আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
মার্কিন সামরিক ঘাঁটি আল উদেইদে ইরানের পাল্টা হামলার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ইরান ও ইসরায়েল যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়—ঘটনাটি বিশ্বজুড়ে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। ১২ দিন ধরে চলা এই সংঘাত কীভাবে আকস্মিকভাবে থেমে গেল, তার পেছনের কূটনৈতিক তৎপরতা এখন সামনে আসছে।
◼️ একাধিক স্তরে চলেছে গোপন যোগাযোগ
জানা গেছে, যুদ্ধবিরতির আগে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট Donald Trump সরাসরি ফোনে কথা বলেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে। একইসঙ্গে, ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স, পররাষ্ট্রমন্ত্রী Marco Rubio এবং মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক দূত স্টিভ উইটকফ ইরানের সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ যোগাযোগ রাখেন।
এই আলোচনা বাস্তবায়নে কাতার গুরুত্বপূর্ণ মধ্যস্থতাকারী হিসেবে ভূমিকা রাখে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প নিজে কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি-র সঙ্গে যোগাযোগ করেন এবং যুদ্ধবিরতিতে ইরানকে রাজি করাতে সহায়তা চান।
◼️ যুদ্ধের পরিণতিতে দ্রুত কূটনৈতিক সমঝোতা
যুক্তরাষ্ট্রের হামলায় ইরানের একটি পারমাণবিক স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এর পরপরই ইরান কাতারে অবস্থিত মার্কিন ঘাঁটিতে পাল্টা হামলা চালায়। এতে উত্তেজনা চরমে পৌঁছায়। কিন্তু ওই হামলার পরপরই ট্রাম্প ট্রুথ সোশ্যালে ঘোষণা দেন,
“ইসরায়েল ও ইরান আমার কাছে এসে জানায় তারা শান্তি চায়। আমি জানতাম, এখনই সময়।”
এই ঘোষণার মাধ্যমে ১২ দিনের সংঘাতের আনুষ্ঠানিক অবসান হয়।
◼️ কাতার-ইরান ফোনালাপে গতি পায় যুদ্ধবিরতি
সূত্র জানায়, ভাইস প্রেসিডেন্ট ভ্যান্স কাতারের প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আব্দুলরহমান আল-থানির কার্যালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রাখেন। এরপরই কাতারের পক্ষ থেকে ইরানের সঙ্গে সরাসরি সংলাপ হয় এবং ইরান যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়।
ইরানের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম দাবি করেছে, তারা প্রতিশোধমূলক হামলার পরই শত্রুপক্ষ যুদ্ধ থামাতে বাধ্য হয়। পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি Said,
“ইসরায়েল আগ্রাসন থামালে ইরানও প্রতিক্রিয়া দেখাবে না—আমরা সেটাই করেছি।”
◼️ যুদ্ধের মধ্যে শান্তির প্রচেষ্টা
এদিকে, কূটনৈতিক সূত্রমতে, এই সংঘাতের মধ্যেও যুক্তরাষ্ট্র ইরানকে আলোচনায় ফিরিয়ে আনার প্রচেষ্টা চালায়। তুরস্কে দুই দেশের শীর্ষ পর্যায়ের বৈঠকের পরিকল্পনা থাকলেও তা বাস্তবায়িত হয়নি।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ইরানের প্রতিক্রিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী কৌশল একসাথে মিলে পরিস্থিতি শান্ত করার পথ খুলে দেয়। এটি মধ্যপ্রাচ্যের দীর্ঘস্থায়ী অস্থিতিশীলতার পটভূমিতে এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হয়ে থাকবে।