সৈয়দ বশির আহম্মেদ,পিরোজপুর প্রতিনিধি:
পিরোজপুরের নেছারাবাদ উপজেলার বলদিয়া চামী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পরীক্ষায় কম নম্বর পাওয়ায় চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির অন্তত ১০ শিক্ষার্থীকে বেধড়ক বেত্রাঘাতের অভিযোগ উঠেছে এক সহকারী শিক্ষকের বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত শিক্ষক হলেন মো. রাসেল মাহামুদ, যিনি বিদ্যালয়টির ইংরেজি ক্লাস পরিচালনা করেন।
ঘটনার পর রবিবার (২৫ মে) সন্ধ্যায় বিদ্যালয়ের সামনে শিক্ষার্থীদের অভিভাবক ও স্থানীয়রা বিক্ষোভে ফেটে পড়েন এবং অভিযুক্ত শিক্ষকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান। শিক্ষার্থীদের কয়েকজন শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে চিকিৎসা নিয়েছে বলে অভিভাবকেরা জানান।
বালকদের ভাষ্যে: “বেত ছিল প্রতিদিনের সঙ্গী”
চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী তামান্না আক্তার অভিযোগ করে বলে,
“স্যার ক্লাসে প্রতিদিন বেত নিয়ে আসেন। আজ তো সবাইকে হুট করে পিটিয়ে দিলেন।”
পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী খাদিজা আক্তারের মা জাকিয়া বেগম বলেন,
“আমার মেয়ে ফেলও করেনি, তবু রক্তাক্ত করেছে। আমাদের সন্তানদের গায়ে হাত দেয়ার অধিকার একজন শিক্ষকের নেই। বিচার চাই।”
শিক্ষকের স্বীকারোক্তি ও অসংবেদনশীল মন্তব্য
অভিযুক্ত শিক্ষক মো. রাসেল মাহামুদ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন,
“রেজাল্ট খারাপ হওয়ায় মাথা ঠিক ছিল না। ১০-১২ জনকে একটু শাসন করেছি। মাঝে মাঝে মারলে কিছু হয় না।”
তবে তিনি পরবর্তীতে বলেন,
“আমরা প্রশিক্ষণে শিখেছি শিশুদের মারার নিয়ম নেই। সে দিক থেকে মারাটা ঠিক হয়নি।”
প্রশাসনের বক্তব্য
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোসা. শিরিন আক্তার জানান,
“আমি ছুটিতে থাকায় সরাসরি কিছু বলতে পারছি না, তবে বিষয়টি শুনেছি। আমরা অভিভাবক সমাবেশে আলোচনা করব।”
নেছারাবাদ সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার মো. গিয়াস উদ্দিন বলেন,
“বাচ্চাদের বেত্রাঘাত করার সুযোগ নেই। অভিযোগের সত্যতা পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
উদ্বেগ ও দাবি
ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে স্থানীয়রা বলেন, শিশুরা স্কুলে শিক্ষার জন্য যায়, ভয় ও নির্যাতনের শিকার হওয়ার জন্য নয়। শিক্ষক নামধারীদের হাতে শিক্ষার্থীরা বারবার এভাবে লাঞ্ছিত হলে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের মানসিক স্বাস্থ্যই বিপর্যস্ত হয়ে পড়বে।