মধ্যপ্রাচ্যে ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যকার সাম্প্রতিক দ্বন্দ্বে ঘোষিত যুদ্ধবিরতি এক সপ্তাহ পার করলেও অঞ্চলজুড়ে উত্তেজনা এখনও কমেনি।
গত ১৩ জুন ইসরায়েল প্রথম হামলা চালালে সংঘাত শুরু হয়, যার জবাবে ইরান পাল্টা প্রতিশোধমূলক হামলা চালায়। প্রায় ১২ দিনের এই রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পর আন্তর্জাতিক চাপে ২৩ জুন যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করা হয় এবং ২৫ জুন তা আনুষ্ঠানিকভাবে কার্যকর হয়।
তবে যুদ্ধবিরতির পরও উভয় পক্ষের বক্তব্যে পরস্পরকে অবিশ্বাস করার প্রবণতা স্পষ্ট। ইরান পারমাণবিক কর্মসূচি অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিলে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নতুন করে হামলার হুমকি দেন। ইরানও আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থার (আইএইএ) সঙ্গে সহযোগিতা বন্ধ ঘোষণা করেছে।
আইএইএর তথ্যমতে, ইরানের কয়েকটি পরমাণু স্থাপনায় ক্ষয়ক্ষতি হলেও কার্যক্ষমতা পুরোপুরি ধ্বংস হয়নি। ফলে ইরান ভবিষ্যতে আবারও ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ শুরু করতে পারে।
অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের অভিযোগ—ইরান সাইবার হামলার মাধ্যমে মার্কিন গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো লক্ষ্য করছে। মার্কিন হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগ ইতোমধ্যে সাইবার সতর্কতা জারি করেছে।
যুদ্ধবিরতির পর নিষেধাজ্ঞা শিথিলের বিষয়ে কিছুটা ইঙ্গিত দিলেও ট্রাম্প পরে তা প্রত্যাহার করে নেন, যখন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনি যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে কড়া ভাষায় বক্তব্য দেন।
এদিকে জাতিসংঘের কাছে পাঠানো চিঠিতে ইরান দাবি করেছে, এই সংঘাতে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল মূলভাবে দায়ী। তারা জাতিসংঘকে বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।
সব মিলিয়ে যুদ্ধবিরতি কার্যকর থাকলেও রাজনৈতিক ও সামরিক উত্তেজনা নতুন করে সংঘর্ষের আশঙ্কা বাড়িয়ে তুলছে। পরমাণু ইস্যু, পারস্পরিক অবিশ্বাস ও সাইবার হামলার অভিযোগ—সব মিলে মধ্যপ্রাচ্যের পরিস্থিতি এখনো অত্যন্ত সংবেদনশীল।