হুমায়ন কবির মিরাজ: যশোরের শার্শা উপজেলায় হাজেরা খাতুন (১৭) নামে এক গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যু ঘটেছে। মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) রাতে উপজেলার জামতলা টেংরা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। পুলিশের প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী, গৃহবধূ গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন বলে ধারণা করা হলেও তার পরিবারের দাবি, এটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড।
নিহত হাজেরা খাতুন টেংরা বাজার পাড়া গ্রামের আকাশ হোসেনের স্ত্রী এবং ঝিকরগাছা উপজেলার দেওলী গ্রামের মেহেদী হাসানের মেয়ে।
তথ্য অনুসন্ধানে জানা গেছে, এক বছর আগে প্রেমের সম্পর্কের মাধ্যমে আকাশ হোসেনের সঙ্গে বিয়ে হয় হাজেরা খাতুনের। শুরুতে দাম্পত্য জীবন ভালো চললেও পরবর্তী সময়ে দাম্পত্য কলহ বাড়তে থাকে। পরিবারের দাবি, স্বামী আকাশ ও তার দাদী শাশুড়ি রহিমা খাতুন প্রায়ই হাজেরার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করতেন এবং তাকে মানসিকভাবে নির্যাতন করতেন।
ঘটনার দিন বিকেলে হাজেরা ও আকাশের মধ্যে কথাকাটাকাটি হয়। এরপর আকাশ বাজারে চলে গেলে কিছু সময় পর ঘরের ভেতরে জানালার সাথে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে হাজেরা আত্মহত্যা করেন বলে দাবি করা হচ্ছে। আকাশ বাড়ি ফিরে এসে হাজেরাকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পেয়ে দ্রুত স্থানীয় এক বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
হাজেরার বাবা মেহেদী হাসান অভিযোগ করে বলেন, “আমার মেয়েকে তার স্বামী আকাশ ও দাদী শাশুড়ি রহিমা খুন করে আত্মহত্যার নাটক সাজিয়েছে। ওরা প্রায়ই আমার মেয়ের ওপর অত্যাচার করত। ঘটনার দিনও ঝগড়ার পর পরিকল্পিতভাবে তাকে হত্যা করা হয়েছে। আমরা এর সঠিক বিচার চাই।”
শার্শা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) একেএম রবিউল ইসলাম জানান, “আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। এটি হত্যা নাকি আত্মহত্যা, তা নিশ্চিত হতে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য যশোর মর্গে পাঠানো হয়েছে। তদন্ত শেষে পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এ ঘটনায় এখনো কোনো মামলা দায়ের হয়নি, তবে পুলিশ বিষয়টি গভীরভাবে তদন্ত করছে। নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে হত্যার অভিযোগ তোলা হলেও, ময়নাতদন্তের রিপোর্টের ভিত্তিতে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।