Staff Correspondent:
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) চেয়ারম্যানের অপসারণ এবং রাজস্ব খাতের সংস্কারের দাবিতে ‘মার্চ টু এনবিআর’ কর্মসূচি শুরু করেছেন আন্দোলনরত কর্মকর্তা–কর্মচারীরা। শনিবার (২৮ জুন) সকাল থেকেই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা শুল্ক ও কর কর্মকর্তারা রাজধানীর এনবিআর ভবনের সামনে সমবেত হন।
বিক্ষোভের মুখে নিরাপত্তা জোরদার করেছে প্রশাসন। এনবিআর ভবনের প্রধান ফটক বন্ধ করে ভেতরে অবস্থান নিয়েছে বিজিবি, পুলিশ, র্যাব ও কোস্টগার্ডের সদস্যরা। কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারীকে ভেতরে প্রবেশ বা বাইরে বের হতে দেওয়া হচ্ছে না বলে জানান আন্দোলনকারীদের একজন।
শাটডাউন কর্মসূচি শুরু
আজ থেকেই সারাদেশের শুল্ক ও কর কার্যালয়ে লাগাতার ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচিও শুরু হয়েছে। এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের ব্যানারে এ কর্মসূচি পালিত হচ্ছে।
আন্দোলনকারীদের অভিযোগ
আন্দোলনরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অভিযোগ, এনবিআর চেয়ারম্যান প্রকৃত সমস্যাগুলো সমাধানে ব্যর্থ হচ্ছেন এবং গণমাধ্যমে ভুল তথ্য উপস্থাপন করছেন। তারা বলেন, “এ মুহূর্তে চেয়ারম্যানের পদত্যাগ ছাড়া এই সংকটের কোনো সমাধান নেই।”
সরকারের অবস্থান
অন্যদিকে, অর্থ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এনবিআরের চলমান অচলাবস্থা নিরসনে বৃহস্পতিবার একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। শুক্রবার প্রকাশিত এক সরকারি বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়,
- ঘোষিত কর্মসূচি প্রত্যাহারের নির্দেশনা,
- কর্মকর্তাদের বদলি আদেশ পুনর্বিবেচনা, এবং
- আগামী মঙ্গলবার তিন পক্ষের (সরকার, এনবিআর, আন্দোলনকারীরা) মধ্যে আলোচনার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
তবে আন্দোলনকারীরা এসব নির্দেশনা প্রত্যাখ্যান করে পূর্বঘোষিত কর্মসূচি পালন করছেন।
ঐক্য পরিষদের বক্তব্য
সংবাদ সম্মেলনে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের সভাপতি হাছান মুহম্মদ তারেক রিকাবদার বলেন, “আমরা এনবিআর সংস্কারের পক্ষে, তবে তা হতে হবে সব পক্ষের মতামতের ভিত্তিতে। নিপীড়নমূলক বদলির আদেশ বাতিল না হলে, এবং এনবিআর চেয়ারম্যান অপসারণ না হলে আন্দোলন চলবে।”
পটভূমি
উল্লেখ্য, গত ১২ মে সরকার এক অধ্যাদেশের মাধ্যমে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ও অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ বিলুপ্ত করে ‘রাজস্ব নীতি বিভাগ’ and ‘রাজস্ব ব্যবস্থাপনা বিভাগ’ নামে দুটি নতুন বিভাগ গঠন করে। এর পর থেকেই রাজস্ব কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আন্দোলনে নামেন।
বর্তমানে আন্দোলনকারীরা এনবিআরের প্রশাসনিক সংস্কার, বদলি আদেশ বাতিল এবং নেতৃত্ব পরিবর্তনের দাবিতে সংগঠিত হচ্ছেন। এ আন্দোলন চলমান রাজস্ব সংগ্রহ ব্যবস্থায় বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।