রিক ছাত্রজোটভুক্ত কতিপয় সংগঠন। গত ২৭-২৮ জুন অনুষ্ঠিত ঢাকা-চট্টগ্রাম রোডমার্চের সমাপনী সমাবেশে হট্টগোলের চেষ্টা করে গণতান্ত্রিক ছাত্রজোটভুক্ত কয়েকটি সংগঠন। শান্তিপূর্ণভাবে সমাবেশ শেষ করতে তাদের আহ্বান জানানো হলে তারা হঠাৎই উত্তেজিত হয়ে মঞ্চের পাশে অবস্থান উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী ও বাংলাদেশ যুব ইউনিয়নের নেতাকর্মীদের দিকে তেড়ে যান। ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছাত্র ইউনিয়নের নেতাকর্মী উভয়পক্ষকে শান্ত করার চেষ্টা করলে গণতান্ত্রিক ছাত্রজোটভুক্ত বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর কতিপয় নেতাকর্মীরা ছাত্র ইউনিয়নের নেতাকর্মীদের উপর চড়াও হন।
এসময় গণতান্ত্রিক ছাত্রজোটভুক্ত গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিল, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (ইউপিডিএফ সমর্থিত) এর কতিপয় নেতাকর্মী তাদের সাথে যোগ দিয়ে হামলায় অংশ নেয়। তাদের হামলায় ছাত্র ইউনিয়নের অন্তত ৭ জন কর্মী আহত হন। হামলায় ছাত্র ইউনিয়নের সিলেট জেলা সংসদের নেতা সন্দ্বীপ দাশ মাথায় গুরুতর আঘাত পান, পরবর্তীতে চট্টগ্রাম বন্দর এলাকায় অবস্থিত বন্দর হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের (ইউপিডিএফ সমর্থিত) সাধারণ সম্পাদক শুভাশিস চাকমা হাতে লাঠি নিয়ে ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় সভাপতি মাহির শাহরিয়ার উপর হামলা করতে উদ্যত হলে ছাত্র ইউনিয়নের নেতাকর্মীরা তা প্রতিহত করেন। ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক বাহাউদ্দিন শুভ’র উপরও হামলার চেষ্টা করে হামলাকারীরা। ছাত্র ইউনিয়ন তৎক্ষনাৎ এ হামলার খবর তাদের কেন্দ্রীয় ফেইসবুকে পেজে পোস্ট করে জানায় এবং স্থানীয় গণমাধ্যমে হামলার নিন্দা জানিয়ে বিজ্ঞপ্তি প্রদান করে। অথচ রোডমার্চ শেষ হওয়ার পর ৩য় দিনে এসে গণতান্ত্রিক ছাত্রজোট তাদের উপর হামলার মিথ্যাচারপূর্ণ বিজ্ঞপ্তি দিয়েছ যা অত্যন্ত নিন্দনীয়। বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন গণতান্ত্রিক ছাত্রজোটের কতিপয় সংগঠনকে মিথ্যাচার বাদ দিয়ে হামলার সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানায়।
বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি মাহির শাহরিয়ার রেজা এবং সাধারণ সম্পাদক বাহাউদ্দিন শুভ এক যৌথ বিবৃতিতে গণতান্ত্রিক ছাত্রজোটের মিথ্যা বিবৃতির নিন্দা জানান। নেতৃবৃন্দ বলেন, “গণতান্ত্রিক ছাত্রজোট তাদের যে মিথ্যাচার করেছে তা নিন্দনীয় ও শিষ্টাচার বহির্ভূত। গণতান্ত্রিক ছাত্রজোটভুক্ত কিছু সংগঠন দীর্ঘদিন ধরেই ছাত্র ইউনিয়নের বিরুদ্ধে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত কুৎসা রটিয়ে আসছে। ছাত্র ইউনিয়নকে অভ্যুত্থানবিরোধী প্রমাণে তারা সচেষ্ট হয়েছে। অথচ, ছাত্র ইউনিয়ন জুলাই গণঅভ্যুত্থানে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেছে। সারাদেশের বিভিন্ন জায়গায় আন্দোলনের মূল সংগঠক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন ছাত্র ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দ। ১৮ জুলাই ছাত্র ইউনিয়ন কর্মী মাহমুদুল হাসান রিজভী ও ৫ আগস্ট রফিকুল ইসলাম শহীদ হন। ৩১ জুলাই কারফিউ ভেঙে মিছিল করে ছাত্র ইউনিয়ন সভাপতি মাহির শাহরিয়ার রেজাসহ ছাত্র ইউনিয়ন ও যুব ইউনিয়নের ১৭ জন নেতাকর্মী আটক হয়েছিলেন।
৫ আগস্ট সকালে ছাত্র ইউনিয়ন সভাপতি মাহির শাহরিয়ার রেজা ডিবি পুলিশ কর্তৃক আটক ও নির্যাতনের শিকার হন। ছাত্র ইউনিয়ন জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সামনের সারির শক্তি। অথচ গণতান্ত্রিক ছাত্রজোটভুক্ত কতিপয় সংগঠন ছাত্র ইউনিয়ন নিয়ে মিথ্যাচার করে আসছে। সেই মিথ্যাচারের ধারাবাহিকতায় ঢাকা-চট্টগ্রাম রোডমার্চেও তারা হট্টগোল ও হামলা চালিয়ে ছাত্র ইউনিয়নকে দোষারোপ করছে। আমরা প্রশ্ন রাখতে চাই, তারা যদি হামলার শিকার হয়েই থাকেন তবে তৎক্ষনাৎ প্রতিবাদ না জানিয়ে ৩ দিন পরে এসে হামলার শিকার হওয়ার দাবি করছেন কেন? তবে কি তারা গুছিয়ে মিথ্যাচার করবার জন্য সময় নিয়েছেন? রোডমার্চ বানচাল করার নানামুখী ষড়যন্ত্রের আভাস শুরতে পাওয়া গিয়েছিল এবং রোডমার্চ সফলভাবে শেষ হওয়ার ঠিক আগ মুহূর্তে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হট্টগোল ও হামলা সেই ষড়যন্ত্রের আশঙ্কাকেই সত্য প্রমাণ করেছে। আমরা গণতান্ত্রিক ছাত্রজোটভুক্ত কতিপয় সংগঠনের হীন দুরভিসন্ধিমূলক মিথ্যাচারের তীব্র নিন্দা জানাই। তাদের যেসব নেতাকর্মী ছাত্র ইউনিয়নের কর্মীদের উপর হামলা চালিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাই।”