Muhammad Al-Helal
৩ রা মে বিশ্ব মুক্ত বা স্বাধীন গণমাধ্যম দিবস। অনেক দিন ধরে গনমাধ্যমের স্বাধীনতা বিষয়ে কিছু কথা অন্তরে গেঁথে আছে প্রকাশ করব করব ভাবি কিন্তু করা হয়না।
কোন গনমাধ্যমের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত নই। তবে সমাজের অসঙ্গতি নিয়ে না লিখলে কষ্ট লাগে তাই অসঙ্গতি গুলো নিয়ে মাঝে মধ্যে কলাম লিখি এবং সেগুলো মিডিয়ায় ই-মেইল এর মাধ্যমে পাঠাই।
সেগুলোর মধ্য থেকে যেটি মিডিয়াগুলোর পলিসির সাথে এডজাস্ট করে সেগুলো প্রকাশ করে। আবার কখনো মিডিয়ার সম্পাদকীয় বিভাগ থেকে জানানো হয় আপনি নতুন আইডিয়া নিয়ে লিখেছেন। আপনার মতামতটি সঠিক। এই মতামতটি বিতর্ক তৈরি করবে। আমাদের পলিসির কারণে আমরা আপনার এই মতামতটি প্রকাশ করতে পারছিনা। তারা প্রকাশ না করলেও আমি সেই লেখাগুলোর সমন্বয়ে আবার বই আকারে প্রকাশ করার চেষ্টা করি।
মিডিয়া, সংবাদমাধ্যম বা গনমাধ্যম যাই বলি না কেন এধরনের প্রতিষ্ঠানের কাজ হলো কোন বিশেষ খবর, বিশেষ আইডিয়া বিকৃত না করে নিজস্ব মতামত প্রকাশ ব্যতিত পাঠকদের নিকট পৌঁছে দেওয়া যেন পাঠক প্রকৃত বিষয় জেনে স্বাধীন মতামত প্রকাশ করতে পারে। এ বিষয়ে পবিত্র কুরআনে মহান আল্লাহ তুলে ধরে ঘোষণা করেন-
وَ لَا تَلۡبِسُوا الۡحَقَّ بِالۡبَاطِلِ وَ تَکۡتُمُوا الۡحَقَّ وَ اَنۡتُمۡ تَعۡلَمُوۡنَ
‘তোমরা সত্যকে মিথ্যের সাথে মিশ্রিত করো না এবং জেনে শুনে সত্য গোপন করো না।’ (সুরা বাকারা : আয়াত ৪২)
মিডিয়ার কাজ নয় কোন খবর বা মতামতকে বিশেষ কোন ব্যক্তি, দল বা দেশের পক্ষে প্রকাশ করার চেষ্টা করে রিপোর্টার, লেখক, সাংবাদিক, কলামিস্ট বা পাঠকদের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করা। অথচ তারা খবর বা মতামতগুলো প্রকৃত রূপে যেমন ছিল তা পরিবর্তন করে নিজস্ব স্টাইলে প্রকাশ করে তাদের সাথে সংশ্লিষ্ট সকলের স্বাধীনতা সবচেয়ে বেশি হরন করে।
মিডিয়াগুলোর তো বিশেষ কোন ব্যক্তি, দল বা দেশ পন্থী হওয়া বাঞ্ছনীয় নয়। কোন রিপোর্ট বা সংবাদ যদি কোন সংবাদ মাধ্যম বা গনমাধ্যমের বিরুদ্ধে হয় সেটি প্রকাশ করাও ঐ সংবাদ মাধ্যম বা গনমাধ্যমের দায়িত্বের অন্তর্ভুক্ত। তবে আমার এই মতামত কোন গনমাধ্যম প্রকাশ করবে কিনা সেটি নিয়ে আমি সন্দিহান। যদি কোন সংবাদ মাধ্যম বা গনমাধ্যমে প্রকাশিত হয় তাহলে তারা নিশ্চয়ই স্বাধীন গণমাধ্যম হিসাবে অগ্রগামী। তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা আমাদের কর্তব্য।
