মারুফ সরকার, প্রতিবেদকঃ যেসব সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীকে জনগণ দুর্নীতিবাজ বলে ধারণা করেন, গোয়েন্দা প্রতিবেদনের ভিত্তিতে তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে সরকার।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) উপপরিচালক মাহবুবুল আলম ওরফে ‘ভাগিনা মাহবুব’-এর বিরুদ্ধে ভয়াবহ দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ রয়েছে, তিনি ক্ষমতার অপব্যবহার, ভয়ভীতি প্রদর্শন এবং দুর্নীতির মাধ্যমে শত শত কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ব্যক্তিদের হয়রানি করে অর্থ আদায়ের অভিযোগ দীর্ঘদিনের।
বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, মাহবুবুল আলম শুরুতে দুদকের একজন পিয়ন ছিলেন। ধীরে ধীরে তিনি নিজের ক্ষমতা বাড়িয়ে গুরুত্বপূর্ণ মামলার তদন্তের দায়িত্ব নেন এবং সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের ভয় দেখিয়ে অর্থ আদায় করেন। তার নামে সোনালী ব্যাংকের মহাখালী শাখায় কয়েকটি লকারে প্রায় ৩০-৪০ কোটি টাকা নগদ ও বিপুল পরিমাণ স্বর্ণ থাকার তথ্য পাওয়া গেছে। এছাড়া ঢাকার বিভিন্ন অভিজাত এলাকায় তার নামে প্রায় ১৫০ কোটি টাকার সম্পত্তি রয়েছে।
জামালপুরের শরীষাবাড়ীতে মাহবুবের প্রভাব এতটাই যে, তার অনুমতি ছাড়া কেউ জমি ক্রয়-বিক্রয় করতে পারে না। স্থানীয়রা তাকে ‘অঘোষিত সম্রাট’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। অভিযোগ রয়েছে, তিনি প্রভাবশালী মহলের ছত্রছায়ায় থেকে শত শত বিঘা জমি দখল করেছেন।
তদন্তের নামে হয়রানি এবং মোটা অঙ্কের অর্থ আদায়ের অভিযোগে ঢাকা আইডিয়াল স্কুলের সাবেক অধ্যক্ষ সাহানা বেগম ও প্রশাসনিক কর্মকর্তা আতিকসহ অনেকেই ভুক্তভোগী। এছাড়া এসেনশিয়াল ড্রাগস কোম্পানির এমডি অধ্যাপক এহসানুল কবিরের বিরুদ্ধে তদন্তের নামে ১০ কোটি টাকা গ্রহণের অভিযোগ উঠেছে।
সবচেয়ে বিতর্কিত অভিযোগ হলো, ঢাকার নন্দীপাড়া এলাকায় তিন বিঘা জায়গার ওপর তার একটি ‘হেরেমখানা’ রয়েছে, যেখানে নিয়মিত অনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালিত হয় বলে স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন।
দুদকের মতো সংস্থার একজন কর্মকর্তা কীভাবে এত বিপুল সম্পদের মালিক হলেন এবং এতদিন ধরে ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়ে গেলেন, তা নিয়ে জনমনে প্রশ্ন উঠেছে।