মো:দিল,সিরাজগঞ্জ:
সিরাজগঞ্জে ব্যবসায়ী গোলাম মোস্তফা হত্যা মামলায় একজনকে মৃত্যুদণ্ড এবং চারজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে তাদের প্রত্যেককে অর্থদণ্ডও করা হয়েছে।
সোমবার (২৩ জুন) দুপুরে সিরাজগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত-৩ এর বিচারক মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান এই রায় ঘোষণা করেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি হলেন, সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার রানিগ্রাম এলাকার বাসিন্দা তারেকুল ইসলাম তারেক। এবং
যাবজ্জীবনপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন, সিরাজগঞ্জ পৌর শহরের রানিগ্রামের
মৃত কাশেমের ছেলে সেলিম রেজা,
একই এলাকার বাসিন্দা বাদল সেখ, নজরুল ইসলাম, সাইদুল ইসলাম।
মামলার এজাহার ও আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালের ৩ অক্টোবর ভোরে ফজরের নামাজ শেষে গোলাম মোস্তফা (৫০) নামের এক ব্যবসায়ী রানিগ্রামের একটি স্থানীয় খাবার হোটেলে নাশতা করছিলেন। এ সময় পরিকল্পিতভাবে একদল দুর্বৃত্ত তার ওপর হামলা চালায়। ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে তাকে গুরুতর আহত করা হয়। আশঙ্কাজনক অবস্থায় স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে সিরাজগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
ঘটনার পরদিন নিহতের স্ত্রী শিখা খাতুন বাদী হয়ে সিরাজগঞ্জ সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় ২৭ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত আরও ২৫ জনকে আসামি করা হয়। এ মামলায় দীর্ঘ তদন্ত, সাক্ষ্যগ্রহণ ও বিচারিক প্রক্রিয়া শেষে আজ সোমবার পাঁচজনের বিরুদ্ধে রায় ঘোষণা করেন আদালত। মামলার অন্যান্য আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় আদালত তাদের খালাস দেন।
রায়ে বিচারক বলেন, “আসামিদের মধ্যে তারেকুল ইসলাম তারেকের বিরুদ্ধে অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় তাকে মৃত্যুদণ্ড প্রদান করা হলো। অন্য চারজনের বিরুদ্ধেও অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় প্রত্যেককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং অর্থদণ্ড প্রদান করা হলো।
আসামিরা রায় ঘোষণার সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন। রায় ঘোষণার পর আদালত কক্ষে কড়া নিরাপত্তা বজায় রাখা হয়।
রায়ের সত্যতা নিশ্চিত করে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত-৩ এর স্টেনোগ্রাফার শরিফুল ইসলাম বলেন, বহুল আলোচিত এই হত্যা মামলায় আদালত দীর্ঘ সময় শুনানি শেষে রায় দিয়েছেন। নিহতের পরিবার দীর্ঘদিন ধরে ন্যায়বিচারের জন্য অপেক্ষা করছিল।
রায় ঘোষণার পর নিহত গোলাম মোস্তফার স্ত্রী শিখা খাতুন কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ছেলেমেয়েদের নিয়ে আমরা দুঃসহ জীবন পার করেছি। আজ এই রায়ে কিছুটা হলেও শান্তি পেলাম। আমরা চাই, এই রায় দ্রুত কার্যকর হোক।