সম্প্রতি কয়েকটি গনমাধ্যম বন্ধ করার জন্য মিছিল, সমাবেশ করে সরকারের নিকট আবেদন জানানো হয়েছে জনগণের পক্ষ থেকে। মিছিল, সমাবেশ বা কোন চাপের কারণে রাষ্ট্রীয় নির্বাহী আদেশে কোন গনমাধ্যমের বন্ধ বা মৃত্যু হওয়া কাম্য নয়।
তবে জন প্রত্যাশা পূরণ করতে ব্যর্থ হলে গনমাধ্যম হোক বা যে কোন প্রতিষ্ঠান হোক সেটির মৃত্যু স্বয়ংক্রিয়ভাবে অবধারিত।
শুধু ঐ গনমাধ্যমেগুলো নয় এদেশের অধিকাংশ গনমাধ্যম বন্ধ হোক বা না হোক অনেক আগেই অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা না করা এবং শুধু ইভেন্ট কাভার করার কারণে দেওলিয়া হয়ে গেছে। সঙ্গত কারণে তারা সঠিকভাবে শিরোনাম দিতেও ভয় পায় বা দিতে অক্ষম। যেটি পাঠকদের সাথে প্রতারণা এবং গনমাধ্যম নীতি পরিপন্থী।
শিরোনাম বলতে আমরা বুঝি সম্পূর্ণ খবরের একটি সংক্ষিপ্ত নাম যেটির মাধ্যমে খবরের মধ্যে কি আছে সে সম্পর্কে একটি ধারণা পাওয়া যায়। গনমাধ্যমগুলো প্রকৃত শিরোনাম ব্যবহার না করে ভিন্ন শিরোনাম ব্যবহার করার কারণে পাঠক অনেক সময় মনে করেন উক্ত সংবাদটি তার জানা প্রয়োজন। সংবাদটি সময় নষ্ট করে পড়ার বা দেখার পর পাঠক বুঝতে পারে এটি শিরোনামের কারনে তাকে আকর্ষণ করলেও সংবাদটি তার প্রয়োজন নেই বা সংবাদের ভিতর ভিন্ন খবর। সকল খবর সকল পাঠকের জানা প্রয়োজন হয়না। কিন্তু প্রকৃত শিরোনামের পরিবর্তে ভিন্ন শিরোনামের কারণে পাঠককে অপ্রয়োজনীয় খবরের জন্য সময় নষ্ট করতে হয়। এটি পাঠকের সাথে স্পষ্ট প্রতারনা। কয়েকজন অধিক অভিজ্ঞতা সম্পন্ন সম্পাদক এবং কয়েকটি পূরনো গনমাধ্যমের শিরোনাম দেখলে আমাদের এরকম প্রতারণার বিষয়ে ধারণা পেতে সহায়ক হবে।
”ক্যান্সারে আক্রান্ত শেখ হাসিনা! যা জানা গেল”
(০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫) ইনভার্টেড কমার মধ্যে উদ্বৃতাংশটুকু প্রথম বন্ধনীর মধ্যে উল্লেখিত তারিখে প্রকাশিত একটি গনমাধ্যমের শিরোনাম। উক্ত শিরোনামের অধীনে প্রকাশিত খবরের কিছু অংশ হলো:
প্রাণঘাতী ক্যান্সারে আক্রান্ত ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই অবস্থায় তার কোনো রাজনৈতিক আশা আকাঙ্ক্ষা নেই। যতদিন বেঁচে থাকবেন রাজনীতি ছেড়ে পরকালের পাথেয় জোগাড় করতে চান তিনি।এছাড়াও এই শিরোনামের মধ্যে আরও কিছু বিষয় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। এখানে খবরের যতটুকু শিরোনাম তুলে ধরা হয়েছে তার জন্য একটি উপযুক্ত শিরোনাম হতে পারত ‘ক্যান্সারে আক্রান্ত শেখ হাসিনার রাজনৈতিক আকাঙ্ক্ষার অবসান’।
”ফিলিং স্টেশনে গ্যাস সংকটের কারণ হিসেবে যা জানা গেল” (৩০ এপ্রিল ২০২৫)
