ইসরায়েলের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় সামরিক হামলার জেরে ইরানের ভূখণ্ডে উত্তপ্ত পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। এই হামলার প্রেক্ষাপটে পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চলমান আলোচনা এখন ‘অর্থহীন’ বলে মন্তব্য করেছে তেহরান।
শনিবার (১৪ জুন) বার্তা সংস্থা রয়টার্স এক প্রতিবেদনে জানায়, ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইসমাইল বাঘাই স্পষ্ট ভাষায় বলেন, “যুক্তরাষ্ট্র এমনভাবে কাজ করছে যা এই সংলাপকে অর্থহীন করে তুলেছে। আপনি একদিকে ইরানের ভূখণ্ডে হামলার অনুমতি দিয়ে, অন্যদিকে আলোচনার দাবি করতে পারেন না।” তিনি আরও জানান, “রোববারের নির্ধারিত আলোচনায় ইরান অংশ নেবে কি না, তা এখনো নিশ্চিত নয়।”
ইসরায়েলের সাম্প্রতিক বিমান হামলা যুক্তরাষ্ট্রের সম্মতি ছাড়া সম্ভব ছিল না বলেও দাবি করেছেন বাঘাই। তার মতে, এই হামলার মাধ্যমে মার্কিন প্রশাসন ইসরায়েলের প্রতি স্পষ্ট সমর্থন দেখিয়েছে এবং দুই দেশের মধ্যে পারমাণবিক বিষয়ে চলমান কূটনৈতিক প্রচেষ্টা ভেস্তে গেছে।
এদিকে ফেসবুক ও টুইটারসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঘুরছে এমন দাবি—ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরান আগামী কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষার ঘোষণা দিতে পারে। যদিও এ বিষয়ে ইরান আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানায়নি, তবে আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা এমন সম্ভাবনা একেবারে উড়িয়ে দিচ্ছেন না।
প্রসঙ্গত, শুক্রবার ভোরে ইসরায়েল ইরানের একাধিক পরমাণু ও সামরিক স্থাপনায় একযোগে ব্যাপক হামলা চালায়। এই হামলায় নিহত হন ইরানের কয়েকজন শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তা ও গুরুত্বপূর্ণ পরমাণুবিজ্ঞানী। এর জবাবে ইরান শত শত ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে ইসরায়েলের বিভিন্ন সামরিক ও অবকাঠামোগত স্থাপনায়। ইরানের এই পাল্টা হামলায় এখন পর্যন্ত তিনজন নিহত এবং অন্তত ৮০ জন ইসরায়েলি আহত হয়েছে বলে জানিয়েছে তেলআবিব। বিস্ফোরণের আশঙ্কায় দেশটির বিভিন্ন অঞ্চলের লাখ লাখ মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে ছুটে যায়।
পরিস্থিতি এখন অত্যন্ত উত্তপ্ত। বিশ্বজুড়ে উদ্বেগ বেড়েছে—ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধের মাঝখানে কি শুরু হতে যাচ্ছে পারমাণবিক শক্তির প্রকাশ্য দ্বন্দ্ব? জাতিসংঘ ও নিরাপত্তা পরিষদের পরবর্তী পদক্ষেপের দিকেই তাকিয়ে রয়েছে গোটা বিশ্ব।