নিজস্ব প্রতিনিধি, চট্টগ্রাম:
চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলার কদলপুর ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের দাশ পাড়ার বাসিন্দা চিত্ত রঞ্জন দাশের পুত্র জীবন চন্দ্র দাশ (৩১)-এর বিরুদ্ধে যৌতুক, নির্যাতন ও প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে। স্ত্রীকে ডিভোর্স না দিয়েই ভুয়া পরিচয়ে দ্বিতীয় বিয়ের অভিযোগ এনে এখন বিচার ও নিরাপত্তার জন্য পথে পথে ঘুরছেন তার প্রথম স্ত্রী পিংকি দাশ ও তার পরিবার।
২০২২ সালে চট্টগ্রাম মহানগরের ২২নং এনায়েত বাজার এলাকার গোয়ালপাড়ার কাজল দাশের মেয়ে পিংকি দাশের সঙ্গে সামাজিকভাবে বিয়ে হয় জীবন চন্দ্র দাশের। বিয়েতে কনের পরিবার ঋণ করে নগরীর মেট্রোপল ক্লাবে ৭০০ জন বরযাত্রীসহ অনুষ্ঠান আয়োজন করে, দেনমোহর, স্বর্ণালংকারসহ সব কিছুই দেয়া হয় জীবন দাশের পরিবারের চাহিদা অনুযায়ী।
শারীরিক-মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ
বিয়ের কিছুদিনের মধ্যেই পিংকি দাশের ওপর শুরু হয় শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন। এরপর তাদের ঘরে একটি কন্যা সন্তানের জন্ম হয়। কিন্তু সন্তানের জন্মের কিছুদিন পরই বেরিয়ে আসে জীবনের গোপন প্রতারণার খবর।
পিংকি দাশ অভিযোগ করে বলেন,
“আমাকে না জানিয়ে জীবন ভুয়া জাতীয় পরিচয়পত্র বানিয়ে দ্বিতীয় বিয়ে করেছে। বিষয়টি জানার পর তার পরিবারও তাকে সমর্থন করে। আমি ও আমার মা আইনের আশ্রয় নিতে গেলে, আমাদের নানাভাবে হুমকি-ধমকি দেয়া হয়।”
সাংবাদিককে হুমকি, আদালতের মধ্যেও ভয়ভীতি
প্রতিবেদক জীবন দাশের সঙ্গে কথা বললে তিনি বলেন,
“একটা বিয়ে করে ডিভোর্স না দিয়ে আরেকটা বিয়ে করাটা কোনো অপরাধ না।” এরপর তিনি সাংবাদিককে দেখে নেয়ার হুমকি দেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
এছাড়াও পিংকি দাশের মা লাকি দাশ জানান,
“জীবনের সহযোগীরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ায়, একাধিকবার আমাদের গুলি করে মারার হুমকি দিয়েছে। আদালতে মামলা চলার মধ্যেই পিংকিকে ডিভোর্স পাঠানো হয় এবং দ্বিতীয় স্ত্রী সুজাতা দেব পিংকিকে প্রশ্ন করেন, ‘ডিভোর্সে সাক্ষর কখন দেবে?’ এমন কথায় ভেঙে পড়া পিংকি আত্মহত্যার চেষ্টা করলে তার ছোট ভাই তাকে উদ্ধার করে।”
পারিবারিকভাবে বিচার চেষ্টাও ব্যর্থ
পিংকির পরিবার জানান, জীবনের পরিবার—পিতা চিত্তরঞ্জন দাশ, মাতা দিপ্তী রানী দাশ, ভাই ইমন দাশ, বোন আঁখী দাশ ও সাথী দাশ—কারোর কাছ থেকেই ন্যূনতম সহযোগিতা পাননি তারা। বরং কটূক্তি ও গালাগালির মুখে পড়তে হয়েছে।
কদলপুর ইউনিয়ন পরিষদে একাধিকবার মীমাংসার চেষ্টা করা হলেও জীবন তা মানেননি। পিংকি দাশের পরিবার এখনও বিয়ের ঋণের বোঝা বইছে, আর জীবনের প্রথম ঘরের শিশুকন্যা অসুস্থ হয়ে বিছানায় পড়ে আছে। তবু পিতা জীবনের ভ্রুক্ষেপ নেই।