অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দুর্নীতি ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের দায়ে অভিযুক্ত পলাতক আওয়ামী লীগ নেতাদের দেশে ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে কঠোর অবস্থান নিয়েছে। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানিয়েছেন, যারা দেশের টাকা লুট করে বিদেশে বিলাসিতায় মত্ত, তাদের আইনের আওতায় আনা হবে। এটা শুধু সরকারের দায়িত্ব নয়, বরং একটি নৈতিক কর্তব্য।
সোমবার ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, পলাতকদের অনেকের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, খুন এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। “তাদের হাতে রক্ত লেগে আছে, আর মুখে উন্নয়নের বুলি—এটা সহ্য করা হবে না,” বলেন তিনি। প্রেস সচিব আরও জানান, এসব মামলার বিচার বাংলাদেশেই হবে এবং তাদের ফিরিয়ে আনতে প্রয়োজনীয় আইনি প্রক্রিয়া শুরু করা হচ্ছে।
নারী সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন নিয়ে ইসলামপন্থী দলগুলোর আপত্তির বিষয়ে তিনি বলেন, বিষয়টি ঐকমত্যের ভিত্তিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
একইদিন সন্ধ্যায় কাতার সফরে যাচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টা, সঙ্গে থাকবেন জ্বালানি উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান। সফরে এলএনজি, ভিসা সহজীকরণ ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা হবে। ২৩ এপ্রিল দোহায় একটি বাণিজ্য সম্মেলনেও অংশ নেবেন তারা, যেখানে কাতারি বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করার পরিকল্পনা রয়েছে।
এছাড়া কাতারে অনুষ্ঠিতব্য একটি গুরুত্বপূর্ণ রোহিঙ্গা সম্মেলনের কথা জানিয়ে প্রেস সচিব বলেন, এটি জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে সেপ্টেম্বরে অনুষ্ঠেয় বড় সম্মেলনের প্রস্তুতি হিসেবে ধরা হচ্ছে। সেখানে আন্তর্জাতিক অংশীদারদের সঙ্গে রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে ফলপ্রসূ আলোচনা হবে বলে আশা করছেন তারা।
বাংলাদেশি শ্রমিকদের জন্য কাতারসহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন শ্রমবাজার আরও উন্মুক্ত ও সুবিধাজনক করতে সরকারের সক্রিয় উদ্যোগের কথাও জানান প্রেস সচিব। তিনি বলেন, “ভালো বেতন ও অধিক সুযোগ-সুবিধাসহ আরও বেশি শ্রমিক বিদেশে পাঠানো সরকারের অগ্রাধিকার।”
সফর শেষে ২৪ এপ্রিল রাতে দেশে ফিরবেন প্রধান উপদেষ্টা।