বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার জাতীয় পতাকা পরিবর্তনের কোনো পরিকল্পনা করছে না, এমন মিথ্যা দাবি যে বিভিন্ন ওয়েবসাইট ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়ানো হয়েছে তা প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং পুরোপুরি নাকচ করেছে। তারা ফেসবুকের ভেরিফায়েড পেজে জানিয়েছে, এসব তথ্য “সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও মিথ্যা”। বিশেষ করে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়সহ অসংখ্য ব্যবহারকারী এই গুজব ছড়ানোর সঙ্গে জড়িত রয়েছেন। গুজবে দাবি করা হয়েছে, বাংলাদেশের পতাকায় পাকিস্তান ও তুরস্কের মতো দেশের ইসলামি চাঁদ-তারকা প্রতীক যুক্ত করা হবে।
প্রেস উইং আরও জানায়, ডিজিটাল প্রযুক্তিতে তৈরি একটি কাল্পনিক পতাকার ছবি ভাইরাল হয়েছে, যা পাকিস্তান, তুরস্ক ও মধ্যপ্রাচ্যের দর্শকদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। তবে দেশের কোনো প্রতিষ্ঠিত সংবাদমাধ্যম বা সরকারিভাবে জাতীয় পতাকা পরিবর্তনের কোনো আলোচনা হয়নি। ফ্যাক্ট চেকিং প্রতিষ্ঠান ‘দ্য ডিসেন্ট’ বলেছে, এই গুজব মূলত একটি এআই প্রযুক্তিতে তৈরি মিথ্যা প্রতিবেদন থেকে শুরু হয়েছে, যা রবার্ট ব্রাউনের নামে ৬ জুন প্রকাশিত হয়, যেখানে কোনো তথ্যসূত্র বা যাচাইযোগ্য উৎস ছিল না।
এছাড়া, পাকিস্তানপন্থি এক্স (সাবেক টুইটার) আইডি থেকে ৪ জুন একটি পোস্টে প্রথম এই গুজব ছড়িয়ে পড়ে, যেখানে কাল্পনিক পতাকার ডিজাইন শেয়ার করা হয়। পরে এই ছবি সজীব ওয়াজেদের শেয়ার করা ভুয়া প্রতিবেদনেও ব্যবহৃত হয়। প্রেস উইং মনে করিয়ে দিয়েছে, এই ধরনের মিথ্যাচার পরিকল্পিতভাবে ধর্মীয় প্রতীক ব্যবহার করে জাতীয়তাবাদী ও রক্ষণশীল শ্রোতাদের মধ্যে উত্তেজনা ও বিভ্রান্তি সৃষ্টির উদ্দেশ্যে চালানো হচ্ছে।
জুলাই মাসের গণ-আন্দোলনের পরও কিছু অ্যাকাউন্ট জাতীয় পতাকা পরিবর্তনের গুজব ছড়িয়েছিল, যা পরবর্তীতে পুরোপুরি খণ্ডন করা হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারকারীদের সতর্ক করে বলেছে, তারা যেন ভিত্তিহীন তথ্য শেয়ার করার আগে তা যাচাই করেন। বর্তমান সময়ে দেশের মধ্যে মিথ্যা তথ্য ও গুজব ছড়িয়ে বিভেদ সৃষ্টি করার পরিবর্তে সত্য ও নির্ভরযোগ্য তথ্যকেই গুরুত্ব দেয়া উচিত বলে তারা আপিল জানিয়েছে।