এটি অন্য একটি গনমাধ্যমের শিরোনাম। এই শিরোনামের মাধ্যমেও পাঠকের সাথে প্রতারণা করা হয়েছে। এই খবরের সূচনা দেখে মনে হচ্ছে এটির জন্য ভালো শিরোনাম হতে পারে ‘গ্যাসের জাতীয় সঞ্চালন লাইনে সংকটের কারণে ফিলিং স্টেশনে গ্যাসের সংকট’
শিরোনামটির অধীনে প্রকাশিত খবরের কিছু অংশ তুলে ধরা হলো: গ্যাসের জাতীয় সঞ্চালন লাইনে সংকটের কারণে ঢাকার সিএনজি ফিলিং স্টেশনগুলোতে বিঘ্নিত হচ্ছে গ্যাস সরবরাহ।
নিম্নে আরেকটি গনমাধ্যমের শিরোনাম। শিরোনামের দ্বিতীয় অংশ অস্পষ্ট। প্রতারনার মাধ্যমে পাঠককে খবরে যুক্ত করার অপপ্রয়াস।
”পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক শেষে যা বললেন পিটার হাস” (১৭ জানুয়ারি ২০২৪)
বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ককে আরও এগিয়ে নিতে ভবিষ্যতে একসঙ্গে কাজ করবেন বলে জানিয়েছেন ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস। আজ বুধবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি এই কথা জানান। বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ককে আরও এগিয়ে নিতে ভবিষ্যতে একসঙ্গে কাজ করবেন। ‘পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পিটার হাঁস বৈঠক: বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক উন্নয়নে একসঙ্গে কাজ’ এই সংবাদের জন্য এমন একটি শিরোনাম দেওয়া যেত।
কিছু দিন আগে দেশের আলোচিত সমালোচিত একটি গনমাধ্যমের বর্ষপূর্তি পালিত হলো। যদিও বিশ্বের অন্যান্য দেশে গনমাধ্যমের এভাবে প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালন করতে দেখা যায় না। অবশ্য এর কারণও আছে আমাদের দেশের গনমাধ্যমের কর্মিরা সাংবাদিক হয়ে উঠতে পারেনি বরং গনমাধ্যমের প্রতিনিধি বা প্রতিবেদক হয়েছে। তাই অনুসন্ধানী প্রতিবেদন তৈরি করার সক্ষমতা বা মন মানসিকতার অভাব রয়েছে।
সুতরাং গনমাধ্যমের কর্মিদের নিউজ করার জন্য হলেও এধরনের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী আমাদের দেশে অহরহ হয়। এটি আজকের আলোচ্য বিষয় নয়। উক্ত গনমাধ্যমের সম্পাদক তার গনমাধ্যমের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীতে একটি নিবন্ধ প্রকাশ করেছেন। সেখানে তিনি লিখেছেন তার সাংবাদিকতার পঞ্চাশ বছর বা পঞ্চাশ বছরের অভিজ্ঞতার কথা।
অভিজ্ঞতার পঞ্চাশ বছর বা অধিক অভিজ্ঞতার বিষয়ে আমার তিক্ত অভিজ্ঞতা আছে। এমন কথা শুনলে গায়ের মধ্যে শিহরণ দিয়ে উঠে এবং আমার সেই তিক্ত অভিজ্ঞতার আলোকে আশঙ্কা হয় এই পঞ্চাশ বছরের অভিজ্ঞতার সম্পাদকের হাতেই এই গনমাধ্যমটির মৃত্যু হয় কিনা?
