শাহজাহান আলী মনন, সৈয়দপুর (নীলফামারী) প্রতিনিধি
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং ২০২৪ সালের গণ-অভ্যুত্থানের প্রেক্ষিতে দায়ের করা মামলার এজাহারভুক্ত আওয়ামী লীগ নেতাদের আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম।
বৃহস্পতিবার (৮ মে) সন্ধ্যায় সৈয়দপুর বিমানবন্দরে প্রবেশের প্রাক্কালে ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড স্কুলের সামনে শিক্ষার্থীদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি উপস্থিত পুলিশ কর্মকর্তাদের এই নির্দেশনা দেন।
সেদিন বিকেলে দিনাজপুর থেকে ঢাকায় ফেরার পথে বিমানবন্দরে যাওয়ার সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের স্থানীয় নেতাকর্মীরা উপদেষ্টার গাড়িবহর থামিয়ে তাকে বিভিন্ন প্রশ্ন করেন এবং সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের দেশত্যাগে তার দায় নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। একপর্যায়ে উপদেষ্টা নিজেই গাড়ি থেকে নেমে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন।
জাহাঙ্গীর আলম বলেন, “সাবেক রাষ্ট্রপতির দেশত্যাগের বিষয়টি আমি আগে জানতাম না। বিষয়টি আমার অজান্তে ঘটেছে, তাই তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হয়নি। এতে দেশবাসীর মতো আমিও ব্যথিত। তবে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। সহযোগীদের দ্রুত চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা হবে। যদি তা করতে ব্যর্থ হই, তাহলে আমি নিজেই পদত্যাগ করব।”
সৈয়দপুরে মামলার আসামিরা প্রকাশ্যে ঘোরাফেরা করলেও গ্রেপ্তার না হওয়া প্রসঙ্গে শিক্ষার্থীদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, “তালিকাভুক্ত কেউ ছাড় পাবে না। আমি এখনই নির্দেশ দিচ্ছি—এজাহারভুক্ত সব আসামিকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তার করুন।”
প্রতিবাদে নেতৃত্ব দেন সাকিল চৌধুরী। তার সঙ্গে আরও ছিলেন আসিফ, নয়ন, মাহিন, সজিব, তৌহিদ ও সোয়েব। উপদেষ্টার আশ্বাসে সন্তুষ্ট হয়ে শিক্ষার্থীরা অবরোধ প্রত্যাহার করে বিমানবন্দর পর্যন্ত তাকে পৌঁছে দেয়।
উল্লেখ্য, গণ-অভ্যুত্থান-পরবর্তী সৈয়দপুরে দুটি মামলা হয়েছে। একটি বিএনপি অফিসে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগে পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শেখ আশিকুর রহমান বাবলু দায়ের করেছেন। অপরটি আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ শিক্ষার্থী নুর ইসলাম কর্তৃক দায়ের করা হত্যাচেষ্টা ও অস্ত্র আইনের মামলা। দুই মামলায় প্রায় ২০০ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে, যাদের অধিকাংশই আওয়ামী লীগ সংশ্লিষ্ট। এখন পর্যন্ত সন্দেহভাজন হিসেবে ৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হলেও এজাহারভুক্ত নেতৃস্থানীয় কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি।