মশার মাধ্যমেই এবার ম্যালেরিয়ার ওষুধ পৌঁছে যাবে মশার শরীরে—এমন অভিনব এক পদ্ধতি বের করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক। তারা বলছেন, মশা যখন মশারিতে বসবে, তখন সেই মশারিতে আগে থেকেই দেওয়া থাকবে ম্যালেরিয়ার বিরুদ্ধে কার্যকর দুটি ওষুধ। মশার পা বেয়ে এই ওষুধ মশার শরীরে ঢুকে পড়বে এবং তার শরীরে থাকা ম্যালেরিয়ার জীবাণু ধ্বংস করে দেবে। ফলে সেই মশা যদি কাউকে কামড়ায়, তাও আর ম্যালেরিয়া ছড়াবে না।
ম্যালেরিয়ার প্রকোপ বিশ্বজুড়ে এখনো ভয়াবহ। প্রতিবছর এই রোগে প্রাণ হারান প্রায় ছয় লাখ মানুষ, যাদের বেশিরভাগই শিশু। ম্যালেরিয়া প্রতিরোধে এখন পর্যন্ত মূলত মশা নিধনের ওপরই নির্ভর করতে হচ্ছে। কিন্তু বছরের পর বছর ধরে কীটনাশক ব্যবহারের ফলে অনেক দেশে মশারা এখন এসব ওষুধের প্রতিরোধক্ষমতা অর্জন করেছে। ফলে বিকল্প কোনো কার্যকর পদ্ধতি খুঁজে পাওয়াটা জরুরি হয়ে পড়েছিল।
গবেষকরা বলেন, এই নতুন পদ্ধতিতে মশার শরীরে থাকা ম্যালেরিয়ার পরজীবী শতভাগ নিশ্চিন্তভাবে ধ্বংস হয়। এতে মশা মরুক বা না মরুক, ম্যালেরিয়া ছড়ানোর ক্ষমতা হারায়। সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো, ম্যালেরিয়ারোধী এই ওষুধ মেশানো মশারিটি একবার ব্যবহার করলে সেটি এক বছর পর্যন্ত কার্যকর থাকবে। ফলে এটি সহজলভ্য এবং তুলনামূলকভাবে সস্তা হয়ে উঠবে সাধারণ মানুষের জন্য।
গবেষণাগারে এই পদ্ধতির কার্যকারিতা ইতিমধ্যে প্রমাণিত হয়েছে। পরবর্তী ধাপে ইথিওপিয়ায় এই বিশেষ মশারি ব্যবহার করে এর বাস্তব সফলতা যাচাই করা হবে। সব ঠিকঠাক চললে আগামী ছয় বছরের মধ্যেই এই ম্যালেরিয়ারোধী মশারি বিশ্বজুড়ে সাধারণ মানুষের নাগালে আসবে বলে আশা করছেন বিজ্ঞানীরা।