ইতোমধ্যে এই গনমাধ্যমটিও বন্ধ করার জন্য বিভিন্ন মিছিল, সমাবেশ বা জনগণের পক্ষ থেকে সরকারের নিকট আবেদন জোরালো হয়ে উঠেছে।
গনমাধ্যমটির সত্যিই মৃত্যু ঘটছে বা ঘটবে কিনা সেটি সময় বলে দিবে। পঞ্চাশ বছরের অভিজ্ঞতা বা অভিজ্ঞতার বিষয়ে যে তিক্ত অভিজ্ঞতা রয়েছে সেটি একটু আলোকপাত করা যাক।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জনপ্রশাসন বিষয়ক উপদেষ্টা ছিলেন এইচ টি ইমাম। তিনি ২০১৪ সালের ৫ ই জানুয়ারির শেখ হাসিনার সরকার কর্তৃক আয়োজিত একদলীয় নির্বাচনের সফল বাস্তবায়ন বিষয়ে ছাত্রলীগের সদস্যদের লক্ষ্য করে বলেছিলেন ৫ ই জানুয়ারির নির্বাচনের বিষয়টি তোমরা দেখ। আমরা তোমাদের সরকারি চাকরির বিষয়টি দেখব।
সরকারি নিয়োগ প্রক্রিয়ায় প্রকাশ্যে এমন দলীয়করণের বিষয়ে সাবেক বিপিএসসির চেয়ারম্যান সাদাত হুসাইন কে কোন এক টিভি চ্যানেলের অনুষ্ঠানে সঞ্চালক জিজ্ঞেস করছিলেন যে দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতার একজন আমলার এরকম বক্তব্য প্রকাশ্যে দেওয়া কতটা সমীচিন? তখন সাবেক বিপিএসসির চেয়ারম্যান সাদাত হুসাইন বলছিলেন স্যারের জনপ্রশাসনে দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতা রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে কাজ করতে করতে স্যার হয়তো ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেছেন বা ত্যাক্ত বিরক্ত হয়ে গেছেন। প্রকাশ্যে দলীয়করণের কথা স্বীকার করা ন্যায় অন্যায় যাই হোক তৎকালীন নিয়োগ প্রক্রিয়ার অভ্যন্তরীণ বিষয়ে জনগণ আঁচ করতে পেরেছে ঠিকভাবে।
বাংলাদেশের তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং দীর্ঘদিন জাতিসংঘের বাংলাদেশ প্রতিনিধি হিসাবে কাজ করা অভিজ্ঞ কূটনৈতিক আব্দুল মোমেন বলেছিলেন বাংলাদেশ আর ভারতের মধ্যে স্বামী স্ত্রীর সম্পর্ক। যদিও তিনি খোলাসা করেননি কে স্বামী আর কে স্ত্রী। এই অভিজ্ঞ কূটনৈতিকের এমন বক্তব্য নিয়ে এদেশে এখনও ট্রল চলমান। অধিক অভিজ্ঞতা এই কুটনৈতিকের জন্যও ট্রল বয়ে এনেছে।
২০২৪ সালের জুলাই মাসে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চীন সফরের আগে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বুধবার (৩ জুলাই) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস অ্যাকাডেমিতে অ্যাকাডেমির জার্নাল, স্মার্ট লাইব্রেরি ও ওয়েবসাইট উদ্বোধন শেষে বলেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারত সফর সম্পন্ন করেছেন। ভারতের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীর চীন সফরে আর কোন বাধা নেই।
