সরকারি বিভিন্ন সেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে ‘এক ঠিকানায় সকল নাগরিক সেবা’ স্লোগানে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করল “নাগরিক সেবা বাংলাদেশ”। সোমবার রাজধানীর রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় এই উদ্যোগের পাইলট প্রকল্পের উদ্বোধন করেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস।
প্রশিক্ষিত উদ্যোক্তাদের মাধ্যমে গুলশান, উত্তরা ও নীলক্ষেত এলাকায় স্থাপিত নাগরিক সেবা কেন্দ্র থেকে নাগরিকরা তাদের প্রয়োজনীয় ডিজিটাল সেবা গ্রহণ করতে পারবেন। এর মধ্যে গুলশান ও উত্তরার কেন্দ্র ইতোমধ্যে কার্যক্রম শুরু করেছে; শীঘ্রই চালু হবে নীলক্ষেত কেন্দ্রটিও।

প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় এবং তত্ত্বাবধান করছে সরকারের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগ। উদ্বোধনী বক্তব্যে প্রফেসর ইউনূস বলেন, “দালালচক্রের দৌরাত্ম্য কমিয়ে নাগরিকদের হয়রানিমুক্ত সেবা নিশ্চিত করতেই এই উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এটি একটি প্রযুক্তিনির্ভর সামাজিক আন্দোলন, যার চালিকা শক্তি স্থানীয় উদ্যোক্তারা।”
তিনি জানান, উদ্যোক্তারা সংশ্লিষ্ট স্থানের মালিকদের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়ে সেবা কেন্দ্র পরিচালনা করবেন। রক্ষণাবেক্ষণ, নিরাপত্তা ও ইউটিলিটি ব্যবস্থাপনার দায়িত্বও তাদের উপর থাকবে। মান বজায় না রাখলে লাইসেন্স বাতিলের কথাও জানান তিনি।
প্রবাসীদের জন্য সেবার আওতা সম্প্রসারণে প্রবাসী সেবা কেন্দ্র তৈরির নির্দেশনাও দেন প্রধান উপদেষ্টা। সরকারের সব মন্ত্রণালয়ের সেবা এক ঠিকানায় সহজলভ্য করতে একটি জাতীয় সমন্বয় কাঠামো গঠনের প্রয়োজনীয়তার কথাও তিনি তুলে ধরেন।
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব জানান, শূন্য বাজেটে বাস্তবায়িত এই প্রকল্প দেশের অব্যবহৃত সরকারি স্থাপনাগুলোকে ব্যবহার করে আধুনিক কো-ওয়ার্কিং স্পেসে রূপান্তরের মডেল তৈরি করেছে। এতে প্রশিক্ষিত স্থানীয় উদ্যোক্তারা জাতীয় পরিচয়পত্র, পাসপোর্ট, কর ফাইলিংসহ বিভিন্ন ডিজিটাল সেবা প্রদান করবেন।
তিনি বলেন, “এই উদ্যোগ শুধু সেবা প্রদান নয়, এটি যুবসমাজ ও নারীদের জন্য অর্থনৈতিক স্বনির্ভরতার পথও খুলে দিচ্ছে। সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে পরিচালিত এই মডেল অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের প্রতিচ্ছবি।”
প্রথম ধাপে কঠোর বাছাই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ২০০ জন আবেদনকারীর মধ্যে ১০০ জন (৫০ নারী ও ৫০ পুরুষ) উদ্যোক্তাকে প্রশিক্ষণ শেষে সনদ প্রদান করা হয়েছে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন নির্বাচন কমিশনের সচিব আখতার আহমেদ, ভূমি সচিব এ এস এম সালেহ আহমেদ, আইসিটি সচিব শীষ হায়দার চৌধুরী, স্থানীয় সরকার সচিব মো. রেজাউল মাকছুদ জাহেদী, আইজিপি বাহারুল আলম, পাসপোর্ট অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. নূরুল আনোয়ার এবং জাতীয় পরিচয়পত্র অনুবিভাগের মহাপরিচালক এ এস এম হুমায়ুন কবীর।