নতুন করে রোহিঙ্গা সংকটের মুখে বাংলাদেশ। মিয়ানমারে চলমান জান্তা সরকার ও বিদ্রোহী আরাকান আর্মির মধ্যে সংঘাত আরও তীব্র হওয়ায়, গত নভেম্বর থেকে এ পর্যন্ত ১ লাখ ১৩ হাজারেরও বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থী বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে। এই বাস্তুচ্যুত মানুষের আশ্রয়ের জন্য জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআর বাংলাদেশকে আনুষ্ঠানিকভাবে অনুরোধ জানিয়েছে।
সরকারি সংস্থা রিফিউজি রিলিফ অ্যান্ড রিপ্যাট্রিয়েশন কমিশনের (RRRC) কমিশনার মোহাম্মদ মিজানুর রহমান জানান, এই নতুন রোহিঙ্গারা কেউ কেউ কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শিবিরের আশপাশে তাঁবু গেড়ে আছে, আবার অনেকে স্কুল ও মসজিদে আশ্রয় নিয়েছে। ইতিমধ্যেই তারা ২৯ হাজারেরও বেশি পরিবারের অংশ, যাদের মধ্যে কেবল গত সপ্তাহেই এসেছে ১,৪০০-র বেশি পরিবার।
মিজানুর রহমান জানান, ইউএনএইচসিআর তাদের সবাইকে শিবিরে আশ্রয় দেওয়ার অনুরোধ জানালেও বাংলাদেশ এখনও কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি। কারণ, অব্যাহতভাবে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিতে থাকলে তাদের প্রত্যাবাসনের পথ আরও জটিল হয়ে যেতে পারে বলে সরকার আশঙ্কা করছে।
২০১৭ সালের আগস্টে আরসার হামলার পর থেকে বাংলাদেশে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ শুরু হয়, যা এখনো থামেনি। বর্তমানে কুতুপালংসহ অন্যান্য শিবিরে প্রায় ১৫ লাখ রোহিঙ্গা বাস করছে।
অন্যদিকে, রাখাইনে বিদ্রোহী আরাকান আর্মি বর্তমানে সিতওয়ে ছাড়া প্রায় পুরো রাজ্য নিয়ন্ত্রণ করছে। সীমান্তবর্তী এলাকায় তাদের দখলদারির ফলে আবারও একটি বৃহৎ রোহিঙ্গা ঢলের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
এই প্রেক্ষাপটে জাতিসংঘের নতুন অনুরোধ বাংলাদেশের সামনে এক নতুন মানবিক ও কূটনৈতিক চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে। সরকার কী সিদ্ধান্ত নেবে, তা এখন সময়ই বলে দেবে।