গণহত্যা, নিপীড়ন ও মানবতাবিরোধী অপরাধের মতো গুরুতর অভিযোগে সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন, র্যাবের সাবেক গোয়েন্দা পরিচালক ও সেনা কর্মকর্তা জিয়াউল আহসানসহ নিরাপত্তা বাহিনীর সাতজন শীর্ষ কর্মকর্তাকে আজ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়েছে।
দীর্ঘ তদন্ত শেষে আন্তর্জাতিক অপরাধ তদন্ত সংস্থা তাদের বিরুদ্ধে প্রাথমিকভাবে গণহত্যা, নির্যাতন, গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যা ও রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ দমনসহ একাধিক মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়ার দাবি করেছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, এসব অভিযোগ মূলত বিগত এক দশকে সংঘটিত ঘটনাসমূহকে ঘিরে, যেখানে ‘রাষ্ট্রীয় ছত্রছায়ায়’ মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ বহুবার আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও আলোচিত হয়েছে।
আজকের শুনানিতে ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশন পক্ষ অভিযুক্তদের বিচারের আওতায় আনার পক্ষে জোরালো যুক্তি তুলে ধরে। বিচারপতিরা এই বিষয়ে প্রাথমিক শুনানি শেষে পরবর্তী পদক্ষেপের জন্য আগামী সপ্তাহে দিন ধার্য করেছেন।
এ ঘটনায় রাজনৈতিক অঙ্গনসহ গোটা দেশজুড়ে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় বইছে। বিশেষ করে, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে এমন বিচার কার্যক্রম নজিরবিহীন বলে মন্তব্য করেছেন বিশ্লেষকরা। অনেকেই এটিকে দীর্ঘদিনের দায়মুক্তির সংস্কৃতির অবসান হিসেবে দেখছেন, আবার কেউ কেউ আশঙ্কা করছেন—এটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতও হতে পারে।
এদিকে অভিযুক্তদের পরিবারের সদস্যরা অভিযোগ অস্বীকার করে বলছেন, এটি ‘নির্বাচিত বিচার’ এবং প্রতিহিংসার বহিঃপ্রকাশ। তবে ট্রাইব্যুনাল বলেছে, প্রমাণের ভিত্তিতেই পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে এবং সকল পক্ষের যুক্তি খতিয়ে দেখেই বিচার হবে।
এই মামলার অগ্রগতি বাংলাদেশের ইতিহাসে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের এক নতুন অধ্যায় উন্মোচন করতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।