চীনের অত্যাধুনিক পঞ্চম প্রজন্মের ফাইটার জেট শেনায়াং জে-৩৫ এ খুব শিগগিরই পাকিস্তানের আকাশে দেখা যেতে পারে। পাকিস্তানের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বর্তমানে দেশটির পাইলটরা চীনে জে-৩৫ পরিচালনার জন্য প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন। ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে পাকিস্তান আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা দেয় যে তারা চীন থেকে ৪০টি জে-৩৫ সংগ্রহ করতে যাচ্ছে। চায়না ন্যাশনাল এরো টেকনোলজি ইমপোর্ট অ্যান্ড এক্সপোর্ট করপোরেশন সম্প্রতি ফ্রান্সে অনুষ্ঠিত প্যারিস এয়ার শোতেও পাকিস্তানের সঙ্গে এই বড় চুক্তির বিষয়টি নিশ্চিত করে।
২০২৩ সালে প্রথমবারের মতো আকাশে ওড়ে শেনায়াং জে-৩৫। চলতি বছরের ১৬ থেকে ২২ জুন ফ্রান্সে অনুষ্ঠিত প্যারিস এয়ার শোতে বিদেশের মাটিতে প্রথমবারের মতো এই যুদ্ধবিমানের মডেল উন্মোচন করে চীন। ইতিমধ্যে চীন আটটির বেশি জে-৩৫ তৈরি করেছে। শুধু পাকিস্তান নয়, সৌদি আরবসহ আরও কয়েকটি দেশের কাছে এই ফাইটার জেট রপ্তানির বড় লক্ষ্য নিয়ে এগোচ্ছে বেইজিং।
আন্তর্জাতিক বাজারে এফ-৩৫ বিক্রিতে যুক্তরাষ্ট্রের কঠোর শর্ত আর রাজনৈতিক সীমাবদ্ধতার সুযোগ নিচ্ছে চীন। উদাহরণস্বরূপ, যুক্তরাষ্ট্র ইসরাইলের নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে সৌদি আরবকে এফ-৩৫ সরবরাহে অনাগ্রহ দেখিয়েছে। আর সংযুক্ত আরব আমিরাতের ক্ষেত্রে এত বেশি নিয়ন্ত্রণমূলক শর্ত জুড়ে দেওয়া হয় যে তারা অবশেষে চুক্তি বাতিল করে দেয়। এমতাবস্থায় আমিরাত ফ্রান্সের কাছ থেকে ৮০টির বেশি রাফালে ফাইটার জেট কেনার সিদ্ধান্ত নেয়। ফলে, এমন পরিস্থিতিতে চীনের তৈরি জে-৩৫ হয়ে উঠছে বিকল্প ও প্রতিদ্বন্দ্বী শক্তি।
চীনের নিজস্ব তৈরি আরেকটি পঞ্চম প্রজন্মের যুদ্ধবিমান চেংদু জে-২০ থাকলেও সেটি রপ্তানির জন্য নয়। চীন বিশ্ববাজারে রপ্তানির জন্যই শেনায়াং জে-৩৫ তৈরি করেছে, যার লক্ষ্য যুক্তরাষ্ট্রের এফ-৩৫ এর সঙ্গে সরাসরি প্রতিযোগিতা করা। প্রযুক্তি, গতিবেগ, গোপন অভিযান সক্ষমতা ও স্টেলথ ডিজাইন— সবকিছুতেই এই বিমান আধুনিক মানের প্রতীক হয়ে উঠছে।
সম্প্রতি ভারত-পাকিস্তান সীমান্ত উত্তেজনায় পাকিস্তান যখন চীনের তৈরি চেংদু জে-১০ ফাইটার জেট ব্যবহার করে কার্যকর প্রতিরোধ গড়ে তোলে, তখন থেকেই ভারতীয় বিমানবাহিনীতে উদ্বেগ বাড়তে থাকে। এবার পাকিস্তান যখন শেনায়াং জে-৩৫ সংগ্রহের দিকে এগোচ্ছে, তখন বিষয়টি ভারতীয় প্রতিরক্ষা মহলে স্পষ্টতই এক নতুন কাঁপুনি সৃষ্টি করেছে। এই যুদ্ধবিমান পাকিস্তানের আকাশ প্রতিরক্ষা ও আক্রমণ সক্ষমতা অনেক গুণ বাড়িয়ে দেবে বলে মনে করছেন সামরিক বিশ্লেষকরা।