ঢাকা শহরে যানবাহনের এক গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে পরিচিত রিকশা, তবে পরিবেশবান্ধব এবং নিরাপদ ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে সরকার এখন নতুন পদক্ষেপ গ্রহণ করতে যাচ্ছে। সম্প্রতি, বাংলাদেশ সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, বুয়েটের (বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়) একটি নতুন রিকশা ডিজাইনকে অনুমোদন দেবে। এটি পরিবেশের ওপর কম চাপ ফেলবে এবং নিরাপত্তার মানও উচ্চতর হবে।
এদিকে, ঢাকা শহরের যানজট এবং পরিবেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে সরকার আরেকটি বড় সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তা হলো ব্যাটারিচালিত রিকশা নিষিদ্ধ করা। এই নতুন সিদ্ধান্তটি নগরীর পরিবহন ব্যবস্থাকে আরও উন্নত এবং পরিবেশবান্ধব করার উদ্দেশ্যে নেওয়া হয়েছে।
বুয়েটের নতুন রিকশা ডিজাইন
বুয়েটের গবেষকরা দীর্ঘ সময় ধরে কাজ করেছেন এমন একটি রিকশা ডিজাইনের ওপর, যা পরিবেশবান্ধব হবে এবং চলাচলে নিরাপদ থাকবে। এটি একটি আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার হবে, যাতে ব্যাটারিচালিত রিকশার জায়গায় তেল বা গ্যাসের পরিবর্তে অন্য শক্তি উৎস ব্যবহার করা হবে। নতুন রিকশাটি শহরের বিভিন্ন রাস্তার সাথে আরও সঙ্গতিপূর্ণ হবে এবং একে সড়ক ব্যবস্থার জন্য আদর্শ বানানোর চেষ্টা করা হবে।
গবেষণায় পাওয়া গেছে যে, এই নতুন রিকশা ডিজাইনের ফলে শহরের ট্র্যাফিক ব্যবস্থাপনা আরও উন্নত হবে এবং পরিবেশের ওপর প্রভাব কমবে। নতুন রিকশায় আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের ফলে, এই যানবাহনগুলো খুব কম জায়গায় পার্কিং করতে সক্ষম হবে, যা নগরীতে যানজট কমানোর জন্য সহায়ক হতে পারে।
ঢাকায় ব্যাটারিচালিত রিকশার নিষেধাজ্ঞা
ঢাকার পুরান অংশে ও আশেপাশের এলাকাগুলোতে ব্যাটারিচালিত রিকশার সংখ্যা বেড়ে গিয়েছিল, যার কারণে বেশ কিছু সমস্যা তৈরি হয়েছিল। একদিকে এটি পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর, অন্যদিকে এ ধরনের রিকশা গুলির নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে কিছু উদ্বেগ ছিল।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এসব রিকশা দীর্ঘদিন ধরে ব্যবহারের পর, ব্যাটারির অপব্যবহার এবং অপর্যাপ্ত রক্ষণাবেক্ষণের কারণে পরিবেশের ক্ষতি হতে পারে। এর পাশাপাশি, অনেক সময় সড়ক দুর্ঘটনা ঘটতেও দেখা গেছে, যার ফলে ব্যাটারিচালিত রিকশার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
সরকারি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন যে, ব্যাটারিচালিত রিকশা নিষিদ্ধের উদ্দেশ্য শুধুমাত্র পরিবেশের জন্য নয়, বরং মানুষের নিরাপত্তাও নিশ্চিত করা। ঢাকার তীব্র যানজটের মধ্যে এই রিকশাগুলো অনেক সময় অবৈধভাবে রাস্তার জায়গা দখল করতো এবং সঠিকভাবে নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়ে পড়ছিল।
নতুন পদক্ষেপের ভবিষ্যৎ:
এই পদক্ষেপের মাধ্যমে ঢাকা শহরের পরিবহন ব্যবস্থার আধুনিকায়ন সম্ভব হবে এবং একে আরও কার্যকরী ও পরিবেশবান্ধব করা যাবে। নতুন রিকশাগুলোর অনুমোদনের পর, শহরের সড়ক ব্যবস্থার নিরাপত্তা আরও বৃদ্ধি পাবে এবং পরিবেশও সুরক্ষিত থাকবে।
এছাড়া, ব্যাটারিচালিত রিকশার ওপর নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করার ফলে অন্য ধরনের পরিবহন ব্যবস্থা বিকাশ পাবে, যা আগামীতে ঢাকার পরিবহন ব্যবস্থার ভারসাম্য বজায় রাখবে।
সরকারের এই উদ্যোগগুলো যদি সফল হয়, তবে তা ঢাকাকে আরও বাসযোগ্য ও পরিবেশবান্ধব করে তুলবে।