রাজনৈতিক সংস্কার প্রক্রিয়া নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে দ্বিতীয় দফার আলোচনা আগামী জুনের প্রথম সপ্তাহে শুরু করবে ঐকমত্য কমিশন। আজ সোমবার রাজধানীর রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কমিশনের এক বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
প্রধান উপদেষ্টা নিজেই এই আলোচনার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন বলে জানানো হয়েছে। প্রসঙ্গত, গত ১৯ মে কমিশনের প্রথম দফার আলোচনা অনুষ্ঠিত হয় রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে।
আজকের সভায় কমিশনের অন্যান্য সদস্যরা রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার সর্বশেষ অগ্রগতি তুলে ধরেন প্রধান উপদেষ্টার সামনে। এ সময় প্রফেসর ইউনূস বলেন, “সংস্কার প্রক্রিয়া ও নির্বাচন নিয়ে নাগরিক সমাজ এবং তৃণমূলের সংগঠনগুলোকেও যুক্ত করতে হবে, যাতে জনসচেতনতা বৃদ্ধি পায়। নির্বাচনকে জনগণমুখী করতে হবে এবং তাদের মধ্যেই সচেতনতা তৈরি করতে হবে—যাতে কেউ ব্যালট বাক্স ছিনিয়ে নিতে না পারে।”
তিনি আরও বলেন, “এত বড় অভ্যুত্থানের পর আমরা যে বাংলাদেশ পেয়েছি, সেটি যেন পুরোনো অবস্থায় ফিরে না যায়।”
সভায় অতীতের বিভিন্ন নির্বাচনে অনিয়মের সঙ্গে জড়িতদের ভূমিকা তদন্তে স্বাধীন কমিশন গঠনের প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা হয়। এ প্রসঙ্গে কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, “এ বিষয়ে ইতোমধ্যে সব রাজনৈতিক দল ঐকমত্যে পৌঁছেছে।”
কমিশন সদস্য আইয়ুব ভূঁইয়া জনপ্রশাসন সংস্কারের লক্ষ্যে একটি নতুন বাস্তবায়ন কমিশন গঠনের আহ্বান জানান। তিনি বলেন, “১৯৮২ সালে গঠিত এনাম কমিশনের তৈরি অরগানোগ্রাম এখনো অপরিবর্তিত রয়েছে, অথচ প্রশাসনিক কাঠামোতে বহু পরিবর্তন এসেছে। নতুন কমিশন এই অরগানোগ্রামগুলো যুগোপযোগীভাবে পুনর্গঠন করতে পারবে।”
তিনি এনবিআর সংস্কার বিষয়ে বলেন, “জনপ্রশাসন কমিশনের সুপারিশ ছাড়াও আলাদাভাবে আরও দুটি কমিশন এনবিআর নিয়ে কাজ করেছে, যার ফলে সমন্বয়হীনতা সৃষ্টি হয়েছে।”
বিচার বিভাগীয় সংস্কার কমিশনের প্রতিনিধি এমদাদুল হক সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি নিয়োগে গঠিত কমিশনের স্বচ্ছতা বজায় রাখতে প্রধান উপদেষ্টার হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
দুর্নীতি দমন সংস্কার কমিশনের প্রতিনিধি ইফতেখারুজ্জামান ছয়টি মূল কমিশনের বাইরে গণমাধ্যম, শ্রম, স্থানীয় সরকার, নারী ও স্বাস্থ্য খাতের গঠিত কমিশনগুলোর সুপারিশ বাস্তবায়নে জাতীয় রোডম্যাপ তৈরির আহ্বান জানান।
নির্বাচন কমিশন সংস্কার কমিশনের প্রধান বদিউল আলম মজুমদার ২০০৮ সালের স্থানীয় সরকার নির্বাচন সংক্রান্ত খসড়া প্রস্তাবটি অধ্যাদেশ আকারে প্রকাশ করার প্রস্তাব দেন। সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন পুলিশ সংস্কার কমিশনের প্রতিনিধি সফর রাজ হোসেন।