Bhurungamari (Kurigram) Representative:
কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলার বলদিয়া ইউনিয়নে ঈদুল আজহা উপলক্ষে বরাদ্দ পাওয়া ভিজিএফ চাল বিতরণে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। হতদরিদ্রদের জন্য বরাদ্দ পাওয়া ৫৭ দশমিক ৪৫ মেট্রিক টন চালের বড় অংশই বিতরণ হয়নি অনৈতিক তালিকা তৈরির কারণে। বিতরণে অনিয়ম ধরা পড়ায় প্রায় সাড়ে ১৮ মেট্রিক টন চাল অবিকৃত অবস্থায় গুদামে সীলগালা করে রাখা হয়েছে।
ভিজিএফ তালিকায় চাকরিজীবী-সচ্ছলদের নাম!
সরেজমিনে জানা যায়, ভিজিএফ কর্মসূচির আওতায় ৫ হাজার ৭৪৫টি পরিবারকে ১০ কেজি করে চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়। তবে তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয় স্থানীয় সরকারি-বেসরকারি শিক্ষক, ব্যবসায়ী, রাজনৈতিক নেতাসহ অন্তত দুই হাজার সচ্ছল ব্যক্তিকে।
অভিযোগ উঠেছে, এসব ভুয়া স্লিপ স্থানীয় চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যরা ব্যবসায়ীদের কাছে আগেই বিক্রি করে দেন। তবে চাল বিতরণের সময় স্থানীয় সচেতন মানুষ বাধা দিলে অনিয়মের ঘটনা প্রকাশ্যে আসে। ফলে বিতরণ শেষেও গুদামে সিলগালা করে রাখা হয় ১ হাজার ৮৪০ জনের চাল.
কারা ছিলেন সেই তালিকায়?
ভিজিএফ তালিকায় নাম থাকা কয়েকজন সচ্ছল ব্যক্তি হলেন—
- বলদিয়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক স্বপন কুমার সরকার (নং-১১৩৮)
- Businessman Rafiqul Islam (নং-২৯২১)
- স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা লুৎফর রহমান (নং-২৯৩৯)
- শিক্ষক আশরাফুজ্জামান (নং-২৫৭)
- স্থানীয় বাসিন্দা আরমান আলী (নং-২৫৮)
তারা সবাই জানান, তাদের অজ্ঞাতে নাম যুক্ত করা হয়েছে এবং বিষয়টি তাদের সামাজিকভাবে হেয় করেছে।
স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা লুৎফর রহমান বলেন,
“আমার নাম তালিকায় দেখে আমি হতবাক। এটা কিভাবে হলো, জানি না। আমি নিরপেক্ষ তদন্ত ও দোষীদের শাস্তি দাবি করছি।”
দরিদ্ররা ফিরে গেছেন খালি হাতে
ঈদের আগের দিন চাল সংগ্রহ করতে আসা হাজারো দরিদ্র নারী-পুরুষ সারাদিন অপেক্ষা করেও চাল না পেয়ে ফিরে গেছেন খালি হাতে। অনেকেই অভিযোগ করেন, তাদের বরাদ্দের স্লিপ চুপিচুপি বিক্রি করে দিয়েছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা।
কী বলছে প্রশাসন?
ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হক Said,
“ভুলক্রমে কিছু সচ্ছল ব্যক্তির নাম তালিকায় চলে এসেছে। তবে স্লিপ বিক্রির অভিযোগ ভিত্তিহীন।”
বিতরণ কর্মকর্তা রবিউল ইসলাম Said,
“বিতরণের শেষ দিনেও ১ হাজার ৮৪০ জন চাল নিতে আসেননি। তাদের চাল গুদামে সীলগালা করে রাখা হয়েছে।”
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) গোলাম ফেরদৌস Tell me,
“তালিকায় অসঙ্গতি থাকায় বিতরণ আপাতত বন্ধ রাখা হয়েছে। নির্ভুল তালিকা তৈরির পর অবশিষ্ট চাল সঠিকভাবে বিতরণ করা হবে।”