দীর্ঘ ১৭ বছর পর দেশে ফিরেছেন ডা. জোবাইদা রহমান। স্বামী বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে ২০০৮ সালে যুক্তরাজ্যে পাড়ি জমিয়েছিলেন তিনি। তার প্রত্যাবর্তনকে ঘিরে রাজধানীর ধানমন্ডির ৫ নম্বর সড়কে অবস্থিত পিত্রালয় ‘মাহবুব ভবন' নতুনভাবে সাজানো হয়েছে। বাড়িটির নিরাপত্তা ও তার ব্যক্তিগত স্বাচ্ছন্দ্য নিশ্চিতে নেওয়া হয়েছে বিশেষ ব্যবস্থা।
তারেক রহমানের আগে জোবাইদা রহমানের আগমন ঘিরে অনেকের মাঝে কৌতুহল দেখা দিয়েছে। এটি কি নিছক শাশুড়ি খালেদা জিয়ার সঙ্গী হওয়া? নাকি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মা সৈয়দা ইকবাল মান্দ বানুর পাশে থাকা? তবে বহুবছর ধরে তার বিএনপিতে সক্রিয় হওয়ার যে গুঞ্জণ ছিল, তা নিয়ে সবচেয়ে বেশি আলোচনা হচ্ছে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমদ বলেছেন, সিলেট অঞ্চলে জোবাইদা রহমানের অনেক জনপ্রিয়তা রয়েছে। তবে তিনি রাজনীতি আসবেন কি না তা আমার জানা নেই। তিনি যদি রাজনীতি আসতে চান তাহলে স্বাগত জানাবো।
ডা. জোবাইদা রহমান রাজনীতিতে সরাসরি যুক্ত হলে, তা কি নতুন রাজনৈতিক সমীকরণ তৈরি করবে?
এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সাব্বীর আহমেদ বলেন, জোবাইদা রহমান দীর্ঘদিন রাজনৈতিক পরিবারের সাথে ছিলেন। ফলে তার রাজনৈতিক পরিপক্বতা এসেছে ও রাজনীতি শিখেছেন। ফলে রাজনীতি করা তার জন্য কঠিন কিছু হবে না।
তিনি আরও বলেন, জোবাইদা রহমান রাজনীতি আসলে বিএনপির জন্য ভালো হবে। কেন্দ্রীয় নেতার অভাবে এতোদিন বিএনপির মধ্যে একটা নৈতিক শূণ্যতা ছিল, সেটি তিনি অনেকাংশেই পূরণ করতে সক্ষম হবে বলে মনে করি। এতে দলটির নৈতিক শক্তি ও জনপ্রিয়তা বাড়বে।
ডা. জোবাইদার দেশে ফেরার খবরে ঢাকার ধানমন্ডির ৫ নম্বর সড়কের ‘মাহবুব ভবন’-এ গত কদিন ধরেই চলছিল সাজসজ্জা আর গোছগাছের কাজ। এটি তার বাবা সাবেক নৌবাহিনী প্রধান রিয়াল অ্যাডমিরাল মাহবুব আলী খানের বাসভবন। তিনি বাবার ধানমন্ডির এই বাড়িতেই উঠবেন।
বাড়িটিতে বর্তমানে মাহবুব আলী খানের স্ত্রী সৈয়দা ইকবাল মান্দ বানু এবং বড় মেয়ে শাহীনা জামান ও তার পরিবারের সদস্যরা থাকেন। সৈয়দা ইকবাল মান্দ বানু সম্প্রতি রাজধানীর একটি হাসপাতালে ভর্তি হন।
১৭ বছর আগে ২০০৮ সালের ১১ সেপ্টেম্বর তারেক রহমানের সঙ্গে দেশ ছেড়েছিলেন জোবাইদা রহমান।
ওয়ান ইলেভেনের পর জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ২০০৮ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর তারেক রহমান, জোবাইদা রহমান ও ইকবাল মান্দ বানুর বিরুদ্ধে রাজধানীর কাফরুল থানায় একটি মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন। ওই মামলায় জুবাইদা রহমানকে তিন বছরের কারাদণ্ড ও ৩৫ লাখ টাকা অর্থদণ্ড দেয় ঢাকার একটি আদালত।
সিলেটে জন্ম নেওয়া জোবাইদা ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস সম্পন্ন করে ১৯৯৫ সালে বিসিএস পরীক্ষায় স্বাস্থ্য ক্যাডারে প্রথম স্থান অধিকার করে সরকারি চিকিৎসক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। ২০০৮ সালে শিক্ষা ছুটি নিয়ে লন্ডন যাওয়া পর সরকার তাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করে। পরে তিনি সেখানকার ইম্পেরিয়াল কলেজ থেকে মেডিসিনে এমএসসি ডিগ্রি নেন।