📍 শরীয়তপুর প্রতিনিধি |
এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে কর্মস্থলে অনুপস্থিত রয়েছেন জুলাই ২০২৩ গণঅভ্যুত্থানের সময় ঘটে যাওয়া এক হত্যা মামলার আসামি, শরীয়তপুরের পালং মডেল থানার তদন্ত পরিদর্শক মো. মাসুদুর রহমান। ধারণা করা হচ্ছে, তিনি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে দায়ের করা মামলায় গ্রেপ্তার এড়াতে আত্মগোপনে গেছেন।
পালং থানার সহকর্মীরা জানান, মাসুদুর রহমান গত ২৪ এপ্রিল থেকে কর্মস্থলে আসেননি। তাঁর ব্যবহৃত কক্ষ তালাবদ্ধ এবং ব্যক্তিগত ও সরকারি ফোন নম্বর উভয়ই বন্ধ There is.
📌 কী মামলায় আসামি?
গত বছরের ৫ আগস্ট, ঢাকার আশুলিয়ায় ছয় যুবককে নৃশংসভাবে হত্যা করে তাঁদের লাশ পুলিশ ভ্যানে পুড়িয়ে দেওয়া হয়—এমন অভিযোগে দায়ের হওয়া একটি মামলায় মাসুদুরকে অন্যতম আসামি করা হয়। মামলার বাদীপক্ষ দাবি করে, ঘটনাটি ছিল রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত গণহত্যা, যার নেপথ্যে ছিলেন ক্ষমতাচ্যুত সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের ব্যক্তিরা।
মাসুদুর রহমান তখন আশুলিয়া থানায় পরিদর্শক (তদন্ত) পদে দায়িত্বে ছিলেন। মামলায় তাঁকে সহযোগী ও প্রত্যক্ষ ভূমিকা পালনকারী হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।
এই মামলাটি ২৯ এপ্রিল আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের কার্যতালিকায় দ্বিতীয় নম্বরে ছিল। ওই দিন তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের দিন নির্ধারিত থাকলেও, পরে তা পিছিয়ে দেওয়া হয়।

🚨 প্রশাসনিক প্রতিক্রিয়া
শরীয়তপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গোসাইরহাট সার্কেল) মো. নজরুল ইসলাম গণমাধ্যমকে জানান:
“পরিদর্শক মাসুদুর ১০ দিন ধরে কর্মস্থলে অনুপস্থিত। বিষয়টি পুলিশ হেডকোয়ার্টারে প্রতিবেদন আকারে পাঠানো হয়েছে।”
পালং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হেলাল উদ্দিন বলেন:
“তিনি যাওয়ার সময় বলেছিলেন, তাঁর মা অসুস্থ। কিন্তু এরপর আর কোনো যোগাযোগ নেই। তাঁর অবস্থান সম্পর্কে আমরা অজ্ঞাত।”
❗ আত্মগোপন না নিখোঁজ?
পরিদর্শক মাসুদুর রহমানের আচরণ ও ফোন বন্ধ থাকার বিষয়গুলো বিচার করলে অনেকেই মনে করছেন, তিনি আইনগত জবাবদিহিতা এড়ানোর জন্য আত্মগোপনে চলে গেছেন। বিশেষ করে মামলাটির রাজনৈতিক ও আন্তর্জাতিক গুরুত্ব বিবেচনায় তাঁর অবস্থান এখন প্রশাসনের জন্যও বিব্রতকর।
এছাড়া, একাধিক সূত্র জানায়, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলোর নজর রয়েছে এই মামলার ওপর। ফলে আসামিদের অনুপস্থিতি আন্তর্জাতিকভাবে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করতে পারে।
📝 প্রেক্ষাপট ও গুরুত্ব
এই ঘটনাটি শুধু একজন পুলিশ কর্মকর্তার অনুপস্থিতি নয়; বরং এটি একটি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অপরাধ তদন্তের অংশ, যেখানে অভিযোগ উঠেছে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার অপব্যবহার, গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের বিরুদ্ধে। এই প্রেক্ষাপটে একজন অভিযুক্ত কর্মকর্তার পলায়ন কিংবা গোপন থাকা ন্যায়বিচার ও স্বচ্ছতা নিশ্চিতকরণের পথে এক বড় বাধা.
👉 আগামীদিনে মামলার তদন্ত কীভাবে এগোয়, এবং মাসুদুর রহমানের অবস্থান শনাক্ত করে তাঁকে আইনের আওতায় আনা সম্ভব হয় কি না—তা দেখার বিষয়।