নিজস্ব প্রতিবেদক :
ইসলামি চিন্তাবিদ আল্লামা ইমাম হায়াত বলেছেন, পহেলা মহররমকে ‘নববর্ষ উৎসব’ হিসেবে পালন করা শাহাদাতে কারবালার চেতনার পরিপন্থী এবং এটি ইসলামবিরোধী খারেজি মতাদর্শের অংশ। তিনি বলেন, “মহররম কোনো উৎসবের মাস নয়, বরং এটি শোক, আত্মসমীক্ষা ও ঈমানি শপথের মাস।”
বুধবার (২৫ জুন) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, “মহররম মাস মুমিন ও বিবেকবান মানুষের হৃদয়ের সীমাহীন শোকের উপলক্ষ। এই মাসে হজরত ইমাম হোসাইন (রা.)-এর কারবালার শাহাদাত ইতিহাসের সবচেয়ে বড় ত্যাগের ঘটনা। তাই শোক ও আনন্দ একসাথে চলতে পারে না।”
তিনি বলেন, “নতুন বছর শুরুর প্রাক্কালে মুমিনগণ দোয়া, তওবা, নফল নামাজ, সালাত ও সালাম আদায়ের মাধ্যমে বছরটি শুরু করতে পারেন। তবে এটিকে উৎসব বা আনন্দোৎসবে রূপ দেওয়া ইসলামের মৌলিক চেতনার বিরুদ্ধে যায়।”
আল্লামা ইমাম হায়াত আরও বলেন, “শোক পালন আর উৎসব উদযাপন দুটি সম্পূর্ণ ভিন্ন বিষয়। শোক পালন হয় শালীনতা ও আত্মনিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে। উৎসবের নামে কারবালার বেদনা আড়াল করার চেষ্টা ঈমানি দৃষ্টিভঙ্গির পরিপন্থী।”
তিনি হুঁশিয়ার করে বলেন, “খারেজি চেতনায় বিশ্বাসীরা কারবালার লক্ষ্য ও শিক্ষা ধ্বংস করতে মহররমকে ‘নববর্ষ উৎসব’ হিসেবে উপস্থাপন করছে, যা ঈমানদারদের জন্য বড় ফিতনা।”
ইসলাম বর্ষপঞ্জিভিত্তিক ধর্ম নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, “বর্ষ, মাস, দিন এগুলো প্রাকৃতিক চক্রের নিয়ম। ইসলাম সময়ের প্রতি গুরুত্ব দেয়, কিন্তু কোনো নির্দিষ্ট ‘বর্ষ উৎসব’ প্রতিষ্ঠা করেনি। ইসলামকে শুধুমাত্র হিজরি বা চন্দ্রবর্ষভিত্তিক সীমাবদ্ধ দেখানোর প্রচেষ্টাও একটি ষড়যন্ত্র।”
তিনি আরও বলেন, “মহররম পালন করা উচিত পূর্ব বছরের গোনাহর ক্ষমা চাওয়া ও আগত বছরের জন্য আল্লাহর রহমত, রিজিক, সুস্থতা ও হেফাজতের দোয়ার মাধ্যমে। একইসাথে এই মাসে কারবালার আদর্শ বাস্তবায়নের প্রস্তুতি ও শপথ নিতে হবে।”
আল্লামা হায়াত বলেন, “শাহাদাতে কারবালার শিক্ষা হলো অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ, সত্য ও ন্যায়ের পথে অবিচল থাকা। আর সেই শিক্ষা ভুলে গিয়ে এই মাসে উৎসব উদযাপন করা ঈমানহীনতার পরিচয়।”