ঢাকা কলেজের ছাত্র এবং ছাত্রদলের নেতাকর্মী আব্দুল্লাহ আল ইমরান তাঁর দৃঢ় মনোবল ও অধ্যবসায়ের অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। গুলিবিদ্ধ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায়ও তিনি অনার্স চূড়ান্ত বর্ষের পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে ঢাকা কলেজের দর্শন বিভাগ থেকে সিজিপিএ ২.৯৪ পেয়ে স্নাতক সম্পন্ন করেছেন।
গত ১৯ জুলাই রাজধানীর বিজয়নগরে ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান’ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণের সময় গুলিবিদ্ধ হন ইমরান। তাঁর হাঁটুর উপর দিয়ে গুলি ছিদ্র করে বেরিয়ে গেলে হাঁড়ের ৬ ইঞ্চি অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এরপর থেকে তিনি হাসপাতালে ভর্তি থাকেন এবং এখন পর্যন্ত তাঁর শরীরে মোট ২৪ বার অস্ত্রোপচার হয়েছে।
তবে এই শারীরিক দুর্ভোগ ইমরানের শিক্ষাজীবনে ছেদ ফেলতে পারেনি। হাসপাতালের বেডেই তিনি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন, বই পড়ে প্রস্তুতি নেন এবং ফলাফলে প্রমাণ করেন—সত্যিকার অর্থে চেষ্টা ও মানসিক দৃঢ়তা সব বাধা পেরিয়ে যেতে পারে।
ইমরান বর্তমানে ঢাকা কলেজ ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষে দর্শন বিভাগে ভর্তি হয়েছিলেন। তাঁর এই অর্জনে শিক্ষক, সহপাঠী ও রাজনৈতিক সহযোদ্ধারা তাঁকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।
ইমরানের ভাষ্য, “আমি যখন হাসপাতালের বেডে পড়াশোনা করছিলাম, তখনও মনে হতো জীবন থেমে থাকেনি। রাজপথে গুলি খেয়েছি, কিন্তু পড়াশোনার প্রতি ভালোবাসা আমাকে শক্তি জুগিয়েছে।”
এ ধরনের ছাত্রনেতা ও শিক্ষার্থীর সংকল্প ও আত্মত্যাগ দেশের তরুণ সমাজের জন্য অনুকরণীয় উদাহরণ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।