(তথ্যসূত্র: জুলাই ০৩, ২০২৪; দৈনিক ইনকিলাব) এটি বলার পর সাধারণ মানুষ এমন অভিজ্ঞ একজন পররাষ্ট্র মন্ত্রীর আক্কেল জ্ঞান নিয়েও সমালোচনা করে।
২০২৪ সালের সংসদ নির্বাচন সম্পর্কে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন ভারত শেখ হাসিনাকে আবারও ক্ষমতায় বসাবে এটি আমাদের সাথে তলে তলে ঠিক হয়ে গেছে। দীর্ঘ দিনের অভিজ্ঞ রাজনীতিবীদ ওবায়দুল কাদেরের শুধু এই কথাটিই নয় অসংখ্য কথা ট্রলের স্বীকার হয়েছে সেটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম প্রবেশ করলেই অনুমেয়।
একটি বেসরকারি সংস্থার নিয়োগ বোর্ডে মানবসম্পদ উন্নয়ন বিভাগের নির্বাহী হিসাবে থাকতে হয়েছিল। নিয়োগ বোর্ডের অন্যান্য সদস্যদের মধ্যে ছিলেন হিসাব এবং অর্থায়ন বিভাগের ব্যবস্থাপক। বিপনন বিভাগের ব্যবস্থাপক যিনি ছিলেন দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞ এবং নিয়োগ বোর্ড সদস্যদের মধ্যে সর্বজেষ্ঠ আর আমি ছিলাম সর্বকনিষ্ঠ।
ইন্টারভিউ প্রক্রিয়ায় মার্কস প্রদানের পর এবং ফলাফল প্রকাশের পূর্বে দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞ বিপনন ব্যবস্থাপক বলছিলেন যারা নিজেরা শিক্ষাজীবনে মার্কস বেশি পেয়েছেন তাঁরাই শুধু কর্মজীবনে মানুষকে বেশি মূল্যায়ন করতে পারেন বা বেশি মার্কস দিতে পারেন।
ফলাফল প্রকাশ করার পর দেখা গেল দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞ বিপণন ব্যবস্থাপকের প্রদত্ত মার্কস শতকরা ৭০-৭৫ ভাগ আর আমার প্রদত্ত মার্কস ছিল ৮০-৯০ ভাগ। তিনি দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতার আলোকে অনুমান করেছিলেন শিক্ষা জীবনে তার প্রাপ্য এবং এই নিয়োগ প্রক্রিয়ায় তার প্রদত্ত মার্কসই হবে সর্বাপেক্ষা বেশি। কিন্তু সেই অভিজ্ঞতার আলোকে অনুমান করাটি ছিল ভুল।
নোট গাইড প্রস্তুত করার একটি প্রতিষ্ঠানে কিছু দিন কাজ করেছিলাম। এটা অবশ্যই মেধা ধ্বংস করার প্রতিষ্ঠান। তবুও সরকারের একটি নির্দিষ্ট মহল জাতির ক্ষতি করে নিজেদের ব্যক্তিগত স্বার্থ কে হাসিল করার জন্য এগুলো জিয়িয়ে রেখেছেন।
সেখানে দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতা সম্পন্ন লোক ছিলেন যারা দীর্ঘদিন ধরে বিবিএ(অনার্স) শব্দটি লিখতেন। পরে আমার গোচরিভূত হলে আমি অনার্স শব্দটি নির্মূল করার উদ্যোগ গ্রহণ করি। যদিও সংশ্লিষ্ট অভিজ্ঞ ব্যক্তিবর্গরা
করার অন্তর্ভূক্ত ছিলেন। তথ্যসূত্র: (অক্টোবর ০৪, ২০২৩; দ্য ডেইলি ক্যাম্পাস)
শান্তিতে নোবেল বিজয়ী বিশ্ব বিখ্যাত গবেষক ড. প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস এর অন্তবর্তীকালীন সরকারের কাছে আহ্বান থাকবে সেক্টরটি সমূলে উৎপাটন করার জন্য।
ভারত-পাকিস্তান বিভক্তির মাত্র দুই বছর পরে ১৯৪৭ সালে জন্ম হয় বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের। ১৯৮১ সালে দলটির হাল ধরেন শেখ হাসিনা। প্রায় ৪৫ বছর ধরে দলের প্রধান এবং প্রায় ২০ বছর ধরে সরকার প্রধানের দায়িত্ব পালন করা বিশাল অভিজ্ঞতা নিয়ে অবশেষে গন অভ্যুত্থানের মাধ্যমে জীবন হারানোর ভয়ে ভারতে আশ্রয় গ্রহণ করেন। শতশত আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বিপদের মধ্যে আর দলকে মৃত্যুর মুখে ফেলে দিয়ে নিজের পরিবারের সদস্যদের নিয়ে পালিয়েছেন।
পঞ্চাশ বছরের দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতার কথা গায়ে শিহরণ দিয়ে উঠা ঘটনাটি দিয়ে শেষ করতে চাই। ২০১৯ সালে আমার স্ত্রীর দ্বিতীয় সন্তান প্রসবের সম্ভাব্য সময়ের পূর্বে তার নানীকে জিজ্ঞেস করেছিলাম সন্তান প্রসব আমাদের করনীয় সম্পর্কে। তিনি অভয় দিয়ে বলেছিলেন তুমি কোন চিন্তা করোনা। আমি ৫০/৬০ বছর ধরে ধাত্রীর কাজ করি। আমার নাতনীর সন্তান প্রসবের বিষয়ে যা করতে হয় আমিই করব। দ্বিতীয় কন্যা সন্তান পৃথিবীতে আসল সহীহ সালামতে তদ্বাধি কোন অসুবিধা হয়নি। তারপর তিনি কি যেনো করলেন যে আমার স্ত্রী সঙ্গে সঙ্গে বলে উঠছিলেন “ও নানি তুই আমার এ কি (সর্বনাশ) করলি?”
তারপর প্রচুর রক্তক্ষরণ হয় এবং স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে চিকিৎসা শুরুর কিছুক্ষণ পর আমার স্ত্রী দুটি কন্যা সন্তান রেখে দুনিয়ার সফর শেষ করেন। তৎপর্বর্তীতে আমি কন্যা সন্তান দুটির মা ও বাবা।
নানি কি করেছিলেন সে বিষয়ে আমাকে কিছু না জানালেও আমি জানতে পেরেছি বিভিন্ন মাধ্যমে বা স্ত্রীর ছোট বোনের কাছে যে কোন বড় ধরনের ক্ষতি তিনি করে ফেলেছিলেন। তারপর থেকে বেশি অভিজ্ঞতার কথা শুনলেই আমার গায়ের মধ্যে শিহরণ দিয়ে উঠে।
অভিজ্ঞতা যে অনেক সময় অপ্রাসঙ্গিক তা ২০২৪ সালের জুলাই বিপ্লবের দিকে লক্ষ্য করলেও স্পষ্ট। কেননা এদেশের মাটিতে দীর্ঘদিন ধরে রাজনীতি করা অধিক অভিজ্ঞতা সম্পন্ন রাজনৈতিক দলগুলো প্রায় ১৫ বছর ধরে আন্দোলন করে শেখ হাসিনার সরকার উৎখাত করতে পারেনি। তবে রাজনৈতিক অভিজ্ঞতাহীন বৈষম্য বিরোধীমঞ্চ অল্প দিনের মধ্যেই সেটি খুব ভালোভাবেই করতে পেরেছে।
অভিজ্ঞতা যে কোন কাজের জন্য ভালো তবে অধিক অভিজ্ঞতা শুধু মুক্ত বা স্বাধীন গণমাধ্যম নয় যে কেন বিষয়ের জন্য যেন কাল না হয় সেদিকে আমাদের লক্ষ্য করা যেমন জরুরি অনাভিজ্ঞ বা কম অভিজ্ঞতাও আমাদের জন্য কল্যান বয়ে আনতে পারে সেটিও মনে রাখতে হবে।
MPhil Researcher (ABD)
Department of International Relations
Dhaka University