কুমিল্লা প্রতিনিধি:
কুমিল্লার মুরাদনগরের রামচন্দ্রপুর দক্ষিণ ইউনিয়নে এক নারীকে বিবস্ত্র করে নির্যাতনের ঘটনায় স্থানীয় ছাত্রলীগ নেতা ও তার অনুসারীদের সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ উঠেছে। ধীরে ধীরে চাঞ্চল্যকর এই ঘটনার পেছনের রহস্য উন্মোচিত হচ্ছে।
স্থানীয় সূত্র ও প্রশাসনের তথ্যমতে, ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি মোহাম্মদ আলী সুমনের নেতৃত্বে একটি দল বৃহস্পতিবার রাতে পরিকল্পিতভাবে ওই নারীকে বিবস্ত্র করে নির্যাতন করে এবং তার ভিডিও ধারণ করে তা সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়।
ভুক্তভোগী নারীর স্বামী সৌদি প্রবাসী। তার সঙ্গে স্থানীয় যুবক ফজর আলীর পরকীয়ার সম্পর্ক ছিল বলে দাবি করছে এলাকাবাসী ও জনপ্রতিনিধিরা। সেদিন রাতে ফজর আলী ওই নারীর ঘরে প্রবেশ করলে, ছাত্রলীগ নেতা সুমনের নেতৃত্বে ১০-১২ জন যুবক তাদের ‘হাতেনাতে ধরার’ নামে ঘরে ঢুকে মারধর ও নির্যাতন চালায়।
ইউনিয়ন চেয়ারম্যান গোলাম কিবরিয়া খোকন জানান, ঘটনাটি পরিকল্পিত। তিনি বলেন, “পরকীয়ার সম্পর্ক থাকলেও কোনোভাবেই কাউকে এইভাবে নির্যাতন করা বা ভিডিও করে ছড়িয়ে দেওয়া গ্রহণযোগ্য নয়। দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত।”
স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দুল করিম এবং গ্রামবাসীরাও জানিয়েছেন, সুমন ও তার দল দীর্ঘদিন ধরে ‘ফিটিং কেস’ নামক এই কৌশলে মানুষকে ফাঁদে ফেলে জিম্মি করে অর্থ আদায় করে আসছে।
এ ঘটনায় পুলিশ রামচন্দ্রপুর দক্ষিণ ইউনিয়ন ছাত্রলীগ সভাপতি সুমনসহ পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে। মুরাদনগর থানার ওসি জাহিদুর রহমান জানান, “নারীকে বিবস্ত্র করে নির্যাতনের ঘটনায় আমরা সুমনসহ পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছি। তাদের রাজনৈতিক পরিচয় ও অতীত কর্মকাণ্ড তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।”
কুমিল্লার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ নাজির আহমেদ খান বলেছেন, “এ ঘটনায় যারা জড়িত, দল-মত নির্বিশেষে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। আমাদের তদন্ত টিম কাজ করছে।”
এখন পর্যন্ত গ্রেফতার ব্যক্তিদের রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বলছে, এই ঘটনা শুধু পরকীয়া নয়, বরং এর পেছনে সংগঠিত অপরাধ ও রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়নের দিকও গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করা হচ্ছে।