আন্তর্জাতিক ডেস্ক
ইয়েমেনের ইরান-সমর্থিত হুথি বিদ্রোহীরা ঘোষণা করেছে যে, তারা ইসরায়েলের বেন গুরিয়ন বিমানবন্দরের দিকে একটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে। তবে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (IDF) জানিয়েছে, ক্ষেপণাস্ত্রটি ইসরায়েলে প্রবেশের আগেই প্রতিহত করা হয়েছে।
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর (IDF) বিবৃতি:
“ইয়েমেন থেকে উৎক্ষেপিত একটি ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলে প্রবেশের আগেই আমাদের বিমান বাহিনী (IAF) প্রতিহত করেছে। সতর্কতামূলক সাইরেন বাজানো হয়েছিল নিয়ম অনুযায়ী।”
হুথি সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র এক টেলিভিশন বিবৃতিতে বলেন, “আমরা ফিলিস্তিনি জনগণের প্রতি সংহতি জানিয়ে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে হামলা চালিয়ে যাব।”
হুথিরা জানিয়েছে, সম্প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তাদের ওপর যে মারাত্মক বিমান হামলা চালিয়েছে, তার প্রতিশোধ নিতেই তারা ইসরায়েল এবং মার্কিন সামরিক ঘাঁটিগুলোর ওপর হামলা চালাবে।
অন্যদিকে, গাজার হামাস-নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত দুই দিনে ইসরায়েলি বিমান হামলায় অন্তত ৪৩০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
হামাস-নিয়ন্ত্রিত সিভিল ডিফেন্স এজেন্সি জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার ভোরে খান ইউনিসের পূর্বে ছয়টি বাড়িতে বিমান হামলা চালানো হয়, এতে অন্তত ১০ জন নিহত এবং বহু মানুষ আহত হয়েছে।
মার্কিন ও ব্রিটিশ সামরিক অভিযানের জবাবে হুথিদের হামলা
- মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, “যদি ইয়েমেনের হুথিরা আন্তর্জাতিক নৌপথে হামলা চালিয়ে যায়, তবে ইরানকে চরম পরিণতি ভোগ করতে হবে।”
- পেন্টাগন জানিয়েছে, শনিবার থেকে শুরু করে মার্কিন বাহিনী ইয়েমেনের ৩০টি স্থানে হামলা চালিয়েছে, যা মধ্যপ্রাচ্যে ট্রাম্পের ক্ষমতায় ফেরার পর সবচেয়ে বড় সামরিক অভিযান।
- গত রবিবার, হুথি বিদ্রোহীরা মার্কিন USS Harry S Truman রণতরীতে হামলার চেষ্টা চালায়।
- ইসরায়েলি বাহিনী (IDF) নেটজারিম করিডোরে প্রবেশ করেছে, যা গাজার উত্তর ও দক্ষিণ অংশকে বিভক্ত করেছে।
- জাতিসংঘের (UN) এক কর্মকর্তা এবং আরও একজন ব্যক্তি দেইর আল-বালাহতে এক বিস্ফোরণে নিহত হয়েছেন।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলায় প্রায় ১,২০০ ইসরায়েলি নিহত হয় এবং ২৫১ জনকে জিম্মি করা হয়। পরবর্তীতে প্রথম ধাপের যুদ্ধবিরতিতে ২৫ জন বন্দিকে জীবিত মুক্তি দেওয়া হয়েছিল।
ইসরায়েল তার পাল্টা অভিযানে গাজায় ব্যাপক সামরিক হামলা চালায়, যা এখন পর্যন্ত ৪৮,৫০০-এর বেশি ফিলিস্তিনির প্রাণ কেড়েছে, জানিয়েছে হামাস-নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
গাজার পরিস্থিতি নিয়ে আন্তর্জাতিক মহল উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। জাতিসংঘ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা ইসরায়েলের অবরোধ ও হামলা বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে। তবে ইসরায়েল জানিয়েছে, “হামাসের বিরুদ্ধে লড়াই চলবে যতক্ষণ না সব বন্দি মুক্তি পায় এবং হামাস সম্পূর্ণভাবে পরাজিত হয়।”