বাংলাদেশ ব্যাংক নতুন উদ্যোক্তাদের জন্য ৮০০-৯০০ কোটি টাকার বিশেষ তহবিল গঠন করবে। এই তহবিলের মাধ্যমে স্টার্টআপ কোম্পানিগুলোকে মূলধন সহায়তা প্রদান করা হবে, বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর।
গভর্নর তার বক্তব্যে জানান যে, শিগগিরই একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে, যার মাধ্যমে তহবিলের অর্থ বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে বিতরণ করা হবে। তিনি আরও বলেন, স্টার্টআপ ব্যবসার জন্য এই তহবিল গঠন করা হচ্ছে, কারণ নতুন উদ্যোক্তাদের জন্য ফিনান্সের সমস্যা একটি বড় প্রতিবন্ধকতা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এছাড়া, বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট সামিট এর অংশ হিসেবে আজ স্টার্টআপ কানেক্ট সেশন অনুষ্ঠিত হয়েছে, যেখানে দেশি এবং বিদেশি উদ্যোক্তারা অংশগ্রহণ করেন। এই সেশনটির আয়োজন করেছে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা)। সেশনের মূল আলোচনায় বাংলাদেশে তরুণ উদ্যোক্তাদের জন্য সম্ভাবনা এবং স্টার্টআপ খাতে বিনিয়োগ কম থাকার বিষয়টি উঠে আসে।
সেশনে বক্তৃতা দিতে গিয়ে ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, “বাংলাদেশ একটি দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতির দেশ এবং এখানকার উদ্ভাবনী স্টার্টআপ উদ্যোগের চাহিদা দিন দিন বাড়ছে, কিন্তু এই খাতে যথেষ্ট বিনিয়োগ হয়নি।”
সম্মেলনে বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন বলেন, নতুন উদ্যোক্তাদের জন্য ট্রেড লাইসেন্স পাওয়ার সমস্যা এবং সরকারি লালফিতার দৌরাত্ম্য অনেক সময় ব্যবসা শুরু করতে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। তিনি বলেন, প্রতিবছর ট্রেড লাইসেন্স নবায়ন করতে উদ্যোক্তাদের অনেক সমস্যা হয়, যা তাদের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ।
এছাড়া, সম্মেলনে ৪০ দেশের ৫০০ বিদেশি বিনিয়োগকারী অংশগ্রহণ করেছেন। এসব বিনিয়োগকারীদের জন্য চট্টগ্রাম ও নারায়ণগঞ্জ-এ অর্থনৈতিক অঞ্চল পরিদর্শন করানো হবে, যাতে তারা সরেজমিনে ব্যবসার সুযোগ-সুবিধাগুলো পর্যালোচনা করতে পারেন।
বাংলাদেশে উদ্ভাবনী উদ্যোক্তার অভাব নেই বলে মন্তব্য করেন বিডার চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, “এখানে স্টার্টআপ তহবিলের অভাব থাকায় নতুন উদ্যোক্তারা ব্যবসা শুরু করতে পারেন না, এজন্যই বাংলাদেশ ব্যাংক ৮০০ থেকে ৯০০ কোটি টাকার তহবিল গঠন করতে যাচ্ছে।”
এই সম্মেলনে বিশ্বব্যাংক এবং আইএলও-এর প্রতিনিধিরা অংশ নেবেন এবং তাদের সাথে ভবিষ্যত বিনিয়োগের বিষয়ে আলোচনা করা হবে। সম্মেলনের প্রথম দিন দুটি ট্র্যাকে অনুষ্ঠান হয়, যার মধ্যে একটিতে ৬০ জন বিদেশি বিনিয়োগকারীকে নিয়ে চট্টগ্রাম পাঠানো হবে। তারা সেখানে কোরিয়ান ইপিজেড ও মিরসরাই স্পেশাল ইকোনমিক জোন পরিদর্শন করবেন।
পরবর্তী দিনগুলিতে নারায়ণগঞ্জ-এর আড়াইহাজারে জাপানি ইকোনমিক জোন পরিদর্শন এবং ফিউচার ইনভেস্টমেন্ট নিয়ে আলোচনা হবে।
বৃহস্পতিবার (৯ এপ্রিল) উদ্বোধনী অনুষ্ঠান সহ একাধিক প্যারালাল সেশন চলবে, যেখানে ব্যবসা শুরু ও বিনিয়োগ সম্পর্কিত নানা বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে।