মোঃ খায়রুল ইসলাম, গৌরনদী (বরিশাল):
বরিশালের গৌরনদী পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডে প্রায় ৫০ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত একটি কার্পেটিং সড়ক শেষ হওয়ার আগেই ধসে পুকুরে পড়ে গেছে। এতে তিনটি মহল্লার কয়েক হাজার মানুষের চলাচলে চরম দুর্ভোগ সৃষ্টি হয়েছে।
স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, নির্মাণ কাজে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার ও ত্রুটিপূর্ণ প্রকৌশল পরিকল্পনার কারণে এ ধসের ঘটনা ঘটেছে। তারা দুর্নীতিবাজ ঠিকাদারের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা ও দ্রুত সড়কটি পুনঃনির্মাণের দাবি জানিয়েছেন।
পৌরসভা সূত্রে জানা গেছে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে শাওড়া মহল্লার ঠাকুরবাড়ি থেকে সন্যামাত বাড়ি হয়ে কবির মৃধার বাড়ি পর্যন্ত কার্পেটিং সড়ক নির্মাণে প্রায় ৫০ লাখ টাকার প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। কাজটি বাস্তবায়ন করে মেসার্স দেলোয়ার কনস্ট্রাকশন নামের প্রতিষ্ঠান। মার্চ মাসে কাজ শুরু করেন ঠিকাদার মো. আলাউদ্দিন ভূঁইয়া। সম্প্রতি নির্মাণকাজ শেষ হলেও তার আগেই সড়কের একটি বড় অংশ ফেটে গিয়ে পুকুরে ধসে পড়ে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, বিটুমিন (পিচ) সরে গিয়ে সড়কের বড় একটি অংশ পানিতে চলে গেছে। রাস্তার পাশের পাইলিং ও সুরক্ষা দেয়ালও দুর্বল ও নিম্নমানের বলে অভিযোগ উঠেছে। এতে বৃষ্টি হলে ঝুঁকি আরও বাড়ছে। এখন সড়কটিতে কোনো যানবাহন চলাচল তো দূরের কথা, পথচারীদের চলাও কঠিন হয়ে পড়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা সাব্বির আকন, রাসেল ও পলাশ জানান, “ঠিকাদার অনিয়ম করে কাজ করেছেন। ডোবার পাশে প্রয়োজনীয় পাইলিং বা মাটি ব্যবহার না করায় সড়ক ধসে গেছে। জনগণের টাকায় নির্মিত একটি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক এভাবে নষ্ট হয়ে যাওয়া দুর্নীতির জ্বলন্ত প্রমাণ।”
শাওড়া, উত্তর বিজয়পুর ও দক্ষিণ বিজয়পুর এলাকার প্রায় ৩-৪ হাজার মানুষ এই সড়কে নিয়মিত যাতায়াত করেন। স্কুলগামী শিক্ষার্থী, অ্যাম্বুলেন্স, মালামাল পরিবহনসহ সাধারণ জনগণের জন্য এই সড়ক ছিল গুরুত্বপূর্ণ।
এ বিষয়ে প্রকল্প তদারককারী মো. রাশেদুজ্জামান ঝিলাম বলেন, “ডোবায় সেচ দেওয়া ও অতিবৃষ্টির কারণে রাস্তার ওই অংশ ভেঙে গেছে। ঠিকাদার নতুন করে সংস্কার করবেন।”
পৌরসভার উপ-সহকারী প্রকৌশলী মিজানুর রহমানও বলেন, “সড়কটি পুনরায় মেরামতের জন্য ঠিকাদারকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।”
তবে স্থানীয়দের প্রশ্ন— কাজ শেষ হওয়ার আগেই যদি সড়ক ধসে পড়ে, তাহলে জনগণের কোটি টাকার প্রকল্প কতটা টেকসই?