বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার শেখ হাসিনার মতো ন্যারেটিভ তৈরি করছে। তিনি বলেন, “বিগত ১৫-১৬ বছর আগে গুম হওয়া বিএনপি নেতা মো. সাজেদুল ইসলাম সুমনের বাসায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অভিযান চালাচ্ছে, অথচ সাবেক রাষ্ট্রপতি হত্যা মামলার আসামি বিমানবন্দর দিয়ে পালিয়ে যাচ্ছে—এ বিষয়ে সরকারের কোনো নজর নেই।”
শনিবার (১০ মে) রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজের ১৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, “অদ্ভুত অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এবং অদ্ভুত তাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ১৫-১৬ বছর আগে গুম হওয়া সুমনের বাসায় অভিযান চালানো হচ্ছে, অথচ খুনের মামলার আসামি পালাচ্ছে, সেদিকে দৃষ্টি নেই। সরকার কি প্রকৃত ফ্যাসিস্টদের পুনর্বাসন করছে? জনগণের মধ্যে সংশয় তৈরি হওয়া অস্বাভাবিক নয়।”
রিজভী আরও বলেন, “একটি দায়িত্বশীল নির্বাচিত সরকারের থাকলে জনগণের কাছে তাদের জবাবদিহি থাকে। কিন্তু শেখ হাসিনার সরকারের সময় ছিল না। তিনি একাধিক ন্যারেটিভ তৈরি করে গণতন্ত্র ও গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলিকে উপেক্ষা করেছিলেন।”
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, একটা দায়িত্বশীল নির্বাচিত সরকার থাকলেই জনগণের কাছে জবাবদিহি থাকে তাদের, যেটি ছিল না শেখ হাসিনার। শেখ হাসিনার উদ্দেশ্য ছিল ‘তোরা যে যাই বলিস আমি আমার ক্ষমতা ছাড়ছি না’। যার ফলে একটার পর একটা ন্যারেটিভ তৈরি করতো শেখ হাসিনা। কারণ আজীবন ক্ষমতায় থাকতে চেয়েছিলেন তিনি। গণতন্ত্র মানেননি তিনি। গণতন্ত্রের চর্চা, গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান এগুলো কোনো কিছুই কোনো ধর্তব্যের বিষয় ছিল না তার কাছে। অপপ্রচার করে নাশকতার কথা বলে, জঙ্গির কথা বলে শেখ হাসিনা এই কাজগুলো করেছে। নানাভাবে এখনো কিন্তু ন্যারেটিভ তৈরি করা হচ্ছে। তাহলে তো একইভাবে পুনরাবৃত্তি হচ্ছে শেখ হাসিনার।
তিনি বর্তমান সরকারের অব্যাহত কার্যক্রমে সঙ্গতিহীনতার অভিযোগ তুলে বলেন, “আজ যদি নির্বাচিত সরকার থাকত, তবে শাক-সবজি ও মুরগির দাম বৃদ্ধির জন্য জনগণের কাছে জবাবদিহি করতে হতো। কিন্তু এই সরকারের কোনো দায়বদ্ধতা নেই।”
এছাড়া, রিজভী নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করতে গড়িমসি করার জন্য সরকারের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ তোলেন এবং এর ফলে জনগণের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি হওয়ার কথা জানান।
তিনি বলেন, “নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা না করাটা জনগণের মধ্যে সংশয়ের সবচেয়ে বড় কারণ। এর ফলে সুমনের মতো গুম হওয়া নেতাদের পরিবারের সদস্যরা আন্দোলন করছে, অথচ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কিছুই জানে না।”
এসময় বিএনপির স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম, স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা ডা. জাহিদুল কবির, ছাত্রদল নেতা ডা. তৌহিদ আওয়াল প্রমুখও বক্তব্য দেন।