সম্প্রতি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেছেন রাখাইন রাজ্যে মানবিক সহায়তা সরবরাহের জন্য “মানবিক করিডোর” দেয়ার ব্যাপারে সরকার নীতিগতভাবে সম্মত হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে গনতন্ত্র মঞ্চের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ যৌথ বিবৃতি দিয়েছেন। বিবৃতিতে সই করেছেন এই জোটের শরিক নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, ভাসানী জনশক্তি পার্টির চেয়ারম্যান ও গনতন্ত্র মঞ্চের সমন্বয়ক শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ূম ও জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন।
যৌথ বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, বাংলাদেশ ইতিমধ্যে রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে জটিল আবর্তে ঘুরপাক খাচ্ছে। এই সংকটের সুদূরপ্রসারী প্রভাব রয়েছে। মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে মানবিক করিডর দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে এ বিষয়ে আলাপ–আলোচনা ও ঐকমত্য জরুরি। মানবিক সহায়তা করিডরের সঙ্গে জাতীয় সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তা জড়িত। দেশের স্বাধীনতা–সার্বভৌমত্বের সঙ্গে জড়িত এমন একটি স্পর্শকাতর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার জনগণকে জানায়নি। এমনকি জনগণের প্রতিনিধিত্বকারী রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গেও কোনো আলোচনা করার প্রয়োজন বোধ করেনি।
গনতন্ত্র মঞ্চ দীর্ঘদিন বাংলাদেশে গনতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত করতে লড়াই সংগ্রাম করে যাচ্ছে। বিগত স্বৈরাচার সরকার একক সিদ্ধান্তে রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে আশ্রয় দেয় এবং বর্তমানে প্রায় ১৫ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে বসবাস করছে। যার কারনে নিরাপত্তা সহ সামাজিক নানা সমস্যায় জর্জরিত বাংলাদেশ। সংবাদমাধ্যমের বরাতে আমরা জানলাম মিয়ানমার সরকার ১ম দফায় ১ লাখ ৮০ হাজার রোহিঙ্গা ফেরত নিতে সম্মত হয়েছে। তবে এরপরই ইতোমধ্যে আরও ১ লাখ ১৩ হাজার রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের কথা শোনা যাচ্ছে। এতে করে সমস্যা আরও বাড়বে বলে আমরা আশঙ্কা করছি। আমরা মনে করি অনেক ত্যাগের বিনিময়ে ৫ আগষ্ট যে নতুন বাংলাদেশের সূচনা হয়েছে সেটি গনতান্ত্রিক, জবাবদিহিতামূলক ও স্বচ্ছতার হবে। সকল রাজনৈতিক দলের সাথে আলোচনার মাধ্যমে রাষ্ট্রের সকল সিদ্ধান্ত নেয়া উচিৎ। আমরা আশা করি যেখানে আমাদের জাতীয় নিরাপত্তা জড়িত সেখানে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার একক সিদ্ধান্ত না নিয়ে সকল রাজনৈতিক দলের সাথে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবে। দেশের নিরাপত্তা সবার আগে তাই স্পর্শকাতর এই বিষয়ে আলোচনার মাধ্যমে সরকার সিদ্ধান্ত নেবে বলে গনতন্ত্র মঞ্চ বিশ্বাস করে।