ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যকার চলমান উত্তেজনার পরিস্থিতি ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করছে চীন। এই প্রেক্ষাপটে পাকিস্তানের উপ-প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দারের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছেন চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই। দুই দেশের মধ্যে কৌশলগত অংশীদারিত্বের বিষয়টি পুনর্ব্যক্ত করা হয় এই আলোচনায়।
এদিকে, বৃহস্পতিবার লাহোরে অনুষ্ঠিত এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে চীনের পক্ষ থেকে প্রকাশ্যভাবে পাকিস্তানের প্রতি অকুণ্ঠ সমর্থনের বার্তা দেওয়া হয়। চীনের লাহোরস্থ কনসাল জেনারেল ঝাও শিরেন বলেন, যে কোনো পরিস্থিতিতে চীন পাকিস্তানের পাশে থাকবে। পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি) কেন্দ্রীয় পাঞ্জাব শাখার নেতাদের সঙ্গে প্রায় আড়াই ঘণ্টাব্যাপী আলোচনায় এই মন্তব্য করেন তিনি। বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয় পিপিপির কেন্দ্রীয় অর্থ সম্পাদক আহমাদ জাওয়াদ রানার বাসভবনে।
ঝাও স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেন, চীন-পাকিস্তান সম্পর্ক শুধু রাজনৈতিক বা অর্থনৈতিক নয়—এই সম্পর্কের ভিত্তি হচ্ছে গভীর কৌশলগত সহযোগিতা ও পারস্পরিক শ্রদ্ধা। তিনি বলেন, “চীন পাকিস্তানের সঙ্গে ছিল, আছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে।” একইসঙ্গে তিনি যুদ্ধ নয়, বরং সংলাপ ও কূটনৈতিক পথে সমস্যার সমাধানের ওপর জোর দেন। ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে চলমান উত্তেজনা নিরসনে শান্তিপূর্ণ আলোচনার আহ্বান জানান তিনি।
বৈঠকে চীন-পাকিস্তান সম্পর্কের ইতিহাস, যৌথ অর্থনৈতিক উন্নয়ন, নিরাপত্তা সহযোগিতা এবং আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা—এই সব বিষয়ে খোলামেলা আলোচনা হয়। ঝাও বলেন, পাকিস্তান শুধু একটি মিত্র দেশ নয়, বরং চীনের জন্য ‘এক পরীক্ষিত বন্ধু’। তিনি জানান, “প্রত্যেক চীনা নাগরিক পাকিস্তানকে ভালোবাসে, এবং পাকিস্তানিরাও চীনকে সম্মান করে।” এমন পারস্পরিক ভালোবাসা ও বিশ্বাসই দুই দেশের বন্ধুত্বকে দীর্ঘমেয়াদে টিকিয়ে রাখছে।
উভয় পক্ষই আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতি মোকাবিলায় যৌথভাবে কাজ করার, দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও জোরদার করার এবং বহুপাক্ষিক সহযোগিতা বাড়ানোর পক্ষে মত প্রকাশ করে। বৈঠকের শেষদিকে দুই দেশের প্রতিনিধিরা একমত হন যে, চীন-পাকিস্তান বন্ধুত্ব চিরকাল অটুট থাকবে।