উৎফল বড়ুয়া:
আজ ৯ মে শুক্রবার ১১টায় সম্মিলিত বুদ্ধ পূর্ণিমা উদযাপন পরিষদের উদ্যোগে এক সংবাদ সম্মেলন নগরীর জামালখান রোডস্থ বাংলাদেশ বুড্ডিস্ট ফাউন্ডেশন মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন পরিষদের সভাপতি থানা শিক্ষা অফিসার রিটন কুমার বড়ুয়া। লিখিত বক্তব্যে তিনি উল্লেখ করেন- পরিষদের উদ্যোগে আগামী ১১ মে রোববার শুভ বুদ্ধ পূর্ণিমার দিন “যুদ্ধ নয় শান্তি চাই, বিশ্বশান্তি ও মানবতার জন্য সম্প্রীতি” এ প্রতিপাদ্যকে অন্তরে ধারণ করে ওই দিন সকাল ৯ টায় চট্টগ্রাম ডিসি হিল চত্ত্বর থেকে একটি বিশাল শান্তি শোভাযাত্রা/ র্যালি (এনায়েত বাজার, জুবিলী রোড, নিউমার্কেট, কোতোয়ালির মোড়, লালদীঘি, আন্দরকিল্লা, মোমিনরোড, ডিসি হিল চত্বরে গিয়ে শেষ হবে) নগরীর প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করবে। এবছর প্রায় ৬০ টি বৌদ্ধ সংগঠন নিজ নিজ ব্যানার নিয়ে শান্তি শোভাযাত্রায় অংশ গ্রহণ করবে। শান্তি শোভাযাত্রায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বিএনপির র স্থায়ী কমিটির সম্মানিত সদস্য, সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী, চট্টল গৌরব জনাব আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। শান্তি শোভাযাত্রার শুভ উদ্বোধন ঘোষণা করবেন চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সভাপতি, চিকিৎসা জগতের অন্যতম পুরোধা ব্যক্তিত্ব চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মাননীয় মেয়র জনাব ডা. শাহাদাত হোসেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন চট্টগ্রাম মেট্রাপলিটন পুলিশ’র উপ-পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ) জনাব মোঃ আলমগীর হোসেন। র্যালি প্রদক্ষিণকালে নেতৃবৃন্দ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছ থেকে পূর্ণ সহায়তা কামনা করেছেন।
লিখিত বক্তব্যে বৌদ্ধ ইতিহাস-ঐতিহ্যের সাথে সম্পর্কযুক্ত বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের দ্বীতিয় ধর্মীয় উৎসব ‘প্রবারণা পূর্ণিমা’য় সরকারি ছুটি ঘোষণা, সহ ১১ দফা দাবি সরকারের উদ্দেশ্যে তুলে ধরা হয়। উত্থাপিত দাবিগুলোর মধ্যে আছে- বৌদ্ধ কৃষ্টি, সংস্কৃতি উজ্জ্বল রাখার স্বার্থে চট্টগ্রামে ‘বুড্ডিস্ট কালচারাল সেন্টার’ স্থাপন। সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ের স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারিগন বৌদ্ধ তীর্থস্থান দর্শনের সময় নুন্যতম ১ মাস ছুটি মঞ্জুর। বাংলাদেশি বৌদ্ধদের সর্বোচ্চ ধর্মীয়গুরু মহামান্য সংঘরাজ ও মহামান্য সংঘনায়ককে রাষ্ট্রীয় মর্যাদা ও সমস্থ সুযোগ সুবিধা প্রদান। বৌদ্ধ অধ্যুষিত জেলাগুলোতে ১টি করে বৌদ্ধ ঐতিহ্য সম্বলিত সেন্ট্রাল বৌদ্ধ বিহার নির্মাণ। দেশের প্রতিটি বৌদ্ধ বিহারে নিরাপত্তা নিশ্চিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ। বিগত ২০১২ সালে সংগঠিত ভয়াবহ রামু ট্র্যাজেডিসহ অন্য সকল বৌদ্ধ বিহার ও বৌদ্ধ গ্রামে সংগঠিত ঘটনার বিচার নিশ্চিতে কমিশন গঠন। বৌদ্ধ উপসনালয়গুলোতে বিদ্যুৎ বিল মওকুফ ও অন্যান্য সেবাসমুহে ভর্তুকি প্রদান। বাংলা ভাষার উৎপত্তি ও সূতিকাগার চর্যাপদ তথা পালি ভাষার চর্চা, বিকাশ ও উৎকর্ষ সাধনে ‘পালি ভাষা শিক্ষা কেন্দ্র’ স্থাপন। দেশের সুপ্রাচীন বৌদ্ধ ঐতিহ্য ও স্থাপনাগুলোকে সংস্কার, সংরক্ষণ ও প্রতিটি বৌদ্ধ স্থাপনায় সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় ১ জন প্রধান বৌদ্ধ ভিক্ষু ও ১ জন করে সহকারি নিয়োগ প্রদান এবং দেশের প্রতিটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে বৌদ্ধ ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগের দাবি জানানো হয় ।
সংবাদ সম্মেলনে এসময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রোটারিয়ান অমরেশ বড়ুয়া চৌধুরী, প্রধান সমন্বয়কারী সরকার নিয়ন্ত্রিত বৌদ্ধ ধর্মীয় কল্যান ট্রাস্টের ট্রাস্টি যুবদল নেতা রুবেল বড়ুয়া হৃদয়, অধ্যাপক তুষার কান্তি বড়ুয়া, সাধন কান্তি বড়ুয়া, সুমন বড়ুয়া বাপ্পী, যুব নেতা সপু বড়ুয়া, অসীম কুমার বড়ুয়া, অধ্যাপক মানিক বড়ুয়া, বিকাশ কান্তি বড়ুয়া, সৌরভ চৌধুরী, লায়ন রনি কুমার বড়ুয়া, রুমা বড়ুয়া, তাপস বড়ুয়া প্রমুখ।