পেহেলগামে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার পর উপমহাদেশে নিরাপত্তা পরিস্থিতি ফের উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। এই হামলার পরিপ্রেক্ষিতে ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক নতুন করে টানাপোড়েনের মুখে পড়েছে। এর প্রেক্ষাপটে ভারতের পূর্ব ও পশ্চিম সীমান্তজুড়ে উচ্চ সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
ভারত সরকার নিরাপত্তা সংস্থা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সর্বোচ্চ প্রস্তুত থাকতে নির্দেশ দিয়েছে। বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার সীমান্তবর্তী অঞ্চলগুলোতে। গোয়েন্দা সূত্র উদ্ধৃত করে ইন্ডিয়া টুডে জানিয়েছে, সীমান্তের ওই এলাকাগুলোতে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির শঙ্কা রয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া সহিংসতার ঘটনায় সীমান্ত পেরিয়ে আসা দুষ্কৃতকারীদের সংশ্লিষ্টতা থাকতে পারে বলে গোয়েন্দাদের দাবি। ওই সহিংসতায় অন্তত তিনজন প্রাণ হারান এবং শতাধিক মানুষ আহত হন।
কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে জমা দেওয়া এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওয়াকফ আইনবিরোধী আন্দোলনের সময় সংঘটিত সহিংসতা উসকে দিতে বাংলাদেশি কিছু উপদ্রবকারী সক্রিয় ছিল। এসব আশঙ্কা মাথায় রেখে বাংলাদেশ সীমান্তজুড়ে নজরদারি এবং টহল আরও জোরদার করেছে ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনী।
এদিকে, পাকিস্তানের সঙ্গে উত্তেজনা তীব্র আকার ধারণ করছে। নিয়ন্ত্রণরেখায় যুদ্ধবিরতির ধারাবাহিক লঙ্ঘন এবং গোলাগুলির ঘটনা বেড়েছে। ইসলামাবাদ দাবি করছে, ভারতের পক্ষ থেকে আগামী ২৪ থেকে ৩৬ ঘণ্টার মধ্যে সীমিত সামরিক অভিযান চালানো হতে পারে। পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী আতাউল্লাহ তারার এক বিবৃতিতে এই তথ্য দেন, যেটিকে তারা ‘বিশ্বাসযোগ্য গোয়েন্দা তথ্য’ হিসেবে দাবি করেছে।
এর আগেই ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সেনাবাহিনীর তিন প্রধানের সঙ্গে বৈঠক করেন এবং হামলার জবাবে সেনাবাহিনীকে পূর্ণ ‘অপারেশনাল স্বাধীনতা’ দেওয়ার নির্দেশ দেন।
বর্তমানে নয়াদিল্লি কেবলমাত্র পাকিস্তান সীমান্ত নয়, বরং পূর্বাঞ্চলের পরিস্থিতিও নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোতে সেনা এবং আধাসামরিক বাহিনীর তৎপরতা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি করা হয়েছে, যাতে কোনো ধরনের অনুপ্রবেশ বা বিশৃঙ্খলা প্রতিরোধ করা